মনিরুল ইসলাম: [২] জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম আর খানের প্রতিষ্ঠিত সেন্ট্রাল হসপিটাল এবং সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ট্রাস্ট্রি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে তারই একমাত্র মেয়ে ডা. ম্যান্ডী করীমকে। সেন্ট্রাল হসপিটালে ডা. এম আর খানের ৫৩ হাজার শেয়ার এবং তার মেয়ের নয় হাজার শেয়ার থাকলেও মেয়েকে হসপিটালে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয়।
[৩] শুধু হসপিটাল বা ইউনিভার্সিটি না, সাতক্ষীরায় উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জমিরও কোনো ভোগ-দখলের সুযোগ দেয়া হয় না ম্যান্ডীকে। সম্পত্তির দাবি করলেই প্রাণনাশের হুমকি দেন চাতাতো ভাই ইকরাম কবির খান। তাকে বাধ্য করা হয় দেশত্যাগে। এসব সম্পত্তি ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন ডা. ম্যান্ডী করীম।
[৪] বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন ডা. এম আর খানের একমাত্র মেয়ে।
[৫] সংবাদ সম্মেলনে ডা. ম্যান্ডী করীম বলেন, ‘আমি কানাডা প্রবাসী। আমার বাবা যখন তারই গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল হসপিটালের আইসিইউতে ছিলেন তখন থেকেই আমি বাবার পাশে ছিলাম। তখন থেকেই আমার বাবার পাশে থাকা গাজী আব্দুস সালাম সব সম্পত্তি ও ট্রাস্টির মালিকানা কুক্ষিগত করতে ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠেন। আমরা এটা বুঝতে পারিনি। সে সময় স্বাক্ষর জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে আমার বাবার কাছ থেকে চার কোটি টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। বিভিন্ন সময়ে চেক বই থেকে অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। গাজী সালাম ষড়যন্ত্র করে নিজের পরিবারের মধ্যে ট্রাস্টির সদস্য করেন, নিজে অধ্যাপক না হলেও অধ্যাপক নাম নিয়ে প্রচার করেন।’
[৬] ডা. ম্যান্ডী করীম অভিযোগ করে বলেন, ‘সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে আমার বাবাকে অনুমোদন দিয়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য, আমার বাবা যখন হসপিটালের আইসিইউতে তখন গাজী সালাম ইউনিভার্সিটির সব ধরনের রেজুলেশন, ডকুমেন্টস এবং ট্রাস্টি বোর্ডের তালিকা থেকে আমার বাবার নাম বাদ দেন। আমার বাবা এবং ট্রাস্টি বোর্ডের অন্যান্য সদস্যদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তিনি এ কাজ করেন। সালাম নিজেকে ট্রাস্ট্রি বোর্ডের চেয়ারম্যান দাবি করে মন্ত্রণালয় ও ইউজিসিতে বোর্ড গঠন করে জমা দেন। আমার বাবার এফডিআরের টাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির নামে আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকে সব অর্থ প্রতারণা করে আত্মসাৎ করেন। তার টাকার উৎস খুঁজলে সব বেরিয়ে আসবে।’
[৭] তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার নামে আমার বাবা সেন্ট্রাল হসপিটালে নয় হাজার শেয়ার রেখে যান, সেখানে আমার বাবার নামে আরও ৫৩ হাজার শেয়ার ছিল। এগুলো মিলে হসপিটালে আমার শেয়ারই বেশি, কিন্তু চক্রান্তকারীরা আমাকে শেয়ার বুঝে দেয়নি, আমাকে হসপিটালেও প্রবেশ করতে দেয়া হয় না।’
[৮] ম্যান্ডী করীম আরও বলেন, ‘আমার বাবা সারা জীবন তার শিশুসুলভ মন নিয়ে এ দেশে অভাগা মানুষের পাশে ছিলেন। সাহায্য করেছেন অসংখ্য অসহায় মানুষকে। আমি তার সেই স্বপ্ন ধরে রাখতে চাই। স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী যাতে কোনোভাবেই আমার বাবার স্বপ্নগুলো ও কঠোর প্ররিশ্রমকে বিফলে যেতে না দেয়। এ জন্য দুষ্টু চক্র থেকে আমাকে এবং আমার বাবার হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চাই।’
[৯] সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডা. ম্যান্ডী করীমের স্বামী রেজা করীম, নাট্য অভিনেতা মামুনুর রশিদ এবং তাদের আইনজীবী ব্যারিস্টার তামাম রহমান।
আপনার মতামত লিখুন :