সুজন কৈরী: [২] বান্দারবানে পাহাড়ি সাইরু রিসোর্টে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর। পাহাড়ি এই রিসোর্টটি বান্দরবান শহর থেকে প্রায় ২৮ কিলোমিটার দূরে চিম্বুক রোডে অবস্থিত। এর মূসক নিবন্ধন নম্বর ০০১৫৭৭০৯৪-০৫০১।
[৩] সোমবার ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মহিউদ্দীনের নেতৃত্বে সংস্থার একটি বিশেষ দল সাইরু রিসোর্টে অভিযান চালায়। পাশাপাশি সংস্থার উপপরিচালক তানভীর আহমেদের নেতৃত্বে ভ্যাট গোয়েন্দার অপর দল রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউর সফুরা টাওয়ারের ১৪ তলায় সাইরু রিসোর্টের হেড অফিসেও অভিযান চালায়।
[৪] ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর বলছে, প্রাথমিকভাবে দুটি অভিযানে ব্যাপক ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া গেছে। আভিযানিক দলটি ২০১৮ সাল থেকে রিসোর্টের প্রকৃত বিক্রয় তথ্য উদ্ধার এবং কম্পিউটার থেকে তথ্যাদি জব্দ করেছে। এতে দেখা যায়, স্থানীয় বান্দরবান ভ্যাট সার্কেলে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ প্রকৃত বিক্রয় গোপন করেছে। যেমন সদ্যসমাপ্ত অক্টোবর ২০২০ কর মেয়াদের রিটার্নে (নভেম্বর ১৫ তারিখে দাখিলকৃত) তাদের হোটেলে সেবা বিক্রয় প্রদর্শন করেছে ১১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। যার উপর ১৫ শতাংশ হিসেবে আদর্শ হারে পরিশোধিত মূসক ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং আদর্শ হার ছাড়া বিক্রয় ৪ লাখ টাকা। যার উপর ৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারে পরিশোধিত মূসক ৩০ হাজার টাকা।
[৫] ভ্যাট গোয়েন্দ বলছে, উদ্ধার করা বিক্রয় তথ্য অনুযায়ী, ভ্যাট গোয়েন্দার দল দেখতে পায়, অক্টোবর মাসে বিক্রয় হয় ১ কোটি ২৯ লাখ টাকা। যার উপর ১৫ শতাংশ হারে প্রদেয় মূসক ১৯ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। অর্থাৎ মূসকসহ মোট বিক্রয় ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এই হিসাব অনুযায়ী কেবল অক্টোবর মাসে ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে প্রায় ১৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। ভ্যাট গোয়েন্দারা অন্যান্য মাসেও অনুরূপ ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করেছে। উদ্ধারকৃত তথ্যমতে, সাইরু রিসোর্ট গড়ে প্রতিমাসে ভ্যাট দিয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা। কিন্তু প্রকৃত বিক্রয় অনুযয়ী ভ্যাট প্রযোজ্য হয় মাসে প্রায় ১৫ লাখ টাকা।
[৬] ভ্যাট গোয়েন্দার দলের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে, সাইরু কর্তৃপক্ষ ক্রেতাদের কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করলেও তা যথাযথভাবে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়নি। ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে। জব্দকৃত কাগজপত্র যাচাই ও আরও তদন্ত শেষে সাইরু রিসোর্টের বিরুদ্ধ ভ্যাট আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
আপনার মতামত লিখুন :