মাসুদ হাসান : ১১ মার্চ কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মাতা সারদা দেবী। দ্বিজেন্দ্রনাথের বাল্যশিক্ষা স্বগৃহেই সম্পন্ন হয়। পরে তিনি দুবছর সেন্ট পলস স্কুলে এবং কিছুদিন হিন্দু কলেজে অধ্যয়ন করেন। পরে তিনি আজীবন স্বপ্রচেষ্টায় জ্ঞানসাধনা চালিয়ে যান। বাল্যকাল থেকেই ছিলেন আত্মভোলা প্রকৃতির এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রতি অনুরক্ত। তিনি ১৮৭৫ সালে স্বপ্নপ্রয়াণ নামে একখানি রূপক কাব্য রচনা করে তিনি বাংলা সাহিত্যে নিজস্ব স্থান করে নেন। ভাষা, ছন্দ ও রচনাভঙ্গির দিক দিয়ে ঈশ্বর গুপ্তের বোধেন্দুবিকাশ (১৮৬৩) ও বিহারীলালের সারদামঙ্গল (১৮৭০) দুইয়েরই আদর্শ স্বপ্নপ্রয়াণে সম্মিলিত হয়েছে। দ্বিজেন্দ্রনাথ বাংলা ভাষায় প্রথম গানের স্বরলিপি ও বাংলা শর্টহ্যান্ডবিষয়ক গ্রন্থ রেখাক্ষর বর্ণমালা (১৯১২) রচনা করেন।
বাংলা ব্যাকরণ নিয়েও তিনি চর্চা করেন। সমাজতত্ত্ববিষয়ক রচনায় দ্বিজেন্দ্রনাথ উনিশ শতকে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য আদর্শের সংঘাতের তাৎপর্য গভীর পর্যবেক্ষণ সহকারে আলোচনা করেন। এ বিষয়ে বঙ্কিমচন্দ্রের সঙ্গে তার সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।দ্বিজেন্দ্রনাথ চিত্রাঙ্কনেও বিশেষ দক্ষ ছিলেন। গণিত, দর্শন, সাহিত্য প্রভৃতি বিষয়ে তার বেশ কয়েকটি গ্রন্থ আছে। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ভ্রাতৃভাব (১৮৬৩), তত্ত্ববিদ্যা (৪ খন্ড, ১৮৬৬-৬৯), সোনার কাঠি রূপার কাঠি (১৮৮৫), সোনায় সোহাগা (১৮৮৫), আর্য্যামি এবং সাহেবিআনা (১৮৯০), সামাজিক রোগের কবিরাজী চিকিৎসা রচনা করেন।
আপনার মতামত লিখুন :