জোহরুল ইসলাম: [২] চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে কাকডাকা ভোর হতে রাত অবধি পর্যন্ত চলছে ধান কাটাই মাড়াই এর উৎসব। মাঠের মধ্যে বানানো খৈলান থেকে গেরস্থ বাড়ির আঙ্গিনা সর্বত্র এখন একই রকম দৃশ্য। নতুন ধানের সোঁদা গন্ধে ছাড়িয়ে আছে চারিদিক। মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাঠের প্রায় বেশির ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। ফলনও মন্দ নয়।
[৩] বিঘা প্রতি ফলন মিলছে সতের থেকে আঠারো মণ পর্যন্ত। দাম ও হাজার টাকার উপরে। মণ প্রতি ধান প্রকার ভেদে খৈলান থেকে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে হাজার হতে এগার’শ টাকা মণ দরে। এর আগে যেখানে আটশো টাকা মণ দরে ধান বিক্রি করতে কৃষককে হিমসিম খেতে হয়েছে। এবার শুরুতে এমন দাম পেয়ে খুশি কৃষক। এবার আবহাওয়া অুনুকুল থাকায় সেচ খরচ যেমন কম লেগেছে, তেমনি আবার রোদ্র থাকায় পোকা মাকড়ের উপদ্রব কম ছিল। সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ কম হয়েছে। আবার এখন ফলন আর দাম দুই বেশি হওয়ায় খুশি আবাদকারীরা।
[৪] নাচোল উপজেলার খেসবা গ্রামের আব্দুর রহিম জানান,এ বছর আমি ১০বিঘা রোপা আমন ধানের চাষ করেছিলাম। এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ধান উৎপাদনে তেমন একটা খরচ না হলেও ধানের মূল্য বেশি থাকায় আমরা খুব কৃষি। আমি তিন বিঘা জমির ধান মাড়াই করে বিঘা প্রতি ১৭/১৯মন ঘরে তুলেছি। এবার ধানের যেমন দাম রয়েছে তেমনি উৎপাদন ও ভালো রয়েছে। সব মিলিয়ে আমরা কৃষক খুব খুশি।
[৫] নেজামপুর গ্রামের কৃষক করিম জানান ৫ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করেছি বিঘা প্রতি উৎপাদন খরচ প্রায় ৭হাজার টাকা থেকে ৮হাজার টাকা হয়েছে। এ বছর ধানের দাম থাকায় খরচ বাদে ভালো লাভ থাকবে। তার প্রতি বিঘা জমিতে ধান উৎপাদন হয়েছে ১৮ থেকে ১৯ মণ।
[৬] সিংরোইল এলাকার মতি জানান,আমরা এবার ধানের নায্যমূল্যে ধান বিক্রি করতে পেরে খুব খুশি। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিকে ধন্যবাদ জানায়।ধান ব্যবসায়ী রবু জানান, এখনো আমরা পুরোদমে ধান কেনা বেচা শুরু করিনি। তবে প্রতিমণ ধান ১ (এক) থেকে ১১শ’ টাকায় বেচা কেনা চলছে।
[৭] নাচোল উপজেলা কৃষি অফিসার বুলবুল আহমেদ জানান, এ বছর রোপা আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ হাজার ৪শ’ ৬৫হেক্টর। কিন্তু আবাদ হয়েছে ২৩হাজার ১শ’ ৬০ হেক্টর জমিতে। উপজেলায় মোট আবাদি জমি প্রায় ২৫হাজার হেক্টর এর মধ্যে প্রায় ৩শ’হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফলের বাগানের চাষ হচ্ছে।
[৮] বিভিন্ন জাতের ধানের মধ্যে রয়েছে স্বর্ণা, ব্রিধান-৫১ ও ৫২, জিরাশাইল। এবছর বিঘাপ্রতি ধানের ফলন হচ্ছে ১৮থেকে ১৯মণ ফলে উপজেলায় মোট আবাদী জমিতে ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩৩লক্ষ ৩শ’ মণ ধরা হয়েছে। এতে উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায় রপ্তানি করা যাবে বলে আশা করছি। সম্পাদনা: সাদেক আলী
আপনার মতামত লিখুন :