রাশিদ রিয়াজ : পাঁচ মাস আগে ভারতে উইপ্রোর চিফ এক্সিকিউটিভ হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থিয়েরি ডেলাপোর্টে এখন পর্যন্ত একবারও বেঙ্গালুরুতে কোম্পানিটির সদর দফতরে আসেননি। ৫৩ বছর বয়সী ডেলাপোর্টে প্যারিস থেকেই বেশ দাপটের সঙ্গে চালাচ্ছেন কোম্পানি। বাড়ি থেকেই বারবার ভার্চুয়াল ট্যুর করেছেন সারাবিশ্বে। কোম্পানির ম্যানেজার, অন্যান্য কর্মী ও ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন নিয়মিত। কোভিড মহামারীর মধ্যে বিদেশ সফরে নানা বিধিনিষেধ জারি থাকায় ভার্চুুয়াল মিটিং করেই নানা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন ডেলাপোর্টে। কোম্পানির শীর্ষস্থানীয় ম্যানেজারের সংখ্যা ২৫ থেকে নামিয়ে আনা হয়েছে চারজনে। অন্যান্য কোম্পানির সম্পত্তি কেনার ওপরে জোর দিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন গ্রাহকদের। গত পাঁচ মাসে গ্রাহকদের সঙ্গে ১৩০টি ভিডিও কনফারেন্স করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন গ্রাহকের সঙ্গে কয়েক বছরের চুক্তি করেছেন। ইকোনোমিক টাইমস/বিজনেস টুডে/মিন্ট
ডেলাপোর্টে সিইও হওয়ার পর উইপ্রোর শেয়ারের দাম শুধু যে ৭০ শতাংশ বেড়েছে তা নয়, কোভিড পরিস্থিতিতে ভারতের আউটসোর্সিং ফার্মগুলোর মধ্যে উইপ্রোর শেয়ারের দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ। ডেলাপোর্টের ইচ্ছা কোম্পানির এই সাফল্য আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, আমাদের ইন্ডাস্ট্রি এখন চাঙ্গা হয়ে উঠছে। আমি চাই, উইপ্রো তার নিজের জায়গাটা ফিরে পাক। নিজের কাজটা আমি ভালই পারি। ভারতে উইপ্রোর সবচেয়ে বড় অংশীদার কোটিপতি ব্যবসায়ী আজিম প্রেমজি। কয়েক বছর ধরে প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোর তুলনায় পিছিয়ে পড়ছে উইপ্রো। তবে গত আর্থিক বছরে কোম্পানির রাজস্ব বেড়েছে ৩.৯ শতাংশ। একই সময় ইনফোসিসের রাজস্ব বেড়েছে ৯.৮ শতাংশ, টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসের রাজস্ব বেড়েছে ৭.১ শতাংশ। দু’বছর আগে ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানির স্থান থেকে উইপ্রোকে সরিয়ে দেয় এইচসিএল টেকনোলজিস। গত আর্থিক বছরে তার রাজস্ব বেড়েছে ১৭ শতাংশ।
ডেলাপোর্টের আগে উইপ্রোর সিইও ছিলেন আবিদালি নিমুচওয়ালা। তিনি ২০১৬ সালে ওই দায়িত্ব নেওয়ার পরে বলেছিলেন, উইপ্রোকে ১৫০০ কোটি ডলারের কোম্পানি করে তুলবেন। কিন্তু চার বছরে সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেননি। ফরেস্টার রিসার্চ ইনকর্পোরেটেডের সিনিয়ার অ্যানালিস্ট বসুপ্রদা শ্রীনিবাসন বলেন, ডেলাপোর্টে বিচক্ষণ ব্যক্তি, যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে কাজ করেন কিন্তু লক্ষ্যপূরণ করা তার পক্ষেও শক্ত হবে। ডেলাপোর্টে লং ডিসট্যান্স রানিং ভালবাসেন। তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন, উইপ্রোকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া সহজ হবে না। তার মতে, গ্রাহকদের সন্তুষ্ট করতে পারলেই কাজ হবে। তার নির্দেশনা হচ্ছে, প্রথম বছরে কোম্পানির বিকাশের হার বৃদ্ধি করতে হবে। দ্বিতীয় বছরে বিকাশের হার প্রতিযোগীদের স্তরে পৌঁছে যাবে। তৃতীয় বছরে আমরা প্রতিযোগিদের ছাড়িয়ে যাব।
আপনার মতামত লিখুন :