শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১১ ডিসেম্বর, ২০২০, ০৭:৫৮ সকাল
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর, ২০২০, ০৭:৫৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রভাষ আমিন: পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সক্ষমতা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক

প্রভাষ আমিন: পদ্মা সেতু পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সেতু নয়, তবে অবশ্যই সবচেয়ে আলোচিত সেতু। পদ্মা সেতুই একমাত্র সেতু যার প্রতিটি স্প্যান বসানো খবর হয়েছে। পদ্মার বুকে ৪২টি খুঁটির ওপর ৪১টি স্প্যানে সংযুক্ত পদ্মার দুই পাড়, আসলে আমাদের স্বপ্ন। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটির ওপর বসানো হয় প্রথম স্প্যানটি। আজ ১০ ডিসেম্বর ১২ ও ১৩ নম্বর খুঁটির ওপর ৪১ নম্বর স্প্যানটি বসানোর পর মন ভরে তাকিয়ে দেখুন, একাকার হয়ে গেছে এপার ওপার।
বিশ্বব্যাংক তো ছিলই, ছিল নানামুখী ষড়যন্ত্র, গুজব। তারচেয়ে বড় কথা হলো বিশ্বের আর কোথাও পদ্মার মতো খরস্রোতা নদীর ওপর সেতু নেই। সেই অসম্ভব আজ সম্ভব হয়েছে। স্বপ্ন দেখতেও আসলে সাহস লাগে। শেখ হাসিনার সেই সাহস আছে, তিনি সেই সাহসীযাত্রায় সঙ্গী করেছেন গোটা জাতিকেই। ৬.১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো। এই সেতু হলে কাজের সুযোগ হবে ২ কোটি মানুষের। বিশ্বব্যাংকের সমীক্ষা বলছে, সেতুর কারণে সরাসরি উপকৃত হবে তিন কোটি মানুষ। আর এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এডিবি বলছে, দেশের অর্থনীতির আকার বা জিডিপি বাড়বে ১ দশমিক ২ শতাংশ। প্রতি বছর দারিদ্র‌্য কমবে ১.৯ শতাংশ হারে। সেতু শুধু পদ্মার দুই পারকে সংযুক্তই করবে না, বদলেও দেবে। দুই পারে সিঙ্গাপুর আর চীনের সাংহাই নগরের আদলে আধুনিক শহর গড়ে তোলার পরিকল্পনা আছে। গড়ে উঠবে আধুনিক মানের হোটেল রিসোর্ট, যা পর্যটনেও যোগ করবে নতুন মাত্রা। তাছাড়া এই সেতু দিয়েই বাংলাদেশ যুক্ত হতে পারবে এশিয়ান হাইওয়েতে। পদ্মা সেতু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলাকে রাজধানীর সঙ্গে যুক্ত করবে। অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চল একলাফে এগিয়ে যাবে অনেকদূর। স্থাপিত হবে শিল্প, সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান। আর শুধু অবহেলিত ২১ জেলা নয়, পদ্মা সেতু আসলে বদলে দেবে বাংলাদেশকেই।
তবে এতসব পরিসংখ্যান নয়, আমার কাছে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব অন্য জায়গায়। বিশ্বব্যাংকের টাকায় হলে হয়তো এসব তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আমি মাথা ঘামাতাম। কিন্তু পদ্মা সেতু আমার কাছে নিছক একটি সেতু নয়। পদ্মা সেতু আমাদের সক্ষমতার প্রতীক, স্বাবলম্বিতার প্রতীক। অনেক সময় টাকা থাকলেও অনেক কিছু করা যায় না, মানসিকতা আটকে রাখে। পদ্মা সেতু আমাদের সেই পরাধীনতার, ভৃত্য মানসিকতার অর্গল থেকে মুক্তি দেবে। বিশ্বের সবাই দেখেছে, বিশ্বব্যাংককে মুখের ওপর না করে দিয়ে পদ্মা সেতুর মতো প্রকল্প আমরা বাস্তবায়ন করতে পারছি। বাংলাদেশে মানে এখন ঝড়-ঝঞ্জা-জলোচ্ছ্বাস-দারিদ্র্য-মঙ্গা নয়। বাংলাদেশ এখন সম্ভাবনার নাম। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ইতিহাসে পদ্মা সেতুর আগে এবং পরে- এইভাবে ভাগ হবে। পদ্মা সেতুর পরের বাংলাদেশ সম্ভাবনার, সক্ষমতার দাপুটে বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশকে ভেবেই কবি লিখেছিলেন, জ্বলে পুড়ে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়।
অনেকদিন ধরেই বাংলাদেশ দ্বিদলীয় রাজনৈতিক ধারায় বিভক্ত। সবকিছুতে আমরা আওয়ামী লীগ-বিএনপি খুঁজি। কিন্তু পদ্মা সেতুকে আমি রাজনীতির বাইরেই রাখতে চাই। দয়া করে কেউ পদ্মা সেতুর সঙ্গে গণতন্ত্রহীনতা, মতপ্রকাশে বাধা, বিরোধী দলকে দমন ইত্যাদিকে মেলাবেন না। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সক্ষমতা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক হয়ে টিকে থাকবে যুগ যুগ ধরে। ফেসবুক থেকে
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়