শিরোনাম

প্রকাশিত : ২০ জানুয়ারী, ২০২১, ১০:৫০ দুপুর
আপডেট : ২০ জানুয়ারী, ২০২১, ১০:৫০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পুঁজিবাজার নিয়ে সেই পুরনো ভয়

ডেস্ক রিপোর্ট : দীর্ঘদিনের মন্দাভাব কাটিয়ে চাঙ্গাভাব ফিরলেও পুঁজিবাজার নিয়ে আবার ভয় ধরতে শুরু করেছে বিশেষজ্ঞসহ অনেক বিনিয়োগকারীর মনে। আগের মতোই কারসাজিকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নামে-বেনামে নানা পেজ খুলে ‘গুজব’ ছড়িয়ে মন্দ হিসেবে পরিচিত ‘জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ারের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে চলেছে তারা। এভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে মুনাফা। মৌল ভিত্তিহীন এসব শেয়ারে বিনিয়োগ করে ঝুঁকিতে পড়ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। নিয়ন্ত্রক সংস্থার নানা কঠোরতার মধ্যেও কারসাজিকারী চক্রটির তৎপরতা বাড়ছে।

সরকার, বাংলাদেশ ব্যাংক ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নানা পদক্ষেপে পুঁজিবাজারবিমুখ ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কয়েক মাস ধরে শেয়ারবাজারে ফিরতে শুরু করে। ধীরে ধীরে সূচক ও লেনদেন বাড়ছে। ২০১০ সালের ধসে পুঁজি খোয়ানো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা আবার আশায় বুক বেঁধেছেন। কিন্তু সেই আশায় বাদ সাধছে কারসাজিচক্র।

এ রকম পরিস্থিতিতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা যাতে ফের বিপদে না পড়েন সে জন্য তাঁদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তাঁরা বলছেন, অতিরিক্ত মুনাফার আশায় তাঁদের দুর্বল মৌল ভিত্তির জেড গ্রুপের শেয়ারে বিনিয়োগ করা উচিত হবে না। এতে মুনাফার বদলে উল্টো লোকসানের ফাঁদে পড়ার প্রবল ঝুঁকি থাকে। যারা মন্দ শেয়ার নিয়ে খেলছে, তাদের ব্যাপারে বিএসইসিকে আরো কঠোর হওয়ার দাবি জানিয়েছেন পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক সামান্য বেড়েছে। ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিন সোমবারের চেয়ে ১৯.০৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৮২০.৮১ পয়েন্টে। তবে আগের দুই কার্যদিবসে ব্যাপক দরপতনে লেনদেন শেষ হয়। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের কারণে ওই দুই দিনে ১০৭ পয়েন্ট কমে যায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক। লেনদেনও আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। বাজারটিতে গতকাল মোট লেনদেন হয়েছে এক হাজার ২৯০ কোটি ৯০ লাখ টাকার। সোমবার লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৫১৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, যা তার আগের দিন ছিল দুই হাজার ৩৮৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এ হিসাবে গত তিন দিনে লেনদেন কমেছে এক হাজার ৯৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই দিন সার্বিক সূচক কমলেও গতকাল ৩৬ পয়েন্ট বেড়েছে। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় এই তিন দিনে সূচক কমেছে ৩১৮ পয়েন্ট। গত দুই দিনের তুলনায় লেনদেনও কমেছে। রবিবার সিএসইতে ১৫১ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছিল। আর গতকাল তা নেমে আসে ৮৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকায়।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এখন কিছুটা মূল্য সংশোধন হচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতায় ‘বিক্রির চাপ’ বেশি থাকায় পুঁজিবাজারে কিছুটা সংশোধন হচ্ছে বলে মনে করছেন তাঁরা। তবে শিগগিরই বাজার ঘুরে দাঁড়াবে। কয়েক দিনের টানা উত্থানে কিছু কম্পানির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। সেই সঙ্গে দুর্বল (জেড) কম্পানির শেয়ারের দামও বেড়েছে। এখন সেই কম্পানিগুলোর শেয়ারের দরপতন হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে শেয়ারবাজারে। তাই অতিরিক্ত লোভে পড়ে কোনো অবস্থায়ই জেড ক্যাটাগরির শেয়ারে বিনিয়োগ করা উচিত হবে না।

