তাপসী রাবেয়া:[২]খরস্রোতা পদ্মায় দৃশ্যমান সেতু আর এই স্থাপনা নির্মাণের পেছনেও রয়েছে বিশাল এক কর্মযজ্ঞের গল্প। জার্মানি থেকে হ্যামার, লুক্সেমবার্গ থেকে রেলের স্ট্রিংগার, চীন থেকে ট্রাস, অস্ট্রেলিয়া থেকে পরামর্শক; এমনভাবে বহুদেশ থেকে প্রকৌশলী ও প্রকৌশল যন্ত্রপাতি এসেছে পদ্মায়। ২০ হাজার শ্রমিক-প্রকৌশলীর টুকরো টুকরো মেধা ও শ্রমে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশের স্বপ্নের পদ্মাসেতু। বাংলাদেশ এবং চীনের ৭০০ মেধাবী প্রকৌশলী সরাসরি জড়িত ছিলেন এই নির্মাণ কাজে। দিনে পদ্মার দুই পাড়ে কাজ করেছেন ১২ থেকে ১৩ হাজার শ্রমিক।
[৩] সেতু প্রকল্পের একজন বিশেষজ্ঞ জানান, পদ্মাসেতুতে বিদেশিদের সাথে বাংলাদেশি প্রকৌশলী ও ঠিকাদাররাও কাজ করেছেন। সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে বাংলাদেশি ঠিকাদাররা করেছেন। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানেও বেশিরভাগ বাংলাদেশি প্রকৌশলী কাজ করেছেন।
[৪]তিনি আরও জানান, পদ্মাসেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং। তাদের প্রধান কার্যালয় চীনের উহানে। সেখানকার এক হাজারের বেশি লোক পদ্মাসেতুর কাজে নিয়োজিত। সেখানের একটি কারখানায় স্প্যানের ছোট ছোট টুকরোগুলো প্রস্তুুত হয়ে জাহাজে বাংলাদেশে এসেছে। এছাড়াও নদী শাসন কাজ করেছে চীনের আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন।
[৫] সেতুর পাইল ড্রাইভের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে বিশ্বের সর্বোচ্চ শক্তিশালী হ্যামার। এতো শক্তিশালী হ্যামার শুধু জার্মানিরই আছে। এসব ড্রাইভিং হ্যামার বা কন্ট্রোল ইউনিট তারা বিক্রি করে না। এমনকি, এগুলো কেউ কিনে এনে পরিচালনা করার সাহসও পায় না। পাইলগুলো ড্রাইভ করার জন্য ১৪ জার্মান নাগরিক প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে প্রকল্প এলাকায় ছিলেন। হ্যামারগুলো তৈরি হয় জার্মানির বিখ্যাত শহর মিউনিখে। জার্মান ব্র্যান্ড এ হ্যামারগুলোর নাম মেংক। ২৯৮ টি পাইল ড্রাইভ করার জন্য তিনটি হ্যামার আনা হয় জার্মানি থেকে। যাদের ক্ষমতা ছিল যথাক্রমে ১৯০০, ২৪০০ ও ৩৫০০ কিলোজুল। তিনটি হ্যামারের মধ্যে দুটি হ্যামারই মূল সেতুর কাজ শেষ হওয়ার পর জার্মানি ফিরে গেছে। ২৪০০ কিলোজুল হ্যামারটি বিদ্যুৎলাইন পাইল ড্রাইভিং এর কাজে রয়ে গেছে।সারাবাংলা, বনিকবার্তা।