শিরোনাম
◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

প্রকাশিত : ১২ ডিসেম্বর, ২০২০, ০৬:৪১ সকাল
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর, ২০২০, ০৬:৪১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মারুফ রসূল: বাংলাদেশের সক্ষমতার এক অনিন্দ্য স্মারক হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতু

মারুফ রসূল: আমার কাছে ৫০ বছরের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়ানো বাংলাদেশের সক্ষমতার এক অনিন্দ্য স্মারক হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতু। মুক্তিযুদ্ধের পর একটি সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রকে নিয়ে তৎকালীন দাতাগোষ্ঠী যে জঘন্য রাজনৈতিক খেলায় মেতেছিলো, বাংলাদেশ আজ তার একটি পাল্টা জবাব প্রতিষ্ঠা করলো। অর্থনীতিবিদ জাস্ট ফাল্যান্ড ও জে আর পারকিনসনের একটি বই আছে ইধহমষধফবংয: ঞযব ঞবংঃ ঈধংব ড়ভ উবাবষড়ঢ়সবহঃ নামে। ১৯৭৭ সালে লেখা এই বইটিতে ব্যাপক গবেষণার পর বাংলাদেশকে ব্যাঙ্গ করে তারা লিখেছিলেন, ‘বাংলাদেশ যদি অর্থনৈতিক উন্নয়নে সফল হতে পারে, তাহলে পৃথিবীর যে কোনো দেশই তা পারবে’ (পৃ. ১৯৭)। এমন তামাশা তখন অনেকেই করেছিলেন। কিসিঞ্জারের ‘তলাহীন ঝুড়ির’ কথা কে না জানে? ১৯৭৪ সালে সদ্য স্বাধীন হওয়া রাষ্ট্রের জনগণের জীবন নিয়ে আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠীগুলোর অপরাজনীতির নজির তাদের সে সময়ের প্রতিবেদনগুলোর পরতে পরতে সাজানো আছে। পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের ষড়যন্ত্রের সংবাদগুলো আমরা অনেকেই জানি; কীভাবে এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে আমাদের দেশীয় এজেন্ট ও কতিপয় গণমাধ্যম জড়িয়েছে— তাও কারও অজানা নয়।

১৯৭৪ সালে মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য অটো পাসম্যান ছিলেন বিদেশি সাহায্যের বিষয়ে নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তি। বাংলাদেশকে খাদ্য সাহায্য দেবার বিষয়ে তিনি তখন একটি শর্ত দিয়েছিলেন। প্রতিযোগিতামূলক বাছাই প্রক্রিয়া ছাড়াই তার সুপারিশ মতো শিপিং এজেন্ট নিযুক্ত করতে হবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাঙলাদেশে খাদ্য পরিবহনের জন্য। বিনিময়ে তিনি খাদ্য সাহায্যের বিষয়টি দেখবেন। কিন্তু বাঙলাদেশ দূতাবাস প্রচলিত বিধি অনুযায়ী সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক অথবা কম খরচের শিপারকে নিযুক্ত করতে চেয়েছিলো। এ কথা বাংলাদেশের পরিকল্পনা কমিশনের প্রথম ডেপুটি চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক নুরুল ইসলাম তাঁর স্মৃতিকথাতে লিখেছেন। বিশ্বব্যাংক বঙ্গবন্ধু সরকারের সময় গৃহীত বেশ কিছু পদক্ষেপের সমালোচনা করেছিলো। তাদের শর্ত ছিলো পদক্ষেপগুলো বাতিল করতে হবে। যেমন: আমলাতন্ত্রের ব্যয় সংকোচন করেছিলো বঙ্গবন্ধু সরকার, বিশ্বব্যাংক তা বৃদ্ধির শর্ত দিলো; রেশন পদ্ধতিতে বণ্টনকৃত খাদ্যশস্যের দাম বৃদ্ধি ও সারে ভর্তুকি হ্রাসের জন্য বিশ্বব্যাংক চাপ দিতে লাগলো। বঙ্গবন্ধু সরকার এসব শর্ত মেনে নেয়নি, তবে পঁচাত্তর পরবর্তী সব সরকারই বিশ্বব্যাংকের এই শর্তগুলো একে একে মেনে নিয়েছে। এভাবেই বিদেশি দাতাগোষ্ঠী আর রাষ্ট্রগুলো তখন বাঙলাদেশের নবগঠিত অর্থনীতি নিয়ে একের পর এক ষড়যন্ত্র চালিয়েছে।
বাংলাদেশের তৎকালীন কিছু গণমাধ্যমও তার সঙ্গে জুড়েছিলো। ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের লোকসভার শীতকালীন অধিবেশনের প্রসেডিংসে কমরেড ভূপেশ গুপ্তের আলোচনাটি পড়লে ৫ জন সাংবাদিক কাম সিআইএ’র এজেন্টের নাম পাওয়া যায়। নামগুলো না হয় আরেকদিনের জন্য তোলা থাকলো।

তো বিশ্ব ব্যাংকের রাজনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সম্পূর্ণ পদ্মাসেতু আজ দৃশ্যমান হয়েছে। যে গণমাধ্যমগুলো এই তিন-সাড়ে তিন বছর আগেও ‘গেলো গেলো’ রব তুলেছিলো, তারাই এখন ‘হলো হলো’ রব দিচ্ছেন। গত ৫০ বছর ধরে এদেশের কাঠমোল্লারা ফতোয়া দিয়েছে ‘নারী নেতৃত্ব হারাম’; আজ নারী নেতৃত্বেই পদ্মাসেতু দৃশ্যমান হয়েছে, অন্য এক উচ্চতায় উঠে এসেছে বাঙলাদেশ। ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। ৫০ বছর আগে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবায়া রাখতে পারবা না’। ৫০ বছরের বাঙলাদেশে আজ আমাদের অনুভব— আমরা যখন বাঁচতে শিখেছি, তখন শত ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করেই আমরা বেঁচে থাকবো। জয় বাংলা। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়