শিরোনাম
◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী  ◈ সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম নালিশের রাজনীতি করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের ◈ বুশরা বিবিকে ‘টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো খাবার খাওয়ানোর অভিযোগ ইমরানের ◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের

প্রকাশিত : ০৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ০৭:২৯ সকাল
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ০৭:২৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অমি রহমান পিয়াল: কওমি শিশুরা যাতে যৌনতার উপকরণ না হয়, সেটা নিশ্চিত করা জরুরি

অমি রহমান পিয়াল: কখনো খেয়াল করছেন কিনা জানি না, প্রতিমাসে আপনার দরজায় কড়া নাড়ে একজন মাদ্রাসা ছাত্র। তাদের বয়স গড়ে ৮ থেকে ১২ বছর। ধুলামলিন বেশ, অনাহারি চেহারা নিয়ে বাড়িয়ে দেয় একটা হলুদ রঙা রশিদ। সাহায্যের আবেদন। জিজ্ঞাস করলে জানবেন তার মতো আরো শখানেক শিশু কিশোর সকাল ৮টায় বের হয়ে ছড়িয়ে পরে শহরজুড়ে। সকালে একলোকমা ডালভাত মুখে দিয়ে বের হয়, বিকালে মাদ্রাসায় ফিরে। সারাদিনে ভাগ্য খুব ভালো হলে তারা ২০-৩০ টাকা পায়। ভিখেরিদের বরাদ্দ ২ টাকাই গৃহিনীরা দেন। ইদানিং এপার্টমেন্টগুলা ভিখিরিপ্রুফ। তাই শিশুগুলোর কষ্ট হয় কালেকশনে। তারপরও তারা পায়ে হেঁটে আধপেটা শরীরে হাত পেতে যায় দুয়ারে দুয়ারে। এই টাকা আনার উপর নির্ভর করছে তার পরের বেলার মেন্যু, হুজুরের বেত। ১৮৩৮ সালে চার্লস ডিকেন্সের লেখা অলিভার টুইস্টের এই বাংলাদেশি রূপ মঞ্চায়িত হয় প্রতিদিন, উদয়াস্ত, ঢাকার প্রতিটি অলিতে গলিতে।

২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের মহাসমাবেশের শতকরা ৫০ ভাগই ছিলো মাদ্রাসার শিশু-কিশোর, যাদের গড় বয়স ১২। বড় হুজুরের নির্দেশ তাই তারা এসেছে। এই শিশুরা ভালো করে ইসলামই বোঝে না, নাস্তিক চিনে না, ব্লগার তো দূরের কথা। ৫ টাকার মুড়ি ভাগ করে খেতে দেখেছি চার কিশোরকে। হুজুর বলেছেন গেলে সোয়াব হবে, নাস্তিকদের বিরুদ্ধে জিহাদের সওয়াব। সে ঠিক মতো খেয়েছে কিনা, তার কচি শরীরে হুজুরের ঈমানী জোশ ধারণ করার সামর্থ্য আছে কিনা কে দেখে!

যেই শিশুটি দিনভর হুজুরের জন্য টাকা কালেক্ট করে, হুজুরের নির্দেশ মানতে অবোধ্য যুদ্ধে নামে, সেই শিশুটিই রাতে আবার যৌন নির্যাতিত হয়। গেলমান বিষয়ক আয়াতের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সোয়াবের প্রলোভনে তাকে বলাৎকার করা হয়, তাদের কেউ হুজুরের কথা মেনে নেয়। কেউ বা ফুপিয়ে কাঁদে! তার বাবা-মা জানে না তার সঙ্গে কী হচ্ছে কিংবা সে হয়তো এতিম, তার যাওয়ার জায়গা নেই। সে ইসলামের খেদমতে এসেছে, ইসলামের দীক্ষায় দিক্ষিত হতে এসেছে। এসে দেখে ইসলাম এখানে বড় হুজুর যা বলে তাই। খাওয়ার জন্য ভিক্ষা করো, ভুখাপেটে ইসলামরক্ষার মিথ্যে মিছিল করো, রাতে পায়ুসুখ দাও।

মাসদুয়েক আগে দেশজুড়ে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন যখন সোচ্চার। তখন কেউ কেউ মাদ্রাসার এই নির্যাতিত শিশুদের কথাও আলোচনায় এনেছিলেন। সুবাদেই গণমাধ্যমে প্রকাশ পেতে লাগলো একের পর এক নির্যাতনের আখ্যান। তখনই হেফাজতে পায়ুপথ নেতারা হেফাজতে ইসলামী হয়ে ভাস্কর্যবিরোধী গরম গরম বক্তৃতা দেয়া শুরু করে দিলো। সমকামিতার অপরাধ ঢাকতে, সমকামী চর্চার হেফাজত করতে নতুন জিহাদের ডাক দিলো ভাস্কর্যবিরোধিতার আদলে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি কওমি জননী উপাধী পেয়েছেন। সেই হিসাবে এই কওমি শিশুদের দেখভালের দায়িত্ব আপনার। এদের যেন ভিক্ষাবৃত্তিতে পাঠানো না হয়, তাদের মিছিলে সমাবেশে পাঠানো না হয়, সর্বোপরি তারা যাতে বিকৃত মানসিকতার হুজুরদের যৌনতার উপকরণ না হয় সেটা নিশ্চিত করা জরুরি। নিশ্চিত করুন। পাপ বৃক্ষে পূণ্য ফলে না, সে কারণেই তা উপড়ে ফেলা জরুরি। সাংবিধানিকভাবে একমাত্র আপনারই সে ক্ষমতা আছে...। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়