শিরোনাম
◈ টাঙ্গাইলে বেকারির দোকানে বিএনপি নেতার স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা ◈ ভার‌তের অ‌ধিনায়ক সূর্যকুমারকে ‘শূকর’ ডেকে বিতর্কের মুখে পাকিস্তানি কিংবদন্তি ক্রিকেটার মোহম্মদ ইউসুফ ◈ তপশিলের আগেই ৭০% প্রার্থী ঘোষণার প্রস্তুতি বিএনপির, যাদের সুযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা ◈ ইটস ভেরি অর্গানাইজড পার্টি, এবার জামায়াতকে নিয়ে যে মন্তব্য করলেন রুমিন ফারহানা!(ভিডিও) ◈ বাংলাদেশের পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার টার্মিনালে ৪০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব ইতালীয় কোম্পানি এমএসসির ◈ অ‌ক্টোব‌রে বাংলাদেশ সফরে ৩‌টি ক‌রে ওয়ান‌ডে ও টি-‌টো‌য়ে‌ন্টি সি‌রিজ খেল‌বে ও‌য়েস্ট ই‌ন্ডিজ ◈ ভুয়া ফুটবল দল সাজিয়ে জাপান-যাত্রা, ধরা পড়ে ফেরত পাঠিয়েছে ২২ জনকে! ◈ উচ্চশিক্ষার আগ্রহী শিক্ষার্থীদের বিনা খরচে জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডি করার সুযোগ, সাথে আর্থিক সহায়তাও মিলবে ◈ সাতরাস্তায় শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ ◈ আঞ্চলিক হুমকি নিয়ে ভারতের সতর্কবার্তা: বাংলাদেশে মৌলবাদ, চীন সীমান্ত অচলাবস্থা ও পাকিস্তানের ভূমিকা

প্রকাশিত : ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ০৯:০৪ সকাল
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ০৯:০৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] আদমদীঘিতে ৬’শ হেক্টর জমিতে বেড়েছে আলু চাষ

আমিনুল জুয়েল: [২] দেশের শস্যভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত উত্তরাঞ্চলের জেলা বগুড়া। জেলার আদমদীঘি উপজেলার মাটি আলু চাষের উপযোগী হওয়ায় কৃষকরা তুলনামূলক এই আবাদে ঝুঁকছেন। চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় ২ হাজার ২’শ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছরে আলুর চাষের জন্য জমির লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১ হাজার ৬’শ হেক্টর। সেই হিসেবে এই উপজেলায় আলু চাষের জমির পরিমাণ গত বছরের তুলনায় এবছর প্রায় প্রায় ৬’শ হেক্টর বেড়েছে। এ মৌসুমে আলুর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। আর গত বছরে ফলন পাওয়া যায় ৩ হাজার ৬’শ মেট্রিক টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এই উপজেলায় আলুর বাম্পার ফলনসহ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা।

[৩] বাজারে সব ধরনের আলুর দাম (কেজি প্রতি ৪০ টাকা) চড়া হওয়ায় আগাম আমন ধান ঘরে তোলার পরই বেশির ভাগ জমিতে আলুর আবাদ শুরু করছেন তাঁরা। দাম ভালো পাওয়ায় এলাকার কৃষকরা এ বছর আলুসহ অন্যান্য সবজি চাষে ঝুঁকছেন। আদমদীঘি উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই অঞ্চলের প্রায় ২ হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। এই এলাকার কৃষকেরা সাধারণত-পাকড়ি, ফাঁটা পাকড়ি, লাল পাকড়ি, ভূটান, ডায়মন্ড, কার্ডিনাশ, দেশি হ্যাগরায়, ললিতা ও গ্যানোলা আলুর চাষ করেন।

[৪] আলুচাষীরা জানান, অগ্রহায়ণ মাস আলুর বীজ লাগানোর উত্তম সময়। তবে আগাম (আগুড়) আলু চাষ শুরু করতে হয় কার্ত্তিক মাসের শেষ ভাগে। আবার অনেক কৃষক দেরিতে (লোমলা) এই আবাদ করে থাকে। তবে আলু সংরক্ষণের জন্য আদমদীঘি উপজেলায় নেই কোনো কোল্ড স্টোর। এজন্য কৃষকদের পড়তে হয় বিপাকে। এই এলাকার আলুচাষীদের দাবী, শিগগিরই যেন আদমদীঘিতে আলু সংরক্ষণের জন্য কোল্ড স্টোর স্থাপন করা হয়।

[৫] উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আলু চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবার আলুর দাম (প্রতি কেজি ৪০-৫০ টাকা) ভালো পাওয়ায় তাঁরা খুশি। এজন্য এই মৌসুমে বেশির ভাগ কৃষকই পরিকল্পনার চেয়ে বেশি জমিতে আলু চাষ করেছেন।

[৬] উপজেলার কোমারভোগ গ্রামের কৃষক জুয়েল প্রাং জানান, আগাম আমন ধান কাটার পর সাধারণত এই (ভূটান) আলুর আবাদ শুরু হয়। এবার তিনি দুই বিঘা ভূটান আলুর চাষ করেছেন। এতে বিঘা প্রতি তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় ১৩ হাজার টাকা। ফলন ৬০-৭০ মন হয়ে থাকে। নিজের আলু ক্ষেতে বাবার কাজে সহযোগীতা করছে কলেজ ছাত্র রিফাত হোসেন। তিনি জানান, এই আলুর সবচেয়ে বড় সমস্যা বৃষ্টি ও শিশির। দুই-তিন দিন বৃষ্টি হলে বা সূর্যের আলো না পেলে পাতা পচতে থাকে। পাতা পচা রোগ (পচানি) জমিতে একবার দেখা দিলে সপ্তাহের মধ্যেই ওই জমির সব আলুর পাতাসহ গাছ পঁচে নষ্ট হয়ে যায়।

কোমারভোগ গ্রামের আরেক আলুচাষী আইয়ুব হোসেনের সাথে কথা হয় ফলন, সার ও কীটনাশক নিয়ে। তিনি জানান, সার, কীটনাশক ছাড়া ভাল আলু করা সম্ভব হয় না। কীটনাশকের জন্য আমাদের বিঘা প্রতি ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা বেশি গুণতে হয়। তিনি আরও জানান, বর্তমানে বাজারে আলুর দাম চড়া। তবে এই দাম আর বেশি দিন থাকবে না। কারণ, আগাম জাতের আলু বাজারে আসছে। নতুন আলু এখন ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বাজারে। আলুর এমন দাম পেয়ে খুশি তারা। তিনি আরও জানান, ভূটান আলুর দাম ৩০০-৩৫০ থাকলেও আমরা লাভবান হব। এতে কৃষকরা আলুর ভালো দাম পাবে।

চকসোনার গ্রামের সামাদ প্রামাণিক জানান, ৩৫ বছর থেকে তিনি আলু চাষের সাথে যুক্ত। এবছর দুই ছেলেসহ তিনি ৮ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন ভাল দাম পাওয়ার আশায়। তিনি ডায়মন্ড জাতের আলু চাষে প্রতি বিঘায় খরচ করেছেন ১৮- ২০ হাজার টাকা। ফলন আশা করছেন ৯০-১০০ মণ। আবহাওয়া ভাল থাকলে আলুর বাম্পার ফলন হবে। আর ফলন ভাল হলে আমরা ভাল দাম পাব।

আদমদীঘি উপজেলা সদরের কৃষক হোসেন আলী মণ্ডল জানান, ভালো দামের আশায় এক বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। ক্ষেতে এখন পরিচর্যা চলছে। এই আলু ৮০-৯০ দিনের মধ্যেই আরোহণ করতে হবে। আলু উঠানোর পর পাইকাররা জমি থেকেই সেগুলি নিয়ে যায়। বাজারে আলুর এই দাম থাকলে আশা করা হচ্ছে কৃষকরা লাভবান হবেন।

[৭] আদমদীঘি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিঠু চন্দ্র অধিকারী জানান, এই উপজেলাটি আলু চাষে বেশ সমৃদ্ধ। কিছু এলাকায় আগাম জাতের আলু আবাদ হয়েছে। তবে এই অঞ্চলে বেশিরভাগ জমিতেই আমন ধান কাটার পর আলুর আবাদ করে কৃষকরা। প্রথম থেকেই কৃষকদের আলুসহ অন্যান্য রবিশষ্য আবাদের যাবতীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কৃষকদের সুবিধার জন্য আমরা গ্রুপ ওয়ারি সরাসরি তাঁদের কাছে গিয়ে পরার্মশ দেয়া হয়। এবছর আবহাওয়া আলু চাষের অনুকূলেই রয়েছে। সেজন্য আমরা আলুর বাম্পার ফলনের পাশাপাশি আলুর ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। সম্পাদনা: হ্যাপি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়