শিরোনাম
◈ ইরানের ইস্পাহানে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত ◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান

প্রকাশিত : ০৮ জানুয়ারী, ২০২১, ০৫:২২ সকাল
আপডেট : ০৮ জানুয়ারী, ২০২১, ০৫:২২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন কেমন হওয়া উচিত ?

এ বি এম কামরুল হাসান : যুক্তরাজ্যে করোনা ভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন পাওয়া গেছে কয়েক সপ্তাহ আগে। অনেকেই তখন দাবি তুলেছিলেন সেদেশের সাথে ঢাকা-সিলেটের ফ্লাইট বন্ধের। সে সিদ্ধান্ত অনেক ক্ষেত্রে আত্মঘাতি হতে পারে। জীবন ও জীবিকার তাগিদে অনেকের জরুরি ভ্রমণের প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। তবে নতুন স্ট্রেইনের ভাইরাস আমদানি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ হলো কোয়ারেন্টাইন। একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আগত ব্যক্তিকে আলাদা করে রাখা। সেটি বাসায় হতে পারে। একটি নিয়ন্ত্রিত আবাসিক প্রতিষ্ঠানেও হতে পারে।

বাংলাদেশের জন্য হোম কোয়ারেন্টাইন প্রযোজ্য নয় সেটা এখন একজন পাগলও স্বীকার করবে। হোম কোয়ারেন্টিনের নামে আমরা ইতিপূর্বে মোটর সাইকেলে এলাকা ভ্রমণ, চায়ের দোকানে আড্ডা, বিয়েতে অংশগ্রহণ- সবই দেখেছি। আবার প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে ইতালি প্রবাসীরা এক বেলাও থাকলেন না। বিক্ষোভ করলেন। উপরোন্ত আমাদের সিস্টেমকে ফাঁক করে দিলো। কারণ সেখানে প্রবাসী বান্ধব পরিবেশ নাই। কর্তৃপক্ষ অগত্যা সবাইকে ছেড়ে দিলো। বাকিটা তো ইতিহাস।

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র ব্রুনাইতে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন চালু রয়েছে কোভিডের শুরু থেকেই । স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হোটেল ঠিক করে রেখেছে। হোটেলের সাথে কোয়ারেন্টিনের বিধিমালা বিষয়ে বোঝাপড়া করে নিয়েছে। বিমানবন্দর থেকে মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে আগতরা সরাসরি হোটেলে চলে যাচ্ছেন। বিমানবন্দরে কোন আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব কাছাকাছি আসতে পারছে না। হোটেলে সিসিটিভি থাকছে। নিরাপত্তা থাকছে। তদারকি থাকছে। কেউ রুম থেকে বের হতে পারবেন না। কেউ তাঁর রুমে ঢুকতে পারবেন না। খাবার হোটেলের রেস্তোরা থেকে তিনবেলা সরবরাহ করা হচ্ছে । খাবার রুমের সামনে রেখে কলিং বেল চেপে চলে যাচ্ছে হোটেল বয়। কিছুক্ষন পর আপনি দরজা খুলে খাবার নিজ রুমে ঢুকিয়ে নিবেন। কোন স্বজন খাবার আনলে তিনি রিসেপশনে সেটা দিয়ে চলে যাবেন। কর্তৃপক্ষ সেটা আবার পরীক্ষা করছে কোনো মাদক জাতীয় জিনিস আছে কিনা। তারপর তার রুমের সামনে পৌঁছে দিচ্ছে হোটেল বয়। রুমে বৈধ কোনো জিনিস ঢুকতে পারবে। তবে রুম থেকে কোন জিনিস বেরুতে পারবে না। যা কিছু বের হচ্ছে সেটা ময়লার ব্যাগে করে ডাস্টবিনে চলে যাচ্ছে। দেশ থেকে কিছু জরুরি ওষুধ আনা হয়েছিল। বলা বাহুল্য, চৌদ্দ দিনের ভেতর সেটা হাতে পাবার সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল।

ইতালি প্রবাসীদের মতো কোয়ারেন্টিনের স্থান পছন্দ বা অপছন্দের কোন বালাই নেই এখানে। মন্ত্রণালয় সব মানের হোটেল ঠিক করে রেখেছে। এক তারকা থেকে পাঁচ তারকা হোটেল। খরচ সব নিজের। যে হোটেল আপনার পছন্দ, সেখানেই থাকতে পারবেন। হোটেল বুকিং এর প্রমান দেখাতে পারলেই আপনি উড়োজাহাজে উঠতে পারবেন, নচেৎ নয়। কোয়ারেন্টিনের সময়ে কোভিড টেস্টের খরচ বাবদ প্রায় বাইশ হাজার টাকা পরিশোধের প্রমাণও এসময় দেখাতে হবে। হোটেল কর্তৃপক্ষ কোভিড টেস্টের জন্য হাসপাতালে আনা নেয়ার সব ব্যবস্থা করছে।

প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা এমন কড়াকড়িভাবে ব্রুনাইতে মানা হচ্ছে, সেটা নিচের তথ্য দেখলেই অনুমান করতে পারবেন। স্থানীয়ভাবে কোভিডের শেষ রোগী পাওয়া গেছে প্রায় সাত মাস আগে। এর ভেতর অন্য দেশ থেকে আগতদের মধ্যে পজিটিভ রোগী পাওয়া গেছে বত্রিশজন। যাদের সবাই হোটেলে কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। এই বত্রিশজন আক্রান্তদের মাধ্যমে দ্বিতীয় কোন ব্যক্তি অদ্যাবধি আক্রান্ত হয়নি।

পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে, লন্ডনের ফ্লাইট সিলেটে নামার পর দেশপ্রেমিক ভাইয়েরা হোটেলে যেতে আপত্তি জানান, হট্টগোল করেন। পুলিশকে অমান্য করছেন। ধূমপান করতে বাইরে যেতে চাচ্ছেন। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে কটূক্তি করছেন। ক্ষনে ক্ষনে তাঁরা বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। এ কেমন দেশপ্রেম রে ভাই। নিজের পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজনের প্রতিও কি কোনো দয়ামায়া নেই ? কোয়ারেন্টিনের কাজটি আপনি করবেন প্রথমত আপনার পরিবার ও নিকট আত্মীয়দের জন্য, শেষে দেশের জন্য। মোদ্দাকথা হলো- নিয়ম মানুন, নিজে বাঁচুন, পরিবার বাঁচান, দেশ বাঁচান। লেখক: প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়