ডঃ আরমান রহমান, ডাবলিন আয়ারল্যান্ড থেকে: গতকাল রয়টার সহ অনেক আমেরিকান সংবাদে ফাইজারের ভ্যাকসিন নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরে সেটা যথারীতি বাংলাদেশে বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে তরজমা আকারে ছড়িয়ে পরে। সেখানে বলা হয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার সানডিয়েগোতে ভ্যাকসিন নেয়ার পরেও একজন নার্সের করোনা হয়েছে। রোগের লক্ষণের সাথে সাথে তার কোভিড টেস্ট ও পজিটিভ।
আসেন এইবার মূল খবরটি ভাল মত পড়ি (এবং শুধু হেডিং দেখে বিভ্রান্ত না হই) এইটা একজন ৪৫ বছর বয়স্ক পুরুষ নার্স, সে জরুরি বিভাগে কাজ করে অথচ (বাংলাদেশে অনেক জায়গায় মহিলা নার্সের ছবি ছাপা হয়েছে)।
ডিসেম্বরের ১৮ তারিখে সে ফাইজারের টিকা নিয়েছে। এর পরে সে ফেইসবুকে জানিয়েছে টিকার জায়গায় হাতে ব্যাথা ছাড়া তারা আর কোন পার্শপ্রতিক্রিয়া ছিল না। এর পরে ক্রিসমাসের দিন তার জ্বর আসে, গায়ে ব্যাথা হয়। ক্রিসমাসের পরেরদিন সে টেস্ট করে করোনা পসিটিভ পায়। এখানে দেখেন টিকা দেয়ার আট দিন পরে তার করোনা টেস্ট পজিটিভ আসে।
ফাইজার তার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের রেজাল্টে স্পষ্ট জানিয়েছে টিকার প্রথম ডোজ দেয়ার পরে এটির এফিকেসি ছিল ৫২%। দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার পরে এই এফিকেসি ৯৫% হয়। এফিকেসি কথার অর্থ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে রোগের লক্ষণ দেখা দেয় নাই।
এখন এই নার্স ভদ্রলোক এবং যারা সংবাদটি করেছেন তারা যদি আশা করে প্রথম ডোজ দেয়ার পরে সে ৫২% মানুষের ভিতর থাকবে, সেটা কোন যুক্তিসঙ্গত কথা নয়।
আসলে এই নিউজ টি করা হয়েছিল সাধারণ মানুষকে বোঝাবার জন্যে যে ভ্যাকসিন নেয়ার পরেও তাদের কে সাবধানে থাকতে হবে (মাস্ক, পিপি ই ইত্যাদি), কারণ ভ্যাক্সিনের প্রথম ডোজ দেয়ার পরে করোনা ভাইরাস থেকে সম্পূর্ণ সুরক্ষা পেতে ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে (দ্বিতীয় ডোজের এক সপ্তাহ পরে সম্পূর্ণ সুরক্ষা আশা করা যায়)।
তাই ভ্যাক্সিন নিয়ে যে কোন সংবাদ প্রকাশের আগে সবার ভেবে দেখা উচিত তারা সঠিক ভাষা প্রয়োগ করে সংবাদটি তৈরী করেছেন কি না। এই ক্ষেত্রে রয়টারের মূল সংবাদের হেডিং ''Vaccinated US nurse contracts COVID-19, expert says Pfizer shot needed more time to work - ABC'' সাধারণ মানুষের জন্যে ভ্রান্তিকর বলে আমি মনে করি।
আপনার মতামত লিখুন :