মনিরুল ইসলাম : [২] সংসদনেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্কুল খুলে দিয়ে বাচ্চাদের মৃত্যু ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারি না । তিনি বলেন, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে দেশের স্কুল খুলে দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হবে।
[৩] তিনি বলেন, এখানে স্কুল খোলার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু আমেরিকাসহ বিভিন্ন স্থানে স্কুল খুলে তারা আবার বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। তাই আমরা এই মুহুর্তে ঝুঁকি নিতে চাই না। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সকল প্রকার প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি।
[৪] বৃহস্পতিবার রাতে একাদশ জাতীয় সংসদের দশম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে সংসদনেতা একথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর ১৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারী সংবিধান সংশোধনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ভাষণ বাজিয়ে শোনানো হয়। এরপর স্পিকার অধিবেশন সমাপ্তি সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির আদেশটি পাঠ করেন।
[৫] সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশেও স্কুল খোলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু করোনার সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হওয়ায় ঝুঁকি বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় স্কুল খোলা সমচীন হবে না।
[৬] তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বাচ্চাদের খুব কষ্ট হচ্ছে, এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু তারপরেও তাদের তো আমরা মৃত্যুর ঝুঁকিতে ঠেলে দিতে পারি না। করোনাভাইরাস