ডেস্ক রিপোর্ট : জমজম কূপের সৃষ্টির ঘটনা মোটামুটি আমরা সবাই জানি। হযরত ইসমাঈল (আ.)-এর শিশুকালের সেই হৃদয় বিদারক কাহিনী। মা হাজেরার ছোটাছুটি। মরু অঞ্চলে এক ফোটা পানির জন্য সে কী নিদারুণ হাহাকার। অতঃপর এলো মহান প্রভুর দয়া। শিশু ইসমাঈলের পদাঘাতে রুক্ষ ভূমি ফেটে তৈরি হলো নির্মল, সুমিষ্ট পানির ফোয়ারা। মরুর বুকে জন্ম নিলো এক অলৌকিক কূপ। পানির অবিরত উৎস।
বিগত ষাটের দশকে বাদশাহ্ খালেদের শাসনামলে আধুনিক যন্ত্রপাতির দ্বারা জমজম কূপ পরিস্কার করার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এ কাজ তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত প্রকৌশলী ইয়াহইয়া কোশকের প্রদত্ত বিবরণ থেকে জানা যায় যে, বড় ধরনের কয়েকটি পাথরের তলদেশ থেকে প্রবল বেগে পানি উৎসারিত হচ্ছে। সব চাইতে বড় পাথরের চাঙ্গটির উপর স্পষ্ট আরবী হরফে ‘বি-ইসমিল্লাহ’ কথাটি উৎকলিত রয়েছে। রাসূল (সা.)-এর দাদা আবদুল মুত্তালিবের সময় কূপের গভীরতা ছিল মাত্র ১৪ ফুট। খলিফা মামুনুর রশীদের আমলে পুনরায় তা খনন করা হয়।
জমজম কুপের পানি অনেক রোগ নিরাময় করে। যারা পবিত্র হজ পালন করতে যান তারা বোতল-গ্যালনে ভরে জমজম কূপের পানি নিয়ে আসেন। এতো বিপুল সংখ্যক মানুষ এই বরকতময় পানি পান করে তবু পানির ফোটা পরিমানও শেষ হয় না। এভাবে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দার জন্য রেখেছেন ঐশীবাণী নিদর্শন।
আসুন, জেনে নেয়া যাক জমজম কূপ সম্পর্কে কিছু রহস্য:
এক. আল্লাহ তায়ালার অসীম কুদরতে ৪০০০ বছর পূর্বে সৃষ্টি হয়েছিল।
দুই. ভারী মোটরের সাহায্যে প্রতি সেকেন্ডে ৮০০০ লিটার পানি উত্তোলন করার পরও পানি ঠিক সৃষ্টির সূচনাকালের ন্যায় থাকে।
তিন. পানির স্বাদ পরিবর্তন হয়নি, জন্মায়নি কোন ছত্রাক বা শৈবাল।
চার. সারাদিন পানি উত্তোলন শেষে, মাত্র ১১ মিনিটেই আবার পূর্ণ হয়ে যায় কূপটি।
পাঁচ.এই কূপের পানি কখনও শুকায়নি। সৃষ্টির পর থেকে একই রকম আছে এর পানি প্রবাহ। এমনকি হজ মৌসুমে ব্যবহার কয়েকগুন বেড়ে যাওয়া সত্বেও এই পানির স্তর কখনও নিচে নামে না।
ছয়. সৃষ্টির পর থেকে এর গুণাগুণ, স্বাদ ও এর মধ্যে থাকা বিভিন্ন উপাদান একই পরিমানে আছে।
সাত. এই ক‚পের পানির মধ্যে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সল্টের পরিমাণ অন্যান্য পানির থেকে বেশি। এজন্য এই পানি শুধু পিপাসা মেটায় তা না, এই পানি ক্ষুধাও নিবারণ করে।
আট. এই পানিতে ফ্লুরাইডের পরিমান বেশি থাকার কারণে এতে কোন জীবানু জন্মায় না ।
নয়. এই পানি পান করলে সকল ক্লান্তি দূর হয়ে যায়।
সূত্র-গোনিউজ
আপনার মতামত লিখুন :