‘জেড’ ক্যাটাগরির বেশির ভাগ কম্পানির শেয়ারের সংখ্যা খুব কম। তাই এসব কম্পানির শেয়ার কারসাজি করা সহজ। কারসাজিকারী চক্র তাই এ শেয়ারগুলোকেই টার্গেট করে। তারা বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে এই কম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম বাড়ায়।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গেল দুই মাসে গুজব ছড়িয়ে ভালো কম্পানিগুলোর তুলনায় মন্দ কম্পানির শেয়ারের দাম প্রায় ছয় গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। গত নভেম্বর ও ডিসেম্বরের মধ্যে ‘জেড’ ক্যাটাগরির কম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম বেড়েছে ১৯.৫৬ শতাংশ। ডিএসই তথ্যের ভিত্তিতে আইডিএলসির এক হিসাবে এই তথ্য পাওয়া গেছে। গতকাল ডিএসইতে ‘জেড’ ক্যাটাগরিভুক্ত কম্পানিগুলোর মোট লেনদেন ছিল ছয় কোটি ৩১ লাখ টাকা। অন্যদিকে বাজারমূল্য অভিহিত মূল্যের নিচে নেমে যাওয়া কম্পানিগুলোর (বাজারমূল্য ১০ টাকার নিচে) মোট লেনদেন ছিল ৭৭.২২ কোটি টাকা, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ৫.৯৮ শতাংশ।

ডিএসইর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, জেড ক্যাটাগরির কম্পানিগুলোর মধ্যে গত ৩০ লেনদেন দিবসে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে কেয়া কসমেটিকসের শেয়ার (৮১.৩৮ কোটি টাকা)। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে গোল্ডেন সন (৩১.৫০ কোটি টাকা, দাম বেড়েছে ১৪.০২ শতাংশ), তৃতীয় অবস্থানে আছে ডেল্টা স্পিনারস (২৯.০৩ কোটি টাকা, দাম বেড়েছে ৮.৮২ শতাংশ), চতুর্থ অবস্থানে আছে ইনটেক অনলাইন (২০.০৩ কোটি টাকা, দাম কমেছে ১৫.৭৬ শতাংশ) এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছে জেনারেশন নেক্সড (১৫.৫৬ কোটি টাকা, দাম বেড়েছে ১৪.৭১ শতাংশ)। জেড ক্যাটাগরির দাম বাড়ার শীর্ষে আছে অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার। এর দাম বেড়েছে ৩২.৫০ শতাংশ এবং লেনদেন হয়েছে ৯.৫৭ কোটি টাকা। এর পরে রয়েছে তাল্লু স্পিনিং (১৯.৫১ শতাংশ), জেনারেশন নেক্সড (১৪.৭১ শতাংশ), গোল্ডেন সন (১৪.০২ শতাংশ), আর এন স্পিনিং (১০.৮১ শতাংশ)।

দীর্ঘদিন জেড ক্যাটাগরিতে থাকা ইউনাইটেড এয়ারের শেয়ার নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ইনভেস্টরস ফোরাম, চিটাগংয়ের আহ্বায়ক আসলাম মোরশেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে বিএসইসি ইউনাইটেড এয়ারকে ওটিসি (ওবার দ্য কাউন্টার) মার্কেটে নিয়ে গেছে। কিন্তু যেখানে বিনিয়োগকারীদের হাতে মোট শেয়ারের ৯৮ শতাংশ আর পরিচালকদের হাতে মাত্র ২ শতাংশ, সেখানে কিভাবে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ দেখা হলো? ওটিসি মার্কেটে পাঠানো মাত্র কয়েক দিন আগেও ইউনাইটেড এয়ারের পরিচালকদের শেয়ার বিক্রির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পরিচালকদের স্বার্থকেই প্রাধান্য পেয়েছে।’

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদ ওসমান ইমাম গতকাল বলেন, ‘শেয়ারবাজারে দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ হচ্ছে কম। ডে ট্রেডাররা বেশি সক্রিয়। গুজবনির্ভর বাজারের গতি-প্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছে গ্যাম্বলিং হচ্ছে। বিএসইসি তদন্তের সার্কুলার দিয়ে তা স্থগিত করেছে। এই ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে সার্ভেইল্যান্স জোরদার করতে হবে, আরো কঠোর হতে হবে।’

জানতে চাইলে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান গতকাল বলেন, ‘পুঁজিবাজার সব সময় ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে ঝুঁকি ম্যানেজ করে বিনিয়োগ করতে হবে। যেখানে দ্রুত গেইন করার সুযোগ থাকে, সেখানে দ্রুত লস করারও ঝুঁকি থাকে। এ জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীদের গুজবে প্রভাবিত না হয়ে মৌল ভিত্তিসম্পন্ন শেয়ারে দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ করতে হবে। দ্রুত মুনাফা পাওয়ার আশায় মন্দ শেয়ারে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকি বেড়ে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘শেয়ারবাজার ভালো হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। ব্যাংকে যথেষ্ট তারল্য আছে, অন্যদিকে আমানতের সুদহার কমে গেছে। এ ছাড়া অপ্রদর্শিত আয়ও বিনিয়োগ হচ্ছে শেয়ারবাজারে। টানা অনেক দিন বাড়ার কারণে এখন হয়তো কিছু সংশোধন হচ্ছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ছে বলেই লেনদেন বাড়ছে। বিএসইসি যেসব ইতিবাচক পদক্ষেপ নিচ্ছে, তাতে শেয়ারবাজার আরো গতিশীল হবে বলে আশা করি।’

