মির্জা ইয়াহিয়া: আমাদের ছোটবেলায় ত্বকের যত্নে এতো রকমের ক্রিম, লোশন ও জেলি ছিলো না। শীতের সময় মায়েরা শিশুদের রোদে নিয়ে গায়ে সর্ষের তেল মেখে দিতেন। একটু অবস্থাসম্পন্নরা বছরের অন্য সময় নবজাতকদের গায়ে দিতে কিনতেন অলিভ ওয়েল। শীতের সময় ত্বকের ফাটল থেকে রক্ষা পেতে বড়রা সর্ষে ও নারিকেল তেলই ব্যবহার করতো বেশি। কেউ কেউ গায়ে মাখার গ্লিসারিন দিতো। তখন ঠাণ্ডার কারণে অনেকের মুখে ঘা হতো। তার জন্য ফার্মেসিতে মিষ্টি স্বাদের খাওয়ার গ্লিসারিন বিক্রি হতো। এটা খেলে কয়েকদিনের মধ্যেই মুখ সেরে ওঠতো। শীতের ত্বকের ফাটল থেকে রক্ষায় প্রথম দেখি তিব্বত পমেড। সেটা আশির দশকে। তিব্বত পমেড কমলা রঙের ছিলো। ঘ্রাণ খুব ভালো লাগতো। মুখ-হাত-পায়ে মাখা হতো এটা। সম্ভবত এখনো বাজারে আছে তিব্বত পমেড। সেই সময়েই শীতে মুখের যত্নে ছিলো নিভিয়া কোল্ড ক্রিম। নীল রংয়ের গোল টিনের কৌটায় থাকতো এই ক্রিম। এটা এখনো বাজার টিকে রয়েছে। শীতে ত্বকের যত্নে জেলি, ক্রিম, লিপজেল, বাম- নানা ব্র্যান্ডের প্রসাধনী বাজারে হাজির হয় ৯০-এর দশকের শুরু থেকে। তখন ভ্যাসলিন বাজারে ছিলো। এটা কিন্তু সব শ্রেণির কাছে পৌঁছাতে পারেনি। প্রথমে এসে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে মেরিল ভ্যাসলিন। এটা মূলত পেট্রোলিয়াম জেলি।
অন্যদিকে ভ্যাসলিন হলো ব্র্যান্ড। এরজন্য মেরিল ভ্যাসলিন পরবর্তী সময়ে নাম পাল্টে হয় মেরিল পেট্রোলিয়াম জেলি। মেরিল ভ্যাসলিন জনপ্রিয়তা পায় মূলত রেডিও-টিভি-পত্রিকায় ব্যাপক বিজ্ঞাপন প্রচার করার কারণে। বিভিন্ন সাইজের করে দামও মোটামুটি হাতের নাগালে রাখে তারা। সেই সময় তাদের দেখাদেখি অন্যান্য প্রসাধনী কোম্পানি বাজারে নিয়ে আসে পেট্রোলিয়াম জেলি। এভাবে দেশে শীতের জন্য আসে আরো অনেক লিপজেল, লিপবামসহ নানারকম প্রসাধনী। এখন ঢাকা শহরের প্রাকৃতিক পরিবর্তন নয়, শীতের ক্রিম, পেট্রোলিয়াম জেলি, লিপজেলের টিভি বিজ্ঞাপন দেখেই বুঝা যায় যে, শীত ঋতু আসছে। সবাই ত্বকের যত্ন নিবেন, ভালো থাকবেন- এই কামনা করছি। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :