অনিন্দ্য তুহিন: [২] নওগাঁর বাজারে নতুন জাতের আলুর ভাল দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন চাষীরা। তবে শুরুতে আবহাওয়া প্রতিকুলে না থাকায় যেমন দেরীতে রোপন করতে হয়েছে তেমনি শীত ও কুয়াশার কারণে মোড়ক দেখা দিয়েছে। এতে করে লাভের একটি অংশ কীটনাশক কিনতে খরচ হয়ে যাচ্ছে।
[৩] জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবছর জেলায় প্রায় ২২ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ করা হয়েছে। যেখানে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লক্ষ ৮ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে আগাম আলুর আবাদ হয়েছে প্রায় ৯ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে। যেখানে সাদা পাপড়ী ৯৬০ হেক্টর, লাল পাপড়ী ৪ হাজার ৫২৫ হেক্টর এবং সাইটা জাতের আলু ৪ হাজার ১৬৫ হেক্টর। এছাড়া স্থানীয় জাতের আলুর আবাদও হয়েছে। গত বছর ২০ হাজার ৮৯০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ করা হয়েছিল।
[৪] আলুর সবুজ পাতায় ছেয়ে আছে দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ। এমন দৃশ্য নওগাঁ সদর উপজেলার ছোট যমুনা নদীর চরে শ্যামপুর গ্রামের মাঠ। চাষীরা কোথাও ক্ষেত থেকে আলু তুলছেন, আবারও কোথাও মোড়ক দমনে কীটনাশক প্রয়োগ করছেন। আগাম আলু কার্তিক মাসে রোপন করা হয়। প্রায় দুই মাসে এই আগাম জাতের আলু পরিপক্ক হয়ে বাজারজাত করা হয়। বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা জমিতে গিয়ে গাছসহ আলু কিনে শ্রমিকদের দিয়ে আলু উত্তোলন করছেন।
[৫] সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের কৃষক সাজেদুর রহমান বলেন, ভাল দাম পাওয়া আশায় কার্তিক মাসে একবিঘা জমি প্রস্তুত করে আগাম জাতের পাপড়ি আলু রোপন করেন। বীজ, হালচাষ, সার, ঔষধ ও শ্রমিকসহ বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার ১৮ হাজার টাকা। দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে আলু পরিপক্ক হয়ে উঠতে শুরু করেছে। তিনি প্রায় ৩৫ মণের মতো ফলন পেয়েছেন। শুরুতে ২ হাজার টাকা মণ হলেও বর্তমানে প্রায় দেড় হাজার টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। জমি থেকে আলু উঠানোর পর সেই জমিতেই কপি ও পিয়াজ লাগানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এতে খরচও কম পড়বে।
[৬] একই গ্রামের আলু চাষী আনিছুর রহমান বলেন, আড়াই বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছেন। শুরুতে এবছর আবহাওয়া প্রতিকুলে ছিলনা। একদিকে ঘনবৃষ্টিপাতের কারণে আলু রোপনে বিলম্ব হয়েছে। অপরদিকে প্রচন্ড শীতের কারণে আগাম জাতের আলুতে মোড়ক দেখা দিয়েছে। মোড়কে আলুর পাতা কুকড়ে যাচ্ছে। মোড়ক দমনে কীটনাশক দিচ্ছেন। এতে করে লাভের একটি অংশ কীটনাশক কিনতে খরচ হয়ে যাচ্ছে। তবে বাজারে ভাল দাম থাকায় লাভের মুখ দেখছেন তিনি।
[৭] নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শামছুল ওয়াদুদ বলেন, গত বছর আলুর দাম ভালো পাওয়ায় এবছর কৃষকরা আরো বেশি পরিমাণ জমিতে আলুর আবাদ করেছে। আগাম আলুর উৎপাদন কিছুটা কম হয়। তবে বাজারে ভালো দাম পেয়ে কৃষকরা উপকৃত হচ্ছেন। এ বছর আলুর লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে বলে মনে করেন তিনি। সম্পাদনা: সাদেক আলী
আপনার মতামত লিখুন :