নিউজ ডেস্ক: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) হুঁশিয়ার করে বলেছে, কভিড-১৯ মহামারি মারাত্মক হলেও এটি 'তেমন বড় কিছু নয়। সামনে আরও বড় মহামারি আসতে পারে। সংস্থাটির এ বক্তব্যকে পীড়াদায়ক হিসেবেই দেখা হচ্ছে। কারণ, করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর গত এক বছরে এ মহামারিতে সোয়া আট কোটি লোক আক্রান্ত এবং প্রায় ১৮ লাখ মানুষ মারা গেছে।
ডব্লিউএইচওর ২০২০ সালের শেষ সংবাদ ব্রিফিংয়ে সংস্থার ইমার্জেন্সি প্রোগ্রামের প্রধান মাইকেল রায়ান আরও বলেছেন, করোনার হুমকি অব্যাহত থাকবে। এই মহামারি থেকে এটাই শিক্ষা নিতে হবে যে, আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। সামনে হয়তো আরও ভয়াবহ মহামারি আসতে পারে। সেজন্য আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। তিনি বলেন, এ মহামারিতে যোগাযোগ ও সরকার পরিচালনার অনেক ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে। তবে এটাকে 'ওয়েক-আপ কল' বা সতর্কতামূলক ডাক হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।
ডব্লিউএইচওর সংক্রামক ব্যাধি বিষয়ক কৌশল ও প্রযুক্তিগত পরামর্শদাতা দলের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ডেভিড হেইমান বলেছেন, বিশ্ববাসীকে কভিড-১৯ নিয়েই বাঁচতে শিখতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে টিকাদান শুরু হলেও ভাইরাসটি হয়তো স্থানীয় পর্যায়ে থেকে যাবে। তিনি বলেন, হার্ড ইমিউনিটি নিয়ে বিশ্ববাসী আশাবাদী। যথেষ্ট সংখ্যক মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হলে সংক্রমণ কমে আসবে।
মাইকেল রায়ান বলেন, বিশ্বব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি কার্যকরভাবে চালানো হলে, এ ভাইরাসের হুমকি অনেক কমে যাবে। তবে এটি এখন দেখার বিষয় যে, টিকা কীভাবে গ্রহণ করা হচ্ছে। ভাইরাস নির্মূল করতে আমরা কতদূর পর্যন্ত টিকা কার্যক্রম চালাতে পারি। টিকার কার্যকারিতা খুব ভালো থাকলেও সংক্রামক রোগ নির্মূলের নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না।
তিনি বলেন, এ কারণেই টিকার প্রথম লক্ষ্য ছিল জীবন বাঁচানো এবং শারীরিকভাবে দুর্বলদের রক্ষা করা। তারপর আমরা ভাইরাস নির্মূলে কাজ করব। ডব্লিউএইচওর প্রধান বিজ্ঞানী ড. সৌম্য স্বামীনাথন ব্রিফিংয়ে বলেন, টিকা দেওয়ার অর্থ এই নয় যে, ভবিষ্যতে সামাজিক দূরত্বের মতো জনস্বাস্থ্য নির্দেশনা মেনে চলা লাগবে না।
এ সময় ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস বলেন, 'বছরের শেষে এসে মহামারির ক্ষতি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন, সেইসঙ্গে আমাদের সাফল্যও। সামনের বছর নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবো।' উদাহরণ হিসেবে তিনি করোনার নতুন ধরনের কথা উল্লেখ করেন। সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস ও ওয়াশিংটন পোস্ট।