শঙ্কর মৈত্র: বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক তো বর্তমান নির্বাচন কমিশনের নিয়োগপ্রাপ্ত ইসির আইনজীবী ছিলেন। তাই নয় কি? তাকে বাদ দেয়া হলো কেন? ইসির বিরুদ্ধে তাঁর ক্ষেপার কারণ অন্য কিছু নয় তো? ড. শাহদীন মালিক, বদিউল আলম মজুমদার, অধ্যাপক আসিফ নজরুলসহ যারা ইসির বিরুদ্ধে এই সময়ে বিবৃতি দিয়ে জাতির বিবেক হতে চাচ্ছেন, তা নিয়ে আপত্তি নেই। ইসিতে দুর্নীতি হচ্ছে। নিয়োগবাণিজ্যসহ নির্বাচনে খরচ পাতিতে বেহিসেবী লুটপাট চলছে। এই ইসি যে ঠুটোঁ জগন্নাথ এটা বলাই যায়। তবে এই ৪২ নাগরিক হঠাৎ ইসি নিয়ে বিবৃতি দিয়ে বিবেক সাজতে চাইলেন কেন?
আমি মনে করি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশে ইসি কোনো ফ্যাক্টর না। ইসি, পিএসসি, দুদক, আইনকমিশন এগুলো হলো সরকারের খয়েরখাঁ অবসরি আমলাদের পুনর্বাসন কেন্দ্র। অবসরের পর তাদর পুনর্বাসন করা হয় এসব স্থানে। ফলে সরকারের কোনো নির্দেশনার বাইরে তারা যেতে পারেন না। ইসির ক্ষেত্রে এটা সব সময়ই দেখে আসছি। বিচারপতি সাদেক কমিশন, আজিজ কমিশন আর এখনকার নুরুল কমিশন সবই একই রঙ ঢঙের। সরকারের রঙ অনুযায়ী তাদের রঙ পরিবর্তন হয়। যেমন বিচারপতি সাহবুদ্দিন আহমেদ, বিচারপতি হাবিবুর রহমান কিংবা ফখরুদ্দিন আহমদের তত্ত্বাবধায়কর সরকারের সময়গুলোতে ইসির ভূমিকা দেখুন। তখন কিন্তু তারা মাজা শক্ত করে দাঁড়াতে পেরেছিলেন। কিন্তু দলীয় সরকারের আমলে তারা পারেন না। কেন পারেন না সেটাও আমরা জানি।
কাজেই শত নাগরিকের ভাবাদর্শে ৪২ নাগরিক যে বিবৃতি দিয়েছেন এটা আমার কাছে হাস্যকর মনে হয়েছে। কারণ বিবৃতিদাতাদের মূল উদ্যোক্তা নিজেই একজন ইসির সুবিধাভোগী আইনজীবী ছিলেন। কোনো কারণে তাকে ইসি বাদ দিয়ে দেয়। আর এই স্বার্থহানির ঝাল মেটাচ্ছেন ৪২ নাগরিকের নামে। আর আসিফ নজরুল, বদিউল আলম মজুমদারের কথা নতুন করে বলার কিছু নেই।
নানা সন্দেহ, হঠাৎ তারা ইসির বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের জন্য সরাসরি রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানিয়ে ফেললেন কেন? এই নাগরিকরা রাষ্ট্রীয় কিংবা সামাজিক অন্য কোনো ইস্যু নিয়ে বিবৃতি দেন না কেন? এই যে ধর্মীয় মৌলবাদিরা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার হুমকি দিচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে মীমাংসিত ইস্যুকে বিতর্কিত করছে, তা নিয়ে এই নাগরিকরা বিবৃতি দেন না কেন? ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :