জিএম মিজান: [২] বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের বামুনিয়া খিয়ারপাড়ার প্রত্যন্ত পল্লী এলাকায় স্থানীয় জনগণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এসিডের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের মাধ্যমে পরিত্যক্ত ব্যাটারি গলিয়ে পরিবেশ দূষণ করে সীসা তৈরি করার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ১২ জানুয়ারী ২০২১ সোমবার দিবাগত রাত ১২টায় এ অবৈধ কারখানায় ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়।
[৩] ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আশিক খান। এলাকার পরিবেশ বিপর্যয় ও জনজীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ উপযুক্ত অপরাধের কারণে কারখানার পরিচালককে অবস্থানগত ও পরিবেশগত কোন ছাড়পত্র না থাকায় বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ অনুযায়ী জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি অবৈধ সীসা কারখানাটি বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে সতর্ক করা হয়।
[৪] কারখানাটি প্রাচীর বেষ্টিত একটি উঁচু টিনের ঘর। পাশে একটি উঁচু চিমনি। ঘরের মধ্যে গর্ত করে মাটির চুলার মতো চুল্লি বানানো হয়েছে। পরিত্যক্ত ব্যাটারির কোষগুলো সিমেন্টের মতো জমাট বেঁধে যায়। চুল্লির মধ্যে কাঠ ও কয়লা দিয়ে পুরতে পুরতে অ্যাসিড মিশ্রিত জমাট বাঁধা বর্জ্য সাজানো হয়। এরপর আগুন ধরিয়ে দিয়ে একটি পাম্পের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক পাখা দিয়ে প্রচণ্ড বেগে বাতাস দেওয়া হয়। কাঠ ও কয়লা পুড়ে একটি আগুনের কুণ্ডলী সৃষ্টি হয়। সীসা পুড়ে তরল হয়। এরপর একটি লম্বা চামচ দিয়ে বর্জ্য সরিয়ে সীসা লোহার তৈরি কড়াইতে রাখা হয়।
[৫] ঘন ধূসর ধোঁয়া চিমনি দিয়ে বের হয়ে যায়। দিনের বেলা সীসা ও বর্জ্য চেনা যায় না। সীসা রাতে চকচক করে, এ জন্য রাতে সীসা গলানো হয়। সীসা উচ্চ তাপমাত্রায় গলানোর সময় সহযোগী হিসেবে কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড, কার্বন ডাই-অক্সাইডসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর যৌগ উৎপাদিত হয় এবং তা দ্রুত বাতাসের সঙ্গে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে পরিবেশ দূষিত হয়। আশঙ্কা দেখা দেয় অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, হৃদ্রোগ ও ক্যানসারের মতো রোগের।
[৬] শাজাহাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আশিক খান এ প্রতিবেদক-কে বলেন, অবৈধভাবে সীসা গলানোয় পরিবেশের ক্ষতি হওয়ায়। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ অনুযায়ী জরিমানা করা হয়েছ এবং এ অভিযান অব্যহত থাকবে। সম্পাদনা: সাদেক আলী
আপনার মতামত লিখুন :