জানতে চাইলে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির আকারের তুলনায় পুঁজিবাজার পিছিয়ে ছিল। এখন পুঁজিবাজার ভালো হচ্ছে, এটা টেকসই করাটাই চ্যালেঞ্জ। যত বেশি ভালো কম্পানি তালিকাভুক্ত হবে, পুঁজিবাজারের গভীরতা তত বাড়বে। বাজারে শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে বিএসইসি যথেষ্ট তৎপর আছে। বিনিয়োগকারীদের গুজবে কান না দিয়ে সতর্ক থাকতে হবে এবং চেষ্টা করতে হবে ঋণ নিয়ে শেয়ার না কেনার।’

কোন সিকিউরিটিজের ভবিষ্যতে দর বাড়বে বা কমবে ইত্যাদি বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তথ্য ছড়ানো ব্যক্তি বা দলকে এজাতীয় কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছিল বিএসইসি। পুঁজিবাজার নিয়ে গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও বিভিন্ন ফেসবুক পেজে শেয়ারের দাম নিয়ে বেনামে গুজব ছড়াচ্ছে একাধিক চক্র।

এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে শনিবার কারসাজিকারী চক্রকে হুঁশিয়ার করে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম বলেছেন, ‘পুঁজিবাজারে কারসাজি করে এখন আর কেউ পার পাবে না। পুঁজিবাজারে কোনো লোক যদি দুষ্টামি করতে আসে, তার কাছে কত টাকা থাকতে পারে? শত কোটি, হাজার কোটি? আমরা তার ১০ গুণ ক্ষমতা দিয়ে দিচ্ছি আইসিবিকে, যাতে কেউ খেলতে এসে কোনো সুবিধা না করতে পারে। কেউ খেলতে চাইলে আমরা তাকে ধরে ফেলব তখনই।’

নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান আরো বলেন, ‘১৯৯৬ সালে এবং ২০১০ সালে যে ধস হয়েছে, সে সময় আজকের মতো পুঁজিবাজার নিয়ে সবার জ্ঞান ছিল না। ১৯৯৬ সালে মানুষ হাতে কাগজ নিয়ে মতিঝিলে শেয়ার লেনদেন করত। কিন্তু এখন এ রকম নেই। এখন এগুলো সব চলে এসেছে সিসিবিএল, সিডিবিএল এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের আইটি প্ল্যাটফর্মের মধ্যে। আমাদের সার্ভেইল্যান্সের সফটওয়্যার এখন অনেক শক্তিশালী। আমরা সুইডেনের এখন সবচেয়ে লেটেস্ট যে সার্ভেইল্যান্সের সফটওয়্যার, সেটা ব্যবহার করছি। যে কেউ কোনো কিছু করলেই আমরা সহজেই সেটা ধরে ফেলতে পারি।’

যদিও পুঁজিবাজারে যেসব শেয়ারের দাম গত এক মাসের মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি ওঠানামা করেছে, তার পেছনের কারণ খতিয়ে দেখতে দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে দেওয়া সাম্প্রতিক এক নির্দেশ স্থগিত করেছে বিএসইসি। এর কারণ জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘শেয়ারদরের অস্বাভাবিক ওঠানামার কারণ খুঁজে বের করার নির্দেশনা স্থগিত করা হলেও বাতিল হয়নি। ভবিষ্যতে কমিশন মনে করলে যেকোনো সময় তা কার্যকর হবে।’

মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘আমাদের সার্ভইল্যান্স ও মার্কেট ইন্টেলিজেন্স বিভাগ সব সময় পুঁজিবাজারকে নজরদারিতে রাখে। এই কার্যক্রম আরো জোরদার করা হয়েছে। বাজারে কোনো ধরনের ইনসাইডার ট্রেডিং, মার্কেট ম্যানুপুলেশন হচ্ছে কি না, তা নজরদারি করছি। কোনো অভিযোগ পেলেই অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমাদের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের নিজস্ব সার্ভেইল্যান্সকেও আমরা মনিটর করে থাকি। তারাও বাজারে নজর রাখছে। আশা করি, আমাদের নজরদারি ও বাজারের বর্তমান প্রবৃদ্ধি টেকসই হবে।’ -কালের কণ্ঠ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়