বিপ্লব পাল: ভারতবর্ষ তথা বাংলায় বিদেশি শাসকদের বিজয়ের মূল কারণ, দেশীয় শাসনের দুর্নীতি এবং অত্যাচারের কারণে, বাংলার সাধারণ মানুষ বিদেশি শাসকদের উত্তম বলে মনে করে খাল কেটে কুমীর এনেছে। এই ঘটনা বারবার ঘটেছে। বখতিয়ার খিলজির মতো এক কুখ্যাত ডাকাতকে, বাংলার লোকেরা সেন রাজাদের চেয়ে উত্তম বলে মনে করায়, সেনেদের সেনাবাহিনী কোনো প্রতিরোধই দিতে চায়নি। সেনদের ধর্মীয় এবং অন্যান্য অত্যাচারের কারণে এতো বিদ্রোহ হয়-জাত বর্নভেদের কারণে বাংলার সাধারণ মানুষ সেনরাজাদের থেকে দূরে সরে যায় এবং বাঙালি ইসলাম গ্রহণ করে। দ্বিতীয়বার বাংলা স্বাধীনতার কাছাকাছি এসেছে প্রতাপাদিত্যের সময়। দুর্গম বাংলায় মোঘল ফৌজ এতো সহজে ঢোকার কথা না। কিন্তু প্রত্যাপাদিত্য এতো অত্যাচারি ছিলেন, তার আশে-পাশের জমিদাররা সবাই মিলে মুঘলদের সাহায্য করেছিলো।
ফলে প্রতাপাদিত্যের পতন হয়। বাংলা দিল্লির অধীনে আসে। এর আগে কোনোদিন বাংলা দিল্লির অধীনস্থ প্রদেশ ছিলো না। বাংলার পালরাজা, সেনরাজা, সুলতানেরা স্বাধীন শাসক ছিলেন। তৃতীয়বার যখন বৃটিশ এলো। সিরাজ বাঙালি ছিলেন না বটে, কিন্তু বাংলার ভারতীয় শাসক ছিলেন। সেখানেও দেখা গেলো, বাংলার জমিদার ব্যবসায়ীরা ব্রিটিশকেই চাইছেন-কারণ সিরাজকে তাদের অত্যাচারী অপদার্থ মনে হয়েছে। এবার চতুর্থবারের পালা। আমার খুব অবাক লাগছে, শিক্ষিত বাঙালির একটা বড় অংশই চাইছেন, মমতা ব্যানার্জির পতন হয়ে দিল্লির বিজেপি শাসক আসুক। মনে রাখবেন,বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীদের কেউ মমতার মতো স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবেন না। তাদের দিল্লির সেবাদাস হয়েই থাকতে হবে। কিন্তু আশ্চর্য্য অধিকাংশ শিক্ষিত বাবু বাঙালির ধারণা, তা মমতা ব্যানার্জির চেয়ে উত্তম হবে। যদিও ইতিহাস নির্মম। ওই প্রতি তিনটি ক্ষেত্রেই কিন্তু বাংলার বিস্তর ক্ষতি হয়েছে। এতো ক্ষতি যে ৩০ কোটির ভাষাগোষ্ঠীর একটি জাতি শুধু দুইভাগে বিভক্তই না-তারা পৃথিবীর অন্যতম দরিদ্র জাতিগোষ্ঠীর অন্যতম। মহাত্মা গান্ধী কিন্তু বহুদিন আগে বলে গেছেন, স্বদেশি কুশাসক, বিদেশি সুশাসকের চেয়ে ভালো। কেন বলেছেন, ইতিহাস সাক্ষী। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :