শিরোনাম
◈ গাজীপুরে হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু  ◈ বিশৃঙ্খলার পথ এড়াতে শিশুদের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সেই সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও)

প্রকাশিত : ২৩ নভেম্বর, ২০২০, ০৮:৩৩ সকাল
আপডেট : ২৩ নভেম্বর, ২০২০, ০৮:৩৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দেশের টাকা বাইরে নিয়ে যাচ্ছে, এটা কি দেশ-জাতির সাথে বেঈমানি নয়?

নিউজ ডেস্ক : বিদেশে অর্থপাচারকারীদের নাম-ঠিকানাসহ যাবতীয় তথ্য চেয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি না, তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে স্বরাষ্ট্রসচিব, পররাষ্ট্রসচিব, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গতকাল বিচারপতি মো: নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ বিভিন্ন সংবাদপত্রে অর্থপাচার সংক্রান্ত প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন।

শুনানিতে অর্থপাচারকারীদের ‘দেশ ও জাতির শত্রু’ উল্লেখ করে আদালত বলেছেন, তারা দেশ ও জাতির সাথে বেঈমানি করছে। কারণ, দেশে লেখাপড়া করে দেশের মাটিতে থেকে দেশের বাইরে টাকা পাচার করবে, এটা কি বেঈমানি নয়? আদালত বলেন, অনেকে বিপুল পরিমাণ বাংলাদেশী টাকা কানাডা, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে পাঠাচ্ছেন। যাদের অধিকাংশই সরকারি কর্মকর্তা। যারা টাকাগুলো নিয়ে চলে যাচ্ছেন, তাদের নাম-ঠিকানা কী সেটাতো জানা দরকার। কত পরিমাণ টাকা গেল, তারা কিভাবে টাকাটা পাচার করলেন, কিভাবে বিদেশে বাড়ি তৈরি করলেন, জানা দরকার। না হলে তো অপরাধ কমবে না।

রুলে প্রচলিত আইন লঙ্ঘন করে অর্থপাচারকারী সরকারি কর্মচারী, ব্যবসায়ী, রাজনীতিক, ব্যাংক কর্মকর্তা ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

শুনানির শুরুতে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন তুলে ধরে আদালত বলেন, অবৈধভাবে টাকা পাচার করছে কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে, এই খবরগুলো আমাদের কাছে আসছে। বিপুল পরিমাণ অর্থ কানাডা, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে চলে যাচ্ছে। পাচারকারীদের অধিকাংশই সরকারি কর্মকর্তা। এই যে টাকাগুলো নিয়ে যাচ্ছে, এদের নামধাম কী, এগুলো আমাদের জানা দরকার। যারা অর্থ পাচার করছে তারা তো দেশ ও জাতির শত্রু। আমরা মনে করি তারা দেশ ও জাতির সাথে বেঈমানি করেছেন। কারণ দেশে পড়াশোনা করে, দেশের মাটিতে থেকে, দেশের টাকা দেশের বাইরে নিয়ে চলে যাচ্ছেন এটা কি দেশ ও জাতির সাথে বেঈমানি নয়?

দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এ সময় আদালতের কথায় একমত পোষণ করেন।

আদালত বলেন, একটা মানুষের যদি দেশপ্রেম থাকে কখনো সে এই কাজ করতে পারে? কাজেই এসব ব্যাপারে আমাদের একটু দেখা দরকার। নইলে তো এই অপরাধ কমবে না।

আইনজীবী খুরশীদ আলম খান তখন বলেন, এটা একটা কালচার হয়ে গেছে এখন।

এরপর আদালত বলেন, দেশের মাটিতে থাকছে, দেশের মাটিতে পড়াশোনা করছে, কিন্তু আলটিমেটলি দেশকে ঠকিয়ে দেশের টাকা দেশের বাইরে নিয়ে চলে যাচ্ছে। এটা তো হতে পারে না, এটা কিভাবে সম্ভব! একটা মানুষের মধ্যে যদি দেশপ্রেম থাকে, দেশের প্রতি ভালোবাসা থাকে সে এ কাজ কখনো করতে পারে না। এভাবে তো এসব দুর্বৃত্তকে আমরা অ্যালাও করতে পারি না। দেশের টাকা দেশের বাইরে নিয়ে চলে যাবে আনঅথরাইজডলি এবং বেআইনি পথে, আমাদের এতগুলো আইনগত সংস্থা, কোর্ট আছে। কাজেই আমরা মনে করি এর ওপর একটা রুল হওয়া দরকার। এরপরই আদালত রুলসহ আদেশ দেন।
গত ১৮ নভেম্বর বুধবার ডিআরইউয়ের মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বাংলাদেশ থেকে কানাডায় টাকা পাচারের সত্যতা পাওয়ার কথা জানান। প্রাথমিকভাবে অর্থপাচারে জড়িত যাদের তথ্য পাওয়া গেছে তার মধ্যে সরকারি কর্মচারীই বেশি বলে জানান তিনি। এ ছাড়া রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ীও রয়েছেন বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন। এরপর এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ১৯ এবং ২১ নভেম্বর বিদেশে অর্থপাচারকারীদের নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে হাইকোর্ট এ আদেশ দেন।

শুনানিতে আদালতে যুক্ত ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী মো: খুরশীদ আলম খান ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, গোপনে কানাডার টরন্টোতে অবস্থিত বাংলাদেশীদের বিষয়ে খোঁজ নেয়া হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমার ধারণা ছিল রাজনীতিবিদদের সংখ্যা বেশি হবে। কিন্তু আমার কাছে যে তথ্য এসেছে, যদিও এটি সামগ্রিক তথ্য নয়, সেটিতে আমি অবাক হয়েছি। সংখ্যার দিক থেকে আমাদের অনেক সরকারি কর্মচারীর বাড়িঘর সেখানে বেশি আছে এবং তাদের ছেলেমেয়েরা সেখানে থাকে। মন্ত্রী বলেন, আমার কাছে ২৮টি কেস এসেছে এবং এর মধ্যে রাজনীতিবিদ হলেন চারজন। এ ছাড়া কিছু আছেন আমাদের তৈরি পোশাকশিল্পের ব্যবসায়ী। আমরা আরো তথ্য সংগ্রহ করছি। পাচারে শুধু কানাডা নয়, মালয়েশিয়াতেও একই অবস্থা। তবে তথ্য পাওয়া খুব কঠিন। বিভিন্ন মিডিয়ায় যে তথ্য বের হয়, হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে, আসলে সংখ্যাটি তত নয়। পাচারের দায় বিদেশী সরকারও এড়াতে পারেন না উল্লেখ করে আব্দুল মোমেন বলেন, যেমন সুইজারল্যান্ডে কে ব্যাংকে টাকা রাখলেন, সেই তথ্য আমাদের দেয় না। তারা ট্রান্সপারেন্সির কথা বলে, কিন্তু যদি বলি কার কার টাকা আছে, সেই তথ্য দাও, তখন তারা দেয় না। এটি একটি ডাবল স্ট্যান্ডার্ড। নয়াদিগন্ত

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়