অনির্বাণ আরিফ: বিজয় দিবসে আমাদের দেশপ্রেম উথলে ওঠেছে। দিকে দিকে আমরা মিছিল, শোভাযাত্রা, পতাকা মহড়া, বক্তৃতা দিয়ে সয়লাব করে ফেলেছি কিন্তু একটা কাজে সরকারি অফিসে যান, আদালতে যান, ব্যাংকে যান, শিক্ষা - প্রতিষ্ঠানে যান ঘুষ, উৎকোচ, সুপারিশ ছাড়া কাজ হবে না। আমরা নব্বই শতাংশ মুসলমানের দেশ। কথার আগে-পরে ধর্ম। হাঁটতে ধর্ম, খাইতে ধর্ম, ওঠতে ধর্ম, বসতে ধর্ম, শুইতে ধর্ম কিন্তু একটা প্রয়োজনে কোনো পরহেজগার ধার্মিকের কাছে যান আপনাকে সাহায্য তো দূরের বিষয় চেষ্টা করবে আপনার পকেটে যা আছে সেটা খালি করে দিতে। জাপান, কোরিয়া, থাইল্যান্ড, হংকং, তাইওয়ান এশিয়ার এই দেশগুলো দেখেন ওখানে এতো এতো দেশপ্রেমের চেতনা নেই, এতো এতো ধর্মের জোয়ার নেই। ওসব দেশে প্রতিটি মানুষ মানবসম্পদ। তারা ইস্পাতের মতো কাজ করে, উপার্জন করে, রাষ্ট্রের এবং নিজেদের উন্নতি করে চলছে। একটি জাতির জাতীয়তাবোধ থাকবে, ধর্মবোধ থাকবে কিন্তু সবকিছুর আগে থাকতে হবে সততা, শিক্ষা, ন্যায়পরায়ণতা এবং কাজ করার মানসিকতা। বেকারত্ব একটি জাতীকে শুধু পিছিয়ে দেয় না, বেকারত্ব একটি জাতির সবচেয়ে অগ্রসরমাণ অংশ তরুণদের মধ্যে হিংসা, বিভেদ, হতাশা, অপরাজনীতি, মৌলবাদী চিন্তা এবং অতি জাতীয়তাবোধ জন্ম দেয় যা একটি সম্প্রদায় এবং রাষ্ট্রের জন্য চরম ক্ষতিকর। দেশ স্বাধীন হওয়ার লড়াই হয়ে গেছে এখন দরকার বেকারত্ব দূর করার, অশিক্ষা দূর করার লড়াই।
ধর্ম এখানে নব্বই শতাংশ মানুষই পালন করে। ধর্ম নিয়ে ধরাধরি, কামড়াকামড়ির কিছু নেই। এখন দরকার ধর্মের চেতনা দিয়ে দুর্নীতি রোধ করা। কিন্তু আমরা আছি কে ওয়াহাবী, কে সুন্নী, কে সহিহ, কে বাতেনী এসব আজাইরা ক্যাচাল নিয়ে। দেশপ্রেম দেখা যায় সততায়, ধর্ম বোঝা যায় ভালো মানষিকতায়। সারাদিন দেশের জন্য মিছিল, মিটিং, পতাকা বাহার, শোভাযাত্রা করার মধ্যে দেশপ্রেম নেই। ঠিক একইভাবে সারাদিন ধর্মের নামে গলাবাজি, রাজনীতি, হুটহাট ফতোয়া এসবের মধ্যে ও কোনো ধর্ম নেই। সবার শুভবোধ জাগ্রত হোক। সবাইকে বিজয়ের শুভেচ্ছা। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :