শিরোনাম
◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

প্রকাশিত : ০৩ জানুয়ারী, ২০২১, ০৬:৪৬ সকাল
আপডেট : ০৩ জানুয়ারী, ২০২১, ০৬:৪৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সাড়ে ছয় কোটি টাকা মেরে দেয়া প্রতারক দারাদ!

সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল:  ২০০৫ সালের ঘটনা। ‘বাংলাদেশ-জাপান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ স্থাপনের নামে সিলেটের প্রতারক জনৈক দারাদ হোসেন এক ভন্ড জাপানের রবীদ্র গবেষক কাজুও আজুমার কাছ থেকে সোয়া ছয় কোটি টাকা মেরে দেয়। ঘটনার শুরুতে অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, কবি নির্মলেন্দু গুণ এবং আমি লিখিত ভাবে কাজুও আজুমার কাছে প্রতিবাদ জানাই এবং অচেনা-অজানা-অখ্যাত দারাদের হাত থেকে সুন্দর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সিলেটে নির্মাণ না করে ঢাকায় স্থাপনের অনুরোধ জানাই।

কাজুও আজুমা অসুস্থ অবস্থায় বাংলাদেশে আসেন। আমরা খবর পেয়ে আমি আর গুণ দা এক বৃষ্টিভেজা বিকেলে একটি চিঠি নিয়ে তাঁর সাথে ঢাকা বিমান দেখা করতে গেলে উক্ত দারাদ কাজুও আজুমার কাছে ভিড়তে না দিয়েও গাড়িতে উঠিয়ে নিতে চাইলেও আমরা তাঁর হাতে আমাদের চিঠিটা পৌঁছে দেন।

অসুস্থ কাজুও আজুমা স্বস্ত্রীক বাংলাদেশে এলে আমরা বৃষ্টিতে ভিজে বিমান বন্দরে গিয়ে তাঁর হাতে চিঠিটা দিই। হুইল চেয়ারে বসা আজুমার কাছে ঘেষতে দিচ্ছিলো না। কারণ, তাঁর এ সফর খুবই গোপন রাখা হয়েছিল। জাপান দূতাবাস জানতো না এ সফরের কথা।
পরে তিনি রেজওনা চৌধুরী বন্যার ত্বত্তাবধানে চলে যান। গ্রিণ রোডে একটি হোটেলে কাজুও আজুমারে রাখা হয়। সেখানেও আমাদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।

এদিকে জাপান প্রবাসী প্রবীর বিকাশ সরকার আমাকে ফোন করে বলে, আপনার বাঁধা দিচ্ছেন কেনো? সব কিছুই কি আপনাদের সুবিধার্থে রাজধানীতেই হবে। তা হতে পারেনা। আপনারা অফ যান। জাপান-বাংলাদেশ কেন্দ্রটি ঢাকার বাইরেই মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার বাহারপুরেই হবে; বাঁধা দিয়েন না। আপনারা চুপ থাকেন।
............
তারপর দীর্ঘ দিন পর হঠাৎ ২৮ জুন ২০১১ তারিখে প্রথম আলোর প্রতিবেদন ‘রবীন্দ্রপ্রেমী সেজে দরাদের প্রতারণা’ পড়ে বিস্মিত হলাম। সেই প্রতিবেদনের সাথে ছাপা হলো বিশিষ্ট লেখক মনজুরুল হকের মন্তব্য প্রতিবেদন- ‘জাপান-বাংলাদেশ সাংস্কৃতি কেন্দ্রের নামে প্রতারণা : ছয় কোটি টাকা আত্মসাৎ’। পরদিন অর্থাত ২৯ জুন ২০১১ তারিখে দৈনিক মানবজমিনে ছাপা হলো- ‘আত্মগোপনে প্রতারক দারাদ’।

উল্লেখ্য যে, মৌলভীবাজারের বড়লেখার বাহারপুরের সপ্তম শ্রেণীর পাশ বদরুল ইসলাম হঠাৎ করেই দারাদ আহমেদ রূপান্তরিত হয়ে রবীন্দ্রভক্ত এবং বিশ্ব ভারতীয় ছাত্রে পরিণত হলেন! সেই সূত্র ধরে দারাদ জাপানি গবেষক দম্পতি ড. কাজুয়া আজুমা এবং কেইকো আজুমার ‘পুত্রতুল্য’ হয়ে উঠলেন।

সেই সব প্রতিবেদন থেকে জানা যায়- ‘রবীন্দ্র দরদী’ দারাদের কুকীর্তি। পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, এই দারাদ দীর্ঘদিন ধরেই নানা ধরনের প্রতারণা করে আসছে। তার মধ্যে আদম ব্যবসাও অন্যতম। জাপানে যৌন হয়রানির জন্য দারাদ জেল খেটেছে বলেও জাপান প্রবাসী বাঙালিরা জানিয়েছেন। মৌলভীবাজার থেকে শরিফুল হাসানের সর জমিনের অনুসন্ধানী রিপোর্ট (২৮-০৬-২০১১) থেকে আরো অনেক অজানে মিথ্যাচার জানা গেলোঃ

১. সেখানে কোনো সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নয়, বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের বাহারপুর গ্রামের বাড়ির সামনে একটি মসজিদ স্থাপন করেছে,
২. নিজেকে নিউইর্য়ক টাইমসের সাংবাদিক বলে প্রচার করেছে,
৩. এই কেন্দ্র প্রধানমন্ত্রি/রাষ্ট্রপতি উদ্বোধন করবেন বলে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে,
৪. বিশ্ব ভারতীর ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলো,
৫. সেই সুবাদে নাকি ভারতের অনেক প্রধানমন্ত্রী এবং গান্ধী পরিবারসহ অনেকের সঙ্গেই তাঁর ঘনিষ্ঠতা আছে।
৬. প্রয়াত অর্থমন্ত্রি সাইফুর রহমানের নিকটতম ‘আত্মীয়’ বলে পরিচয় দেয়। বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক বলে জানিয়েছেন, (তবে সে বড়লেখা উপজেলার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যুক্ত।) এবং ২০০৮ সালে মনোনয়নপ্রার্থী। নিজেকে বিএনপির জাপান শাখার সভাপতি হিসেবেও পরিচয় দেন।
এবং ৭। অশিক্ষিত মা তসলিমা খানমকে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ডাক্তার বানিয়েছে। যিনি প্রধান মন্ত্রি/ রাষ্ট্রপতির কথা বলে বার বার নানান উছিলায় মিথ্যা কথা বলে একের পর এক টাকা আদায় করেন।
প্রধান মন্ত্রির কাছেও অভিযোগ করে কোন সমাধান হয়নি। এই সব মিথ্যাচার এবং পুঁজি করে এই প্রতারক কোটিপতি হয়েছে। ডুবিয়েছে প্রবাসী বাঙালিদের মান-সম্মান, নষ্ট করেছে মানুষের বিশ্বাস, ধূলিসাৎ করেছে দেশের ভাবমূর্তি।  ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়