এএইচ রাফি: [২] ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল। জেলার এই সর্ববৃহৎ হাসপাতাল ২৫০ শয্যার হলেও ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন প্রায় দ্বিগুণ রোগী। কারণ নামে মাত্র মূল্যে এই হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা ও ঔষধ পেয়ে থাকেন রোগীরা। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সেবা। ভর্তি থাকা রোগীদের মধ্যে দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের বেশি। জেলার ৩০লক্ষ মানুষের অন্যতম এই হাসপাতালে চারতলা জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন বিভাগ।
[৩] যেমন-অর্থোপেডিক বিভাগ, শিশু বিভাগ, গাইনি বিভাগ, সার্জারি বিভাগ, পেয়িং বেড, ডায়রিয়া বিভাগ, কার্ডিওলজি বিভাগ ও মেডিসিন বিভাগ।
[৪] ২০১১ সালের ২৮ মে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রাথমিক অবস্থায় ২০টি বেড নিয়ে যাত্রা শুরু করে কার্ডিওলজি বিভাগ।
[৫] হাসপাতালের দেওয়া তথ্য মতে প্রতিদিন কার্ডিওলজি বিভাগে হৃদরোগের সমস্যা নিতে গড়ে ৫জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। কিন্তু চালু হওয়ার পর গত ৯ বছরে তেমন উন্নয়ন হয়নি কার্ডিওলজি বিভাগের।
[৬] হৃদরোগ চিকিৎসার প্রয়োজনীয় কোন যন্ত্রপাতি না থাকায় নামকাওয়াস্তে চলছে এই বিভাগ। কার্ডিওলজি বিভাগে কার্ডিয়াক বেড, কার্ডিয়াক মনিটর, ডিফেব্রিলেটর, ল্যারিংগোস্কপ, ইকোকার্ডিওগ্রাফি মেশিন, জরুরি মেডিসিন কিট বক্স, ইনফিউশন পাম্প এখনো স্থাপন করা হয়নি। একমাত্র ইসিজি মেশিনটিও নষ্ট হয়ে পড়েছে। তাছাড়া ঔষধ ও ইনজেকশনের মধ্যে দুই একটি এই হাসপাতাল থেকে হৃদরোগের রোগীদের সরবরাহ করা হয়। অধিকাংশ ঔষধ বাইরে থেকে এনে সেবন করতে হয় ভর্তি থাকা রোগীদের। আশার কথা হলো, সম্প্রতি এই ওয়ার্ডের রোগীদের জন্য সেন্ট্রাল অক্সিজেন চালু করা হয়েছে।
[৭] বর্তমানে এই হাসপাতালে কার্ডিওলজির দুইজন কনসালটেন্ট ও একজন মেডিকেল অফিসার সহ ৩জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে। এরমধ্য একজন চিকিৎসক দীর্ঘদিন যাবত দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বাইরে চিকিৎসাধীন আছেন। বাকী দুইজন চিকিৎসক রোস্টার করে ভর্তি থাকা রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে চলেছেন।
[৮] এছাড়াও ৯জন সিনিয়র স্টাফ নার্স, সরকারি ক্লিনার ২জন ও দৈনিক হাজিরার ২জন স্টাফ রোস্টার অনুযায়ী এই কার্ডিওলজি বিভাগে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
[৯] চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, হৃদরোগের চিকিৎসা বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতে অত্যন্ত ব্যয়বহুল। সরকারি হাসপাতালে সল্পমূল্যে তারা চিকিৎসা নিতে পারছেন। তবে প্রয়োজনী যন্ত্রপাতি ও ঔষধ না থাকলেও মন্দের ভাল এই সরকারি হাসপাতাল। যদি প্রয়োজন সংখ্যক যন্ত্রপাতি ও ঔষধ পাওয়া যেত, তাহলে বেসরকারি হাসপাতালে না গিয়ে স্বল্প খরচে এই হাসপাতালেই পরিপূর্ণ চিকিৎসা পেয়ে রোগীরা সুস্থ হতে পারতেন।
[১০]২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক শওকত হোসেন জানান, আমাদের সামর্থ্য যতটুকু আছে তা দিয়ে আমরা চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। কার্ডিয়াক বেড ও মনিটর সহ আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতির জন্য আমরা একাধিকবার মন্ত্রণালয়ের চাহিদা পাঠিয়েছি। আশা করছি চাহিদা অনুযায়ী সব কিছু পেলে হৃদরোগীদের পরিপূর্ণ চিকিৎসা দেওয়া যাবে।