সুজন কৈরী: [২] রোববার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ'র আদালতে মামলার ৪ মাস পর এই অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম। অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে পরিকল্পিত উল্লেখ করা হয়েছে। আর হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাস। মামলায় ১৫ আসামির মধ্যে ১৪ জনই কারাগারে আছেন, একজন পলাতক।
[৩] এর আগে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, আদালতের নির্দেশে সিনহা হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব। আমরা এই হত্যা মামলার চার্জশিট জমা দেওয়ার সকল প্রস্তুত সম্পন্ন করেছি।
[৪] র্যাব-১৫-এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, সিনহা হত্যা মামলাটি নানাভাবে তদন্তের পর পাওয়া তথ্যগুলো সাজিয়ে চার্জশিট হিসেবে জমা দেয়ার সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। প্রতিবেদনটি যে কোনো সময় আদালতে দাখিল করা হতে পারে। সূত্র জানায়, হত্যার ঘটনা তদন্তে র্যাব এখন পর্যন্ত ১৫ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে। যার মধ্যে ১৪ জন র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন।
[৫] মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার, বাহারছড়া ক্যাম্পের পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, টেকনাফ থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্য ছাড়াও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন-এপিবিএনের তিনজন এবং স্থানীয় তিনজনসহ মোট ১৪ জনকে অভিযুক্তের পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি এক জনের বিষয়ে জানা যায়নি।
[৬] গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা রাশেদ খান। এ ঘটনায় ৫ আগস্ট কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস। মামলাটির শুনানিতে সন্তুষ্ট হয়ে তা ‘ট্রিট ফর এফআইআর’ হিসেবে আমলে নিতে টেকনাফ থানাকে আদেশ দেন আদালত। আদালতের নির্দেশে টেকনাফ থানায় ওই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে মামলাটি রুজু হয়। দণ্ডবিধি ৩০২, ২০১ ও ৩৪ জামিন অযোগ্য ধারায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। মামলা নম্বর সিআর: ৯৪/২০২০ইং/টেকনাফ। মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে, যিনি সিনহাকে গুলি করেছিলেন। টেকনাফ থানার ওসি (বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার দাশকে করা হয়েছে ২ নম্বর আসামি।
[৭] এ ঘটনায় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তদন্তের স্বার্থে টেকনাফের বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ লিয়াকত আলিসহ ১৬ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়।