ডেস্ক রিপোর্ট : চট্টগ্রামের রাউজানে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন পাঁচ ভুয়া সাংবাদিক। গতকাল সোমবার বিকেল ৩টায় রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারাবটতলা এলাকায় তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস জব্দ করে পুলিশ।
আটককৃতরা হলে মায়মনসিংহ জেলার শাপলা থানার খোকন আলীর ছেলে আল আমিন আহমেদ (৩৫), গফরগাঁও থানার সিরাজুল ইসলামের মেয়ে আরিফা আফরোজ (২০), বালুকা থানার সৈয়দ আবদুর জব্বারের মেয়ে সৈয়দা জবা (২২), একই এলাকার মাছুম হাসান (৩৫) এবং কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলার হাশেম মজুমদারের ছেলে গাড়ি চালক ইলিয়াছ মজুমদার (৫৫)।
থানায় নিয়ে আসার পর আটককৃতরা বিভিন্ন টেলিভিশন ও সংবাদপত্রের পরিচয় পত্র প্রদর্শন করে তারা সেখানে সংবাদকর্মী হিসেবে দায়িত্বরত আছেন মর্মে দাবি করে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান। তারা সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের নিকট দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, তাদেরকে পত্রিকা থেকে কোনরকম বেতন-ভাতা দেওয়া হয় না। তাই সরকারের উচিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে এভাবে 'উপঢৌকন' গ্রহণ করাকে বৈধ করে দেওয়া। বিকেল সাড়ে ৫টায় ৮০৮ ব্রিকফিল্ডের ব্যবস্থাপক সুমন দেবনাথ বাদী হয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের করলে তাদেরকে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
রাউজান থানার পুলিশ জানায়, আটককৃতরা একাধিক ইটভাটায় চাঁদাবাজি করেন। ভুয়া সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তারা মাইক্রোবাসের সামনে দৈনিক বর্তমান কথা ও দেশটিভি বাংলার স্টিকার লাগান। মুঠোফোনের পেছনে নিউজ বাংলা টিভি এবং গলায় জবস টিভি ও দেশকাল পত্রিকার কার্ড ঝুলিয়ে তারা চাঁদাবাজি করেন। অথচ নিজের নাম ও পত্রিকার নামও ঠিকমতো লিখতে পারেন না তারা। দৈনিক বর্তমান কথা নামের পত্রিকার ভুয়া সাংবাদিক আল আমিন নিজেকে অষ্টম শ্রেণি পাস বলে জানান।
পুলিশ জানায়, সর্বশেষ রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের একটি ইটভাটায় চাঁদা দাবি করেন আটককৃতরা। ইটভাটা কর্তৃপক্ষ নগদ দুই হাজার টাকা ও বিকাশে ১০ হাজার টাকা দেন তাদের। পরে সন্দেহ হলে তাদের আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে নিজেরা সাংবাদিক নয় বলে জানান।
মাইক্রোবাসচালক জানান, তাকে চট্টগ্রাম নগরী থেকে ভাড়া করে হাটহাজারী আসার পর গাড়ির সামনে ও পেছনে স্টিকার লাগানো হয়। আটক দুই নারী ভুয়া সাংবাদিক স্বীকার করেন, তাদেরকে কক্সবাজার নিয়ে যাওয়ার প্রভোলনে আনা হলেও রাউজানে নিয়ে আসা হয়।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, ‘তারা একাধিক ইটভাটা থেকে মোটা অংকের চাঁদাবাজি করেছে। আমরা দুটি ইটভাটা থেকে ২২ হাজার টাকা চাঁদাবাজির প্রমাণ পেয়েছি।’
রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, ‘চার কথিত সাংবাদিকসহ মোট পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। চাঁদাবাজির ঘটনায় ব্যবহৃত মাইক্রোটি (চট্ট মেট্রা-চ-১১-৪৪৩৫) জব্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন টিভি ও পত্রিকার পরিচয়পত্র ও ভিজিটিং কার্ড জব্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’ দৈনিক আমাদেরসময়