ডেস্ক রিপোর্ট: ধান, গম বা অন্য ফসলের চাষ করে লোকশান গুণলেও এবার স্থানীয় ও লাফা জাতের বেগুন চাষে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন মেহেরপুরের কৃষকরা।
জেলার গাংনী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গোল ও লম্বা বেগুন চাষ করে বদলে গেছে শতাধিক চাষির ভাগ্যের চাকা।
গাংনীর রামনগর গ্রামের মাঠে মাঠে এখন চাষ হচ্ছে লাফা জাতের গোল ও লম্বা বেগুন। এবার ফলনও হয়েছে বাম্পার। এ বেগুন জেলার চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হচ্ছে সারা দেশে।
কৃষকরা জানান, এবার বেগুনের বাম্পার ফলনের পাশাপাশি ভালো দামে অত্যন্ত খুশি চাষিরা। শুধুমাত্র ধান চাষের ওপর নির্ভরশীল কৃষি জমিতে বেগুন চাষ এনে দিয়েছে নতুন গতি। কৃষকদের জীবন-জীবিকার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে কৃষির এই সফল বিবর্তন। ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন এলকার বেগুন ব্যবসায়ীদের কাছেও পৌঁছে যাচ্ছে এ অঞ্চলের রবি শস্যের অন্যতম গোল ও লম্বা বেগুন। উর্বর দো-আঁশ মাটির প্রাচুর্যের কারণে জেলাটিতে ধানের চেয়ে রবি শস্য ও সবজি আবাদ বেশি হয়।
জেলা কৃষি অফিসার স্বপন কুমার খাঁ বলেন, এবার বেগুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে প্রায় ৯০ হেক্টর জমিতে বেগুন আবাদ করেছেন কৃষকরা।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কেএম শাহাবুদ্দিন বলেন, উপজেলার শতাধিক কৃষক বেগুন চাষ করে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা আয় করছেন।
গাংনী উপজেলার রামনগর গ্রামের নান্নু খাঁ ১০ কাঠা, জাকির হোসেন এক বিঘা, মান্নান খাঁ ১০ কাঠা, কুদ্দুস মণ্ডল এক বিঘা, হেলাল খান এক বিঘাসহ এলাকার শতাধিক কৃষক লাফা জাতের বেগুনের চাষ করেছেন।
রামনগরের কৃষক জাকির হোসেন বলেন, ফলন ভালো হওয়ায় একদিন পর পরই ১০ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করছি। ৫০ টাকা কেজি থেকে শুরু করে সব শেষে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বেগুন।
তিনি আরও বলেন, এক বিঘা বেগুন চাষে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হলেও আড়াই থেকে তিন লাখ টাকার বেগুন বিক্রি হয়ে থাকে।
আরেক কৃষক কুদ্দুস মণ্ডল বলেন, এখন কীটনাশক ভেজাল হয়ে গেছে। আগে বেগুনের পোকা দমনে সুরেট, ইভান মানিক বা তন্দ্রা বিষ এক পাতাতে কাজ হতো। এখন প্রতিদিন দেওয়ার পরেও কাজ হচ্ছে না।
বেগুন চাষি হেলাল বলেন, এবার ১০ কাঠা জমিতে বেগুন চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত বেগুন বিক্রি হয়েছে এক লাখ ২০ হাজার টাকা। এখনও ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি হবে বলে আশা করছি।
বেগুনের ফঁড়িয়া, রুহুল আমিন সিহাব হোসেন, বাবুল হোসেন কিতাব আলী, সুজন হোসন জানান, স্থানীয়ভাবে কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। তারা এ বছর ভালো লাভের মুখ দেখেছেন বলে জানান।বাংলানিউজ
আপনার মতামত লিখুন :