ইসমাঈল ইমু: [২] ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের হাতে গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মিরাজ (৩৫) ও বৃষ্টি (২১)। সোমবার বিকেলে দক্ষিণখান থানার চেয়ারম্যান পাড়ার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অপহৃত ভিকটিমকে উদ্ধার ও তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
[৩] এসময় তাদের কাছ থেকে অপহরণে ব্যবহৃত একটি ছুরি, ৫৭টি ইলেক্ট্রিক্যাল ক্যাবল টাইস, একটি স্ক্রু ড্রাইভার ও একটি প্লাস উদ্ধার করা হয়। সেই সাথে ভিকটিমের স্ত্রীর কাছ থেকে বিকাশে নেয়া নগদ ৪৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
[৪] মঙ্গলবার বিকাল ৩ টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, মিহির রায়ের উত্তরা ৯নং সেক্টরে ফুড ষ্টোরী নামে একটি ফাস্ট ফুডের দোকান আছে। ১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় অজ্ঞাতনামা একজন লোক দোকানে খাওয়া শেষে ভিকটিমের সাথে আলোচনা করে যে, তার দোকানের খাবার ভালো লেগেছে। তার এক বড় ভাইয়ের প্রোগ্রামে ৮০ প্যাকেট খাবার অর্ডার দেবে বলে ভিকটিম মিহিরকে সাথে করে নিয়ে যায়।
[৫] পরবর্তী সময়ে ভিকটিমের স্ত্রী তার ব্যবহৃত নাম্বারে ফোন দিলে নাম্বার বন্ধ পায়। ১৪ জানুয়ারি ভিকটিমের নাম্বার হতে তার স্ত্রীর মোবাইলে ফোন আসে এবং কোন কথা না বলে ফোন কেটে দেয়। কিছুক্ষণ পর অন্য একটি নাম্বার থেকে ভিকটিমের স্ত্রীর নাম্বারে ফোন আসে এবং ভিকটিম মিহির বলে যে, এরা আমার হাত, পা ও চোখ বেঁধে রেখেছে। ২০ লাখ টাকা দিলে তারা আমাকে ছেড়ে দেবে। ভিকটিমের স্ত্রী বিভিন্ন সময়ে অপহরণকারীদের দেয়া নাম্বারে ২ লাখ ৯১ হাজার টাকা বিকাশ করে। অবশিষ্ট টাকা না দিলে তার স্বামী মিহিরকে ক্ষতির হুমকি প্রদান করে অপহরণকারীরা। এ ঘটনায় ১৬ জানুয়ারি ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করেন।
[৬] ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, মামলার পর অপহৃত ব্যবসায়ী মিহির রায়কে উদ্ধারের জন্য রাজধানীতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে উত্তরা জোনাল টিম। অভিযানকালে গোয়েন্দা টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, অপহরণ চক্রটি ভিকটিমকে দক্ষিণখানের চেয়ারম্যান পাড়ার হেজুর উদ্দিন রোডের একটি বাড়িতে আটকে রেখেছে। এমন সংবাদ পেয়ে ওই বাড়িতে অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ। বাড়িটির ৩য় তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে হাত-পা বাধাঁ অবস্থায় ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়। এসময় অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
[৭] তিনি আরো বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা একটি অপরহরণকারী চক্র। তারা বিভিন্ন সময় অপহরণের সাথে জড়িত থাকার কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। এছাড়াও, অপহরণকারীরা অপহরণের পর ভিকটিমের অশ্লীল ছবি তুলে রাখে, যাতে ভিকটিম মুখ খুলতে না পারে। যদি এ বিষয়ে পুলিশ অথবা অন্য কারো কাছে অভিযোগ করে তাহলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিকটিমের অশ্লীল ছবি ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখায়।
আপনার মতামত লিখুন :