আরিফ রহমান: স্বাধীনতার পঞ্চাশতম বছর। গণহত্যার পঞ্চাশতম বছর। এক কোটি মানুষের ঘর ছাড়ার পঞ্চাশতম বছর। দায়িত্ব একাত্তর দেখেছে এই প্রজন্মের সময় শেষের দিকে। সেই প্রজন্মের চিন্তা আর প্রত্যক্ষদর্শনটা ডকুমেন্টেড রাখা দরকার। আপনার বাবা-মা, দাদা-দাদি, বয়স্ক নিকটাত্মীয়দের ইন্টারভিউ করুন। তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করুন, তারা কী দেখেছেন? কী শুনেছেন? কী করেছেন? স্বাধীনতার আগে কী দেখেছেন? মুক্তিযুদ্ধের সময় কী দেখেছেন? মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সদ্যস্বাধীন দেশে কী দেখেছেন?
একাত্তরে সাড়ে সাত কোটি মানুষের সাড়ে ছয় কোটি মানুষই ছিলো ভিকটিম। একেবারে কিছু না হলেও আতঙ্কিত হয়ে থাকতে তো হয়েছে। আতঙ্কে থাকাও একধরনের মানসিক যন্ত্রণা। সেটাও নথিবদ্ধ থাকা উচিত। মুক্তিযুদ্ধ ছিলো গণযুদ্ধ। এই যুদ্ধ করেছে গণমানুষ। এই যুদ্ধে শহীদ হয়েছে গণমানুষ। আহত হয়েছে গণমানুষ। ইজ্জত হারিয়েছে গণমানুষ। তাহলে এই যুদ্ধের ইতিহাসের বয়ান যেন কোনোমতেই একমুখী রাজধিরাজদের বয়ান না হয়ে থাকে। এই বয়ানে যেন গণমানুষ থাকে। এই গণমানুষ হচ্ছি আপনি আমি আর আপনার আমার পূর্বপুরুষ। আপনি আমিই নির্ধারণ করবো মুক্তিযুদ্ধের একশ বছরের মাথায় কি শুধু বড়কর্তারা কী করেছিলেন, সেটাই ইতিহাস হয়ে থাকবে নাকি আপনার আমার মা-খালারা,বাপ-চাচারা কি সাফারিংয়ের মধ্যেদিয়ে সময় অতিবাহিত করেছেন সেটাও ইতিহাসে লেখা থাকবে।
জনযুদ্ধের ইতিহাসকে জনতার কাছে ফিরিয়ে দিতে জনতাকেই এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখবেন, জহির রায়হান সেই একাত্তর সালেই বলে গেছেন সবাই একটি ফুলকে বাঁচাতে যুদ্ধে যায়নি। প্রত্যেকের গল্প আলাদা, প্রেক্ষাপট আলাদা, মুক্তির মানে আলাদা, স্বাধীনতার অর্থ আলাদা এবং প্রত্যেকের গল্পটা আমাদের শোনা উচিত। একমাত্রিক বয়ান থেকে আমাদের ইতিহাস মুক্ত হোক। জয় বাংলা। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :