ওমেন্স নিউজ: নতুন ইতিহাস রচনা করেছেন সাংবাদিক ফরিদা ইয়াসমিন। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির ২০২১-২২ মেয়াদের নির্বাচনে সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। ১৯৫৪ সালে ঢাকায় প্রেসক্লাবের যাত্রা শুরুর পর ৬৬ বছরের ইতিহাসে তিনিই হচ্ছেন প্রথম নারী সভাপতি। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাংবাদিক ফোরামের প্রার্থী ফরিদা ইয়াসমিন ৫৮১ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল উদ্দিন সবুজ পেয়েছেন ৩৯৫ ভোট।
এর আগেও তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রথম নির্বাচিত নারী সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ইতিহাস রচনা করেছিলেন। ফরিদা ইয়াসমিন তিনি বাংলাদেশ উইমেন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্ক এবং বাংলাদেশ উইমেন জার্নালিস্ট ফোরামের উপদেষ্টা। এছাড়া বাংলাদেশ জার্নালিস্ট ফোরাম অ্যাগেনিস্ট ট্রাফিকিংয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। মিডিয়াতে নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করায় ২০১৭ সালের ৭ মে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ অব রিপ্রেজেন্টটেটিভ থেকে বিশেষ কংগ্রেশনার রিকোগনিশন এবং নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক অ্যাডভোকেট অফিস থেকে পেয়েছেন ‘কংগ্রেসনাল স্পেশাল সার্টিফিকেট’।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিক বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করার পর বাংলার বাণী পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করেন ফরিদা ইয়াসমিন। ১৯৯৯ সাল থেকে তিনি দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় কর্মরত। ফরিদা ইয়াসমিন ছাড়াও এই নির্বাচনে আরও দুই নারী সাংবাদিক জাতীয় প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের একজন হলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ফোরামের প্রার্থী শাহনাজ সিদ্দিকী (সোমা)। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সিনিয়র সাংবাদিক শাহনাজ সিদ্দিকী পেয়েছেন ৪২৩ ভোট। অন্যজন বিএনপি সমর্থক প্যানেলের প্রার্থী শাহনাজ বেগম (পলি)। দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সাবেক সিনিয়র সাংবাদিক শাহনাজ বেগমের প্রাপ্ত ভোট ৪৩০।
প্রসঙ্গত, এই দুই নারী সাংবাদিক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। শাহনাজ সিদ্দিকী গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা এবং শাহনাজ বেগম রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করেছেন। প্রেসক্লাবের এবারের নির্বাচনে একজন বিদ্রোহী প্রার্থীসহ সর্বসাকুল্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন চারজন নারী প্রার্থী। তাদের মধ্যে ফরিদা ইয়াসমিন সভাপতি পদে এবং বাকি তিনজন লড়েছেন সদস্য পদের জন্য। সভাপতি ছাড়া আর কোনো ভাইটাল পোস্টে নারী প্রার্থী দেয়নি দুই ফোরামের কেউই। ফোরামের নির্বাচিত
প্যানেলের বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও সফল হতে পারেননি সাংবাদিক নেত্রী সেবিকা রাণী।
আগামীতে প্রেসক্লাবসহ ইউনিয়নের অন্যান্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন আরও অধিক সংখ্যক নারী এবং তারা সফল হবেন। আমরা চাই আরও অনেক নারী এই পেশায় এগিয়ে আসুক এবং দেশের সাংবাদিক সমাজকে নেতৃত্ব দেয়ার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের পথকে সুগম করুন। নারী নেতৃত্বের জয় হোক।
ফরিদা ইয়াসমিন, শাহনাজ সিদ্দিকী ও শাহনাজ বেগম (বাম থেকে ডানে)
আপনার মতামত লিখুন :