সুজন কৈরী: [২] গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে সাপের বিষ উদ্ধার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ সময় ক্রয়-বিক্রয় ও পাচারকারীর চক্রের মূল হোতা মো. মামুন তালুকদার (৫১) এবং তার সহযোগী মো. মামুনকে (৩৩) আটক করা হয়েছে। অভিযানকালে তাদের কাছ থেকে ২টি বড় লকার, ৬টি কাঁচের সদৃশ্য কৌটায় সংরক্ষিত সাপের বিষ ও একটি ক্যাটালগ বুক জব্দ করা হয়েছে। প্রতিটি বোতলের গায়ে ইংরেজিতে লেখা ছিল- কোবরা স্ন্যাক পয়োজন অব ফ্রান্স, রেড ড্রাগন কোম্পানী, কোবরা কোড নম্বর- ৮০৯৭৫ মেইড ইন ফ্রান্স।
[৩] সিআইডি জানায়, বৈশ্বিক মার্কেট, বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় সাপের বিষের চাহিদা রয়েছে। এ কারণে রুট হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যবহার করা হচ্ছিল।
[৪] বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার বলেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর সংস্থার ঢাকা মেট্রোর একটি টিম গাজীপুরের বাসন থানা এলাকা থেকে সাপের বিষ ক্রয়-বিক্রয় ও পাচারকারী একটি চক্রের কয়েকজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার তদন্তকালে জানা যায়, এরকম আরও কয়েকটি বড় ধরনের পাচারকারী চক্র সক্রিয় রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে সাপের বিষ পাচারকারী চক্রের মূলহোতাসহ দুজনকে আটক করা হয়।
[৫] রেজাউল হায়দার বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে সাপের বিষ পাচার হয়। এটার বৈশ্বিক মার্কেট রয়েছে, তবে বাংলাদেশে সাপের বিষ ক্রয়-বিক্রয়ের কোনো বৈধতা নেই।
[৬] তিনি বলেন, দেশের বাইরে থেকে এই সাপের বিষ কোনো না কোনোভাবে বাংলাদেশে এসেছে। দুই-তিন হাত ঘুরে হয়তো এই চক্রের মাধ্যমে দেশের বাইরে পাচার হতো। সাপের বিষ ওষুধ তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়। তবে বাংলাদেশে ফার্মাসিউটিক্যালে এটি ব্যবহারের বৈধতা নেই। যে কারণে এটি বাংলাদেশের ব্যবহারের সুযোগও নেই। আমরা এখনো নিশ্চিত না যে এটা ঠিক কোন দেশ থেকে বাংলাদেশে আনা হয়েছে। এটা এলসির মাধ্যমে আনা হয়নি। জব্দ করা কনটেইনারগুলোতে লেখা দেখা গেছে মেড ইন ফ্রান্স।
[৭] সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রেজাউল হায়দার বলেন, যথাসম্ভব এই অবৈধ সাপের বিষ পাচারের জন্য বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। পুরো তদন্ত শেষ হলে এটা স্পষ্ট হবে কে বা কারা কোন জায়গা থেকে আমদানির পর এটা পাচার করছিল। ইতোমধ্যে কয়েকটি চালান বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
[৮] এই চক্রের সঙ্গে আরও ৭-৮ জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে জানিয়েছে সিআইডি বলছে, যেহেতু সাপের বিষ লেনদেন ক্রয়-বিক্রয় এবং পাচার আইনত অপরাধ, তাই তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :