শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ০৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:১৪ দুপুর
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:১৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কোভিডে দ্বিতীয়বার পাচারে শ্রমিকদের বেঁচে থাকা দায় হয়ে পড়ছে

রাশিদ রিয়াজ : রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে বাংলাদেশি শ্রমিকদের বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে। এমনকি তারা দ্বিতীয়বার পাচারের ঝুঁকিতে রয়েছেন। বাংলাদেশি অভিবাসী পারভেজ মোর্শেদ সৌদি আরবে র্জির কাজ নিয়ে যাওয়ার পর কাজ করতে হয় নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে। তাও প্রতিশ্রুত বেতনের অর্ধেক বেতনে। এমন অবস্থায় পারভেজ মোর্শেদ তার পরিবার চালাতে সক্ষম হচ্ছিলেন না। রিক্রুটার তার সঙ্গে প্রতারণা করার ফলেই এমনটি হয়েছে। যে পরিমাণ ঋণ করে পারভেজ সৌদি আরবে যান তা শোধ করতে না পেরে কোভিড মহামারির মধ্যেই তিনি দেশে ফিরে আসেন। কাজ শুরু করেন একটি গার্মেন্ট কারখানায়। পাচারের শিকার ব্যক্তিদের দিয়ে ওই কারখানায় কাজ করানো হয়। মোর্শেদ বলেছেন, সৌদি আরবের কাজটি আমার পরিবার চালানোর জন্য ভালই ছিল বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু তা আমাদেরকে আগের চেয়ে আরো বেশি সমস্যায় ফেলে দেয়। ৩০ বছর বয়সী মোর্শেদ বলেন, কোভিড পরিস্থিতিতে কাজ পাওয়া খুব কঠিন। তাই আমি এখানে কাজ খুঁজে পাওয়াতে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। পরিবারকে ভয়াবহ সঙ্কট থেকে রক্ষা করতে পেরেছি।

এমন ঘটনার শিকার যারা তাদের মধ্যে অল্প কিছু মানুষ এমন সৌভাগ্যের অধিকারী। তার মধ্যে মোর্শেদ অন্যতম। ভুয়া কাজের প্রলোভনে যেসব বাংলাদেশি শ্রমিককে পাচার করা হয়েছিল, যারা ঋণের ভারে জর্জরিত এবং যারা নাজুক পরিবেশে কাজ করেন তাদের সহযোগিতা করে দাতব্য কিছু সংস্থা। তারা বলছে, কোভিড ভাইরাস সংক্রমণ দেশের ভিতরেই শ্রমিকদের আয়ের সুযোগকে নষ্ট করে ফেলছে। এর ফলে এসব শ্রমিক আবারো একই রকম ফাঁদে পড়ার বড় রকম ঝুঁকিতে রয়েছেন। মহামারি শুরুর পর পরই বড় বড় ব্রান্ডগুলো তাদের অর্ডার বাতিল করায় কাজ হারিয়েছেন বাংলাদেশি গার্মেন্টের কমপক্ষে ৭০ হাজার শ্রমিক। বেঁচে থাকার মতো বেতন এবং ঋণমুক্ত হয়ে মোর্শেদের মতো একটি কাজ পাওয়া এখন চাট্টিখানি কথা নয়। এমন সুযোগ পাচ্ছেন হাতেগোনা দু’চারজন। দাসত্বের শিকার হয়ে ফেরা মানুষদের বেঁচে থাকার পথে আনার জন্য কাজ করে যেসব সংগঠন তারা বলছে, কোভিড-১৯ এর কারণে বেশির ভাগ শ্রমিকই আয়ের পথ হারিয়েছেন। এতে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, এর ফলে তারা নতুন করে পাচারের শিকারে পরিণত হতে পারেন।

গবেষণাভিত্তিক গ্রুপ আইএনসিআইডিআইএন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক মাসুদ আলী বলেছেন, এসব শ্রমিকের মধ্যে যারা টিকে আছেন তারা ব্যতিক্রমী ‘পুশ ফ্যাক্টরসে’র মুখোমুখি। এতে পাচারকারীদের শিকার ধরা সহজ হয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, যখন একজন ভিকটিম দেশে ফেরেন এবং পরিবারের সঙ্গে বসবাস শুরু করেন, তখন কিন্তু কাজ না থাকার কারণে তিনি পরিবারে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেন না। ফলে তিনি আবার পরিবারের বোঝা হয়ে ওঠেন। তিনি আবার কলঙ্ক মোচনের পথ খুঁজেতে থাকেন। এই ফ্যাক্টরগুলো তাকে আবার একই পথে পা বাড়াতে বাধ্য করে।

উইনরক ইন্টারন্যাশনালের মতে, দেশের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত রংপুর শহরে তারা দেখাশোনা করেন এমন ৭৭ জন শ্রমিককে। এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত এর মধ্যে ৭২ জনের আয় কমে গেছে। ১৪ জন চাকরি হারিয়েছেন। আরেকটি দাতব্য সংস্থা জাস্টিস এন্ড কেয়ার বলেছে, পাচারের শিকার প্রায় ৪০০ শ্রমিকের পরিবারের আত্মীয়স্বজনদের মহামারি থেকে বেঁচে থাকতে জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন। তা নাহলে তারাও পাচারের শিকারে পরিণত হতে পারেন। এ ছাড়া এসব শ্রমিক লকডাউনের সময় বেঁচে থাকার জন্য যে ঋণ নিয়েছিলেন, তা শোধ করার জন্য বাড়তি একটি চাপ আসছে। এটাও একটা ফ্যাক্টর। এতে তাদের পাচারের শিকারে পরিণত হওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়