শিরোনাম
◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে

প্রকাশিত : ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ০৮:০৬ সকাল
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ০৮:০৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাফিউজ্জামান সিফাত: ভারতের কৃষক আন্দোলন এবং আমাদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের স্মৃতি

রাফিউজ্জামান সিফাত: আজ প্রায় বারো দিন ধরে ভারতে এক ঐতিহাসিক আন্দোলনে সূচনা হয়েছে। প্রায় ত্রিশ লাখ ভারতীয় কৃষক ক্ষেত ফসল ছেড়ে ট্র্যাক্টরে করে পরিবারসহ দিল্লি অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছে। ভারতের রাজধানী অভিমুখে কৃষকের এই যাত্রার নাম তারা দিয়েছে-দিল্লি চলো তারা দিল্লি আসছে। কারণ ভারতের সরকার কৃষকের জন্য একটা বিল পাস করেছে। বিলে কৃষকের উৎপন্ন খাদ্য সংগ্রহ ও বিক্রির ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে প্রাইভেট কোম্পানিগুলোর হাতে যা আগে সরকারের (অচগঈ) হাতে ছিলো। ভারতের কৃষকরা মনে করছে, এর ফলে কৃষকদের উৎপাদিত খাদ্যে প্রাইভেট কোম্পানির দৌরাত্ম্য বাড়বে এবং কোম্পানি অধিক লাভের কারণে কৃষক ফসলের ন্যায্যমূল্য পাবে না। ফলে স্বাভাবিক কারণেই ভারতের কৃষকরা বিলটা মানেনি। কৃষকদের দাবি বিল প্রত্যাহার করতে হবে। যতোদিন এই বিল প্রত্যাহার হবে না ততোদিন তারা দিল্লি দখল করে রাখবে। তারা মুখে মুখে হুমকি দেয়নি।

সত্যি সত্যি তারা আগামী ছয়মাসের খাবার দাবার, খেতা বালিশ, কম্বল ট্র্যাক্টরে বেধে দিল্লি চলে এসেছে। ভারত সরকার কৃষকদের স্রোত দিল্লি ঢুকতে দিচ্ছে না। কিন্তু এতে কৃষকদের চুলটাও তারা কেউ ছিঁড়তে পারেনি। ত্রিশ লাখ কৃষক দিল্লি বর্ডারের রাস্তায় তোষক মশারি খাটিয়ে শুয়ে পরেছে। এক পাশে তোষক চাদর মশারি অন্য পাশে জ্বলছে মাটির চুলা। চুলায় রান্না হচ্ছে, লঙ্গরখানা খুলা হয়েছে, গান বাজনা চলছে, ক্ষণে ক্ষণে মিছিল মিটিং হচ্ছে। মিছিল করে গলা শুকালে এসে গ্লাস গ্লাস গরম দুধ খাচ্ছে। গ্রাম থেকে প্রতিদিন গ্যালন গ্যালন গরুর খাঁটি দুধ এসে যাচ্ছে। কৃষকরা বলছে বিল প্রত্যাহার না করে তারা মাঠে ফিরবে না। যতোদিন থাকতে হয় থাকবে। দুধ দিয়ে তারা রাস্তায় শুয়ে বসে চা বিস্কুট খাচ্ছে আর মোদীকে বলছে কৃষকের সঙ্গে পাঙ্গা নিও না। ইন্টারনেট থেকে চালের ছবি নামান যায়, ধান ফলানো যায় না। বিল প্রত্যাহার করো। নাইলে যতোদিন লাগবে আমরা এখানেই বসে থাকব। কৃষকের খাবাররে অভাব হয় না। আমরা শস্য ফলাতে জানি। শহররের মানুষ তোমরা ভেব দেখ আমাদের ছাড়া তোমরা কি করবে। পাঞ্জাবের কৃষকরা আন্দোলন শুরু করলেও এহন তা ছরিয়ে গেছে সমগ্র ভারত জুড়ে। কৃষকদের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে ভারতের জনতা। গতকাল কৃষকদের আহবানে ভারত বন্ধ পালিত হয়েছে। রাস্তা ঘাট, অফিস আদালত সব বন্ধ হয়ে গিয়েছিল কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে। সরকার বাধ্য হয়ে কৃষকদের বারবার ডেকে নিয়ে যাচ্ছে। লাভ হচ্ছে না। বিল বাতিল না করে কৃষক ঘরে ফিরবে না। ভারতে কৃষকদের এমন আন্দোলন এর আগে হয়নি।

অবিস্মরণীয় এ আন্দোলন আমাকে মনে করিয়ে দিচ্ছে আমাদের দেশের অতি সম্প্রতি এক আন্দোলনের কথা। কিশোর যুবকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বছর দুয়েক আগের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনও ঠিক এমনি ঐতিহাসিক ছিল। শ^কুল কলেজের লাখ লাখ কিশোর-কিশোরী সেদিন পথে নেমেছিল নিরাপদ সড়কের দাবিতে। কয়েক দিনেই কিশোর-কিশোরীরাদেখিয়ে দিয়েছিলো চাইলেই সড়ক নিরাপদ করা যায়। তাদের আশ^াস দেওয়া হয়েছিলো, আশ^াস দেওয়া হয়েছিলো একটা নিরাপদ সড়কের। আশ^াস দেওয়া হয়েছিলো একটা স্বাভাবিক মৃত্যুর। তারপর? তারপরের উত্তর সকলের জানা। পরিবহন সন্ত্রাসীদের হাতে নাগরিক জিম্মি এখানের সেদিনকার কিশোর আন্দোলন ব্যর্থ হলেও ওখানের আজকের কৃষক আন্দোলন সফল হোক। কারণ পৃথিবীর সকল মজলুমের ঘামের সঙ্গে রক্ত মিশে থাকে। ফেসবুক থেকে

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়