শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ৩০ নভেম্বর, ২০২০, ০৩:০৭ রাত
আপডেট : ৩০ নভেম্বর, ২০২০, ০৩:০৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিএনপির কাউন্সিল নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতা

ডেস্ক রিপোর্ট: বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও সপ্তম জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় দলটি। কারণ, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অসুস্থ, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে, সর্বোপরি করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব। সবকিছু মিলিয়ে কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে দলটির জন্য।

দলের কেউ কেউ মনে করছেন, এতে নতুন নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে না। বিগত দিনের ত্যাগী ও যোগ্যদেরও যথাযথ মূল্যায়ন হচ্ছে না। যদিও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান একক ক্ষমতাবলে কেন্দ্রীয় কমিটি সম্প্রসারণ করে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে শূন্য পদে পদায়ন করেছেন।

বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পরপর জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে ওই আয়োজনে তিন হাজারের বেশি কাউন্সিলর অংশ নেন। এর সাড়ে চার মাস পর দলের স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান আর নির্বাহী কর্মকর্তা ও সদস্য নিয়ে প্রায় ৫৯৪ সদস্যের বিশাল কমিটি করে বিএনপি। খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যাওয়ার আগে ৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাহী কমিটির বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এর আগে কিংবা পরে নির্বাহী কমিটির কোনো সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। এমনকি শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়া সাময়িক মুক্তি লাভের পরও নির্বাহী কমিটির সভা আয়োজনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কাউন্সিল নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তও হয়নি।

বিএনপি নেতারা জানান, দলকে পুনর্গঠিত করার অংশ হিসেবে কাউন্সিল করা হবে। এর আগে দলের ৮১টি সাংগঠনিক ইউনিট কমিটি ঢেলে সাজানো হবে। পাশাপাশি থানা ও পৌর কমিটি গঠন করেই কাউন্সিলের প্রস্তুতি নেওয়া হবে। পদাধিকারবলে তারা জাতীয় কাউন্সিলের সদস্য হন। ২০১৯ সালে বিএনপির সপ্তম কাউন্সিল আয়োজন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে নানা কারণে তা হয়ে ওঠেনি। দলে যোগ্যদের মূল্যায়নের জন্য জাতীয় কাউন্সিলের পক্ষে রয়েছেন একটি বড় অংশ। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ঢাউস আকৃতির কেন্দ্রীয় কমিটির বেশিরভাগ নেতা এখনও নিষ্ফ্ক্রিয়। বেশিরভাগ নেতাই পদপদবি বাগিয়ে চুপচাপ। এখন দল পরিচালনা হচ্ছে শুধুমাত্র কয়েকজন নেতার ওপর ভর করে। এভাবে বেশিদূর যাওয়া যায় না। তাই দলে দ্রুত শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করা উচিত। নিষ্ফ্ক্রিয়দের তালিকা করে বাদ দিয়ে দুঃসময়ের ত্যাগী ও যোগ্য নেতাদের নির্বাহী কমিটিতে জায়গা দেওয়া উচিত। কমিটির বাইরে বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট নেতা রয়েছেন। তাদের একটা পরিচয় থাকা দরকার, পদ থাকা দরকার। এর মধ্যে সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিতদের দলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু তাদের কোনো পদপদবি না থাকায় দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে সমস্যা হচ্ছে। এদিকে কেন্দ্রীয় কমিটির অনেক নেতা একাধিক পদ দখল করে আছেন। এসব অনিয়মকে দূর করতে না পারলে দল আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে তারা মনে করছেন।

তারা বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ক্ষমতাবলে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির শূন্য পদে সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে পদায়ন করা হয়েছে। রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে আব্দুল খালেক, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন, কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া এবং সহসাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে আবু সাইদকে পদায়ন করা হয়েছে। কিন্তু ২০১৬ সাল থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির প্রায় অর্ধশত নেতা মৃত্যুবরণ করায় শূন্য পদ সৃষ্টি হয়েছে। বয়সের কারণে নিষ্ফ্ক্রিয় রয়েছেন অনেক নেতা। এসব কারণে দলের মধ্যে কাউন্সিল করার জন্য একটা চাপ রয়েছে।

আবার খালেদা জিয়া অথবা তারেক রহমানের অনুপস্থিতিতে জাতীয় কাউন্সিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ কর্মযজ্ঞে তৃণমূলের রাগ, ক্ষোভ ও দুঃখের বিস্ম্ফোরণ ঘটতে পারে। নেতাকর্মীদের মনে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা হয়েছে। তৃণমূলের মতামত পাশ কাটিয়ে সংসদে শপথ গ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন উপনির্বাচনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা হচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে কাউন্সিলে বিস্ম্ফোরণ হতে পারে। তখন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে কিনা, তা নিয়ে সিনিয়র নেতারাও সংশয় বোধ করছেন। এ কারণে কোনো কোনো নেতা কাউন্সিল অনুষ্ঠানে তেমন আগ্রহী নন।

কাউন্সিলের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, দলের সপ্তম জাতীয় কাউন্সিলের প্রস্তুতি চলছে। এরই মধ্যে আমাদের জেলা ও অঙ্গ-সংগঠনগুলোর সাংগঠনিক কার্যক্রম, পুনর্গঠনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, কভিড-১৯-এর কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হচ্ছে সবার স্বার্থে। এখন দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরেশোরে করার সুযোগ কম। বিএনপি দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল। এর একটা কাউন্সিল ভার্চুয়াল বা অনলাইনে হয় না। কাউন্সিল মানে হলো ব্যাপক। প্রায় চার হাজারের মতো কাউন্সিলর আছে। তারপর ডেলিগেট। কাউন্সিলে লাখো লোক সমবেত হয়। সব কিছু বিবেচনা করে বিএনপির কাউন্সিলটা যে সময় হওয়ার কথা, সে সময়ে হয়নি। ভবিষ্যতে হবে।

সূত্র : সমকাল

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়