মনিরুল ইসলাম :[২] রাজধানীর কলাবাগান এলাকায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ন্যায় বিচারের দাবি জানিয়েছেন তার মা।
[৩] বুধবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।
[৪] তিনি বলেন, গত ৭ তারিখে আমার মেয়েকে অপহরণ করে দিহান ও তার সঙ্গীরা বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে আমার মেয়েকে অমানবিক নির্যাতন, ধর্ষণ এবং হত্যা করে আমাকে ফোন করা হয়। আমি হাসপাতালে গিয়ে দেখি দিহানসহ তার তিনসঙ্গী বসে আছে। তারা আমার পা জড়িয়ে ধরে বলে আন্টি আমাকে বাঁচান। যখন আমার মেয়েকে দেখতে চাই, তখন আমাকে দেখতে যেতে দেয়া হয়নি। কর্তব্যরত চিকিৎসক আমাকে জানায় আনুশকা মারা গেছে।
[৫] তিনি আরও বলেন, দিহানের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করি আমার মেয়েকে তোমরা কোথায় পেলে, কেন মারা গেল? তখন সে আমাকে বলে আমরা চারজন ওকে আমাদের বাসায় নিয়ে যাই এবং সেখানে সে সেন্সলেস হয়ে যায়। তখন আবার জিজ্ঞেস করি, বাসায় আর কোনও মেয়ে ফ্রেন্ড ছিল না বা তোমার বাবা মা ছিল না? তখন বলে, না আমরা চারজনই তাকে নিয়ে গিয়েছিলাম। এরপর আমার বুঝতে বাকি থাকে না সেখানে কী হয়েছে।
[৬] নিহত স্কুলছাত্রীর মা আরও বলেন, আমরা যেভাবে মামলাটি করতে চেয়েছি পুলিশ সেভাবে মামলাটি নেয়নি। একটি মহল দিহান ও তার সঙ্গীদের আড়াল করার চেষ্টা করছে এবং আমার মেয়ের চরিত্র হননের চেষ্টা করছে। বলা হচ্ছে, আমার মেয়ের সঙ্গে দিহানের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এটি একদমই ঠিক না।
[৭] পরে স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, আমার মেয়েকে প্রতিটা মুহূর্তে আমি আমার মায়ের মতো করে রেখেছিলাম। সে বিপদে পড়েছে আমাকে জানাতে ফোন করেছে। আমার কষ্টের বিষয় ওই মুহূর্তে আমি কলটা ধরতে পারিনি।
[৮] সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে পরিবারের পক্ষ থেকে আরও কয়েকটি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হচ্ছে- ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ন্যায় বিচার করা, মামলাটি দ্রুত বিচার আইনে করা, দিহান ও তার সঙ্গীদের বিচারের আওতায় আনা, একটি স্বচ্ছ ডিএনএ পরীক্ষা কার্যকর করা এবং আমার পরিবার যেন কোন অসুবিধার শিকার না হয় তার ব্যবস্থা করা।
[৯] সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম মহিলা পরিষদের পক্ষ তিন দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হচ্ছে— যৌন নির্যাতনের ক্ষেত্রে সাইবারের মাধ্যমে ব্যবহৃত ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্র শিশু-কিশোর ও তরুণের মানসিক বিকাশ উপযোগী সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, খেলাধুলার সুযোগ বৃদ্ধি করা এবং ধর্ষণ, যৌন অপরাধের ঘটনা প্রতিরোধে পাঠ্যসূচিতে যৌন ও প্রজনন শিক্ষার বিষয়ে অন্তর্ভুক্তকরণসহ এ ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
[১০] সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদা রেহানা বেগম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিমা মুসলেম, ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি মাহাতাব নেছা, ঢাকা মহানগরের মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রেহানা ইউনুসসহ স্কুলছাত্রীর চার সহপাঠী উপস্থিত ছিলেন।