মাসুদ রানা : সম্প্রতি ভারতের মহারাষ্ট্রের জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস দলীয় কেবিনেট মন্ত্রী নওয়াব মালিক সেখানকার বিরোধী দলীয় বিজেপির নেতা দেবেন্দ্র ফাদনাবিসের প্রকাশিত ‘একদিন করাচী ভারতের অংশ হবে’ খায়েশের চেয়েও বড় খায়েশ প্রকাশ করে বলেছেন যে তিনি বা তাঁরা ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে এক রাষ্ট্রে পরিণত করার কথা বলে। মালিকের খায়েশ এমনই যে, ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ছাপিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও স্থান করে নিয়েছে। সংবাদটি গত রোববারের হলেও আমি আজ রুশ সংবাদমাধ্যমে পড়ে অবহিত হলাম। মারাঠী মন্ত্রী নওয়াব মালিকের কথাটি পত্রিকায় পড়ে আমার মনে পড়ে গেলো বাংলার নওয়াব আলিবর্দী ও তাঁর নাতি সিরাজউদৌলার মারাঠী দস্যুদের বাংলা থেকে তাড়ানোর ইতিহাস।
ইতিহাস বলে, মারাঠী জলদস্যুরা একসময় বাংলা আক্রমণ করে লুটতরাজ করে যা পেতো নিয়ে যেত এবং বাংলায় এই মারাঠী লুটেরা ডাকাতদের বলা হতো বর্গী। আর, এই বর্গীদেরকে তৎকালীন নওয়াব আলিবর্দী খান ও ভবিষ্যৎ নবাব সিরাজউদৌলা উচিত শিক্ষা দিয়েছিলেন। নওয়াব মালিক সম্ভবত নওয়াব আলিবর্দী খান ও নওয়াব সিরাজউদ্দৌলার হাতে মারাঠী দস্যুদের বিতাড়িত হওয়ার ইতিহাস জানা নেই। থাকলে, পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের একায়নের খায়েশ পোষণ করলেও বাংলাকে নিয় দুঃস্বপ্নের দুঃসাহস দেখাতেন না। যে বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করে পাকিস্তানকে তাড়িয়েছে, তারা প্রয়োজনে আরও একটি যুদ্ধ করে ভারতীয় যেকোনো প্রকারের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।
বাঙালি বেঁচে থাকতে বাংলাদেশকে ভারতের অংশ হতে দেবে না, বরং ভারতের দখলে থাকা বাংলার পশ্চিমখণ্ডকে হয়তো মুক্ত করবে একদিন। ভারত ও পাকিস্তানের মনে রাখা উচিত, তাদের ‘স্বাধীনতা’ ব্রিটিশ পার্লামেণ্টে গৃহীত আইনের ফল, যা ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ রাজকে সার্বভৌম মনে দু‘টি পৃথক ডোমিনিয়ন হিসেবে প্রাপ্ত। আর, বাংলাদেশের স্বাধীনতা হচ্ছে ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে লাখ লাখ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত সম্পদ। ফলে, বাঙালির বাংলাদেশের সাথে ভারত ও পাকিস্তানকে মিলিয়ে ভাবার দুঃস্বপ্ন যেনো কেউ ভুলেও না দেখেন। ২৪/১১/২০২০ লণ্ডন, ইংল্যাণ্ড , মাসুদ হাসান
আপনার মতামত লিখুন :