শিরোনাম
◈ দেশের বাজারে সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ লাখ ৪১ হাজার ৬৪৮ টাকায় পাবেন! ◈ পূর্বাচল প্লট জালিয়াতি মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫ বছরের কারাদণ্ড ◈ পূর্বাচল প্লট দুর্নীতির তিন মামলায় শেখ হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড ◈ বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ, তবে তৃতীয় দেশে পাঠাতে চায় ভারত; যুক্তরাষ্ট্রে যেতে আগ্রহী শেখ হাসিনা ◈ জাতীয় নির্বাচনের আগে যে তিন চ্যালেঞ্জের মু‌খোমু‌খি বিএনপি ◈ বেহাল দশা লিভারপু‌লের, নি‌জের মাঠেই হে‌রে গে‌লো ডাচ ক্লাবের কাছে ◈ ব্রিটেনে ন্যূনতম মজুরি বাড়ল: আগামী এপ্রিল থেকে ঘণ্টায় বাড়বে সব বয়সের শ্রমিকদের আয় ◈ বায়ার্ন মিউনিখকে ৩-১ গো‌লে হারা‌লো আ‌র্সেনাল ◈ তারেক রহমান এখনও ভোটার নন, ডিসেম্বরে দেশে এসেই ভোটার হবেন: দলীয় সূত্র ◈ ফিফা নিষেধাজ্ঞা স্থগিত কর‌লো, বিশ্বকাপের শুরু থেকেই খেলতে পারবেন রোনালদো

প্রকাশিত : ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ০৭:১৬ সকাল
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ০৭:১৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ প্রকল্পের ৬১ শতাংশ কাজ শেষ

নিউজ ডেস্ক: পদ্মা সেতুর সর্বশেষ ৪১ তম স্প্যান লাগানোর পর দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছিল। ঠিক তেমনি স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৬১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ ২০২২ সালের মধ্যে শেষ হবে। এর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর মতো দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্বপ্নের প্রকল্প বঙ্গবন্ধু টানেলটি বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল প্রকল্পের দ্বিতীয় টিউব নির্মাণকাজ চলছে। এই দ্বিতীয় টিউবের নির্মাণকাজকে ঘিরেই প্রকল্পের প্রকৌশল-শ্রমিকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ ডিসেম্বর আনোয়ারা প্রান্তে শুরু হওয়া দ্বিতীয় টিউব নির্মাণ করতে টিবিএম দিয়ে মাটি খননের পাশাপাশি কংক্রিটের সেগমেন্ট দিয়ে রিং তৈরি করা হচ্ছে। চীনের জিয়াংসু প্রদেশের জেংজিয়ান শহরে টানেল সেগমেন্ট কাস্টিং প্ল্যান্টে তৈরি ১৯ হাজার ৬১৬টি সেগমেন্ট বসবে দুই টিউবে। এর মধ্যে ১৫ হাজার ৭৮৪টি সেগমেন্ট প্রকল্প এলাকায় এসেছে। বাকিগুলো অল্প দিনের মধ্যে আসবে বলে জানান প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। তবে ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু টানেলের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী (পিডি) হারুনুর রশিদ বলেন, টানেলের দুই টিউবের মধ্যে একটির কাজ শেষ। অন্যটি তৈরির কাজ চলছে। এর পাশাপাশি সংযোগ সড়কসহ টানেল সংশ্লিষ্ট অন্য কাজগুলো এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রকল্পের ৬১ ভাগ কাজ শেষ করেছি। প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত দেশি-বিদেশী প্রকৌশলী ও শ্রমিকরা দিন-রাত টানেলের নির্মাণ প্রকল্পে কাজ করছেন। এর মধ্যে ৬০০ বাংলাদেশি এবং ২৯০ জন চীনা নাগরিক। তবে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করে টানেল গাড়ি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু টানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশের শিল্পায়নের একটি বড় ধরনের করিডোর সৃষ্টি হবে। বঙ্গবন্ধু টানেল অত্যন্ত ভালো একটি প্রকল্প। এটি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সংযোগ ঘটাবে। চট্টগ্রাম চীনের সাংহাইয়ের মতো ওয়ান সিটি টু টাউন হতে প্রকল্পটি সহায়তা করবে। তিনি গণমাধ্যমে আরও বলেন, আনোয়ারায় অনেকগুলো শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।

এছাড়া মিরসরাই থেকে একদম সাগরের পাড় হয়ে টানেলের মধ্যে দিয়ে বাঁশখালী হয়ে মাতারবাড়ি-কক্সবাজারের সঙ্গে টানেলটি সংযোগ ঘটাবে। এটি অত্যন্ত দূরদর্শী একটি প্রকল্প। এর ফলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ঘটবে। টানেলের মাধ্যমে মিরসরাই হয়ে কুতুবদিয়া-কক্সবাজার পর্যন্ত শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠবে। এটি এ জন্য ভালো একটি প্রকল্প, কারণ কর্ণফুলী ও বন্দরকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না। এটি কর্ণফুলীর দুই দিককে সংযুক্ত করার ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখবে।

প্রকল্প ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারা প্রান্তে টানেলের মুখ থেকে মূল সড়কে উঠতে তৈরি করা হচ্ছে ৭২৭ মিটারের একটি উড়াল সেতু। ইতোমধ্যে এই উড়াল সেতুর সবগুলো পিলার স্থাপন শেষ হয়েছে। এখন গার্ডার এবং স্ল্যাব তৈরির কাজ শুরু হবে। বঙ্গবন্ধু টানেল তৈরির কর্মযজ্ঞ উড়াল সেতুর শেষ প্রান্তে থেকে আনোয়ারা চাতুরী চৌমুহনী পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ রোডের মাটি ভরাটের কাজ চলছে।

এই অ্যাপ্রোচ রোড দিয়েই শিকলবাহা জংশন হয়ে টানেলের গাড়ি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে উঠবে। অন্যদিকে পতেঙ্গা প্রান্তে সিটি আউটার রিং রোড, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং টানেলের প্রবেশমুখে আধা কিলোমিটারের সংযোগ সড়ক তৈরির কাজ চলছে। পাশাপাশি ওয়ার্কিং শাফট ও কাট অ্যান্ড কভার নির্মাণের কাজ চলছে এই জায়গায়।

চীনের সাংহাই শহরের আদলে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম শহরকে ‘ওয়ান সিটি, টু টাউন’ মডেলে গড়ে তুলতে নগরের পতেঙ্গা ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারার মধ্যে সংযোগ স্থাপনে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে টানেল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। দুই টিউবের এই টানেল নির্মাণকাজ শেষ হলে ৪ লেন দিয়ে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চলাচল করতে পারবে।

কর্ণফুলী নদীর পূর্বপ্রান্তের প্রস্তাবিত শিল্প এলাকার উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এবং পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত চট্টগ্রাম শহর, চট্টগ্রাম বন্দর ও বিমানবন্দরের সঙ্গে উন্নত ও সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হবে। এতে ভ্রমণ সময় ও খরচ হ্রাস পাবে এবং পূর্বপ্রান্তের শিল্পকারখানার কাঁচামাল, প্রস্তুতকৃত মালামাল চট্টগ্রাম বন্দর, বিমানবন্দর ও দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পরিবহন প্রক্রিয়া সহজ হবে। কর্ণফুলী নদীর পূর্ব প্রান্তের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের ফলে পূর্বপ্রান্তে পর্যটনশিল্প বিকশিত হবে। সূত্র: বিডি প্রতিদিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়