কামরুল আহসান, ফেসবুক থেকে, হিরোশিমা-নাগাসাকিতে পরমাণু বোমা হামলায় মারা গিয়েছিল পাঁচ লাখের মতো মানুষ। আর পঞ্চাশের মন্বন্তরে মারা গেছে ৬০ লক্ষ মানুষ। বাংলার এ-ভয়ঙ্কর দুর্ভিক্ষের জন্য দায়ী একজন মাত্র মানুষ― উইনস্টন চার্চিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সৈন্যদের খাদ্য সরবরাহের জন্য বাংলার সমস্ত খাদ্য মজুদ করা হয়। বিদেশী কোনো রাষ্ট্রকে ত্রাণ সহায়তা দিতেও বাধ সাধা হয়। তাতে ইংরেজ সরকারের মান যায়। আর এদিকে বাংলার মানুষ পথে পথে মরে পড়ে থাকে। দুয়ারে দুয়ারে একটু ফেন দাও মা বলে চেঁচায়। মৃতমায়ের স্তন মুখে দিয়ে পথে মরে পড়ে থাকে সদ্যজাত শিশু। মানুষের লাশ খায় কুকুর ও কাক।
এইসব ভয়াবহ চিত্র যিনি এঁকে গেছেন তিনি জয়নুল আবেদিন। আমরা তাঁর ছবি দেখে এখনো মর্মাহত হই, কিন্তু, ইংরেজের প্রতি ঘৃণা দেখাতে এখনো পিছপা হই। হিরোশিমা-নাগাসাকির ঘটনা বিশ্বের সবাই জানে, কিন্তু, আমাদের ৬০ লাখ মানুষ হারানোর কথা কজন জানে পৃথিবীতে!
৪৩’র দুর্ভিক্ষ নিয়ে সত্যজিৎ রায় বানিয়েছিলে অশনি সংকেত, মৃণাল সেন বানিয়েছিলেন আকালের সন্ধানে। বঙ্গবন্ধুও তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে বিস্তৃত আকারে তুলে ধরেছেন সেই সময়ের মানবেতর জীবনের করুণ চিত্র। তিনি তখন কলকাতাতেই ছিলেন, সোহরাওর্দীর নির্দেশে লঙ্গরখানা খুলেছিলেন। বলেছিলেন, যুদ্ধ করে ইংরেজ আর না খেয়ে মরে বাংলার মানুষ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তিই জয়ী হয়েছিল, আর তারপর কোনো ক্ষতিপূরণ কি দিয়েছিল তারা বাংলার মানুষকে? হ্যাঁ, দিয়েছিল, তার কবছর পরেই বাংলাকে দুভাগ করে।
ইংরেজ এই বাংলার মানুষের সাথে যে-অপরাধ করেছে বঙ্গপোসাগরের সমস্ত কাদা তুলে ছুড়ে মারলেও তা কোনোদিন শোধ হবে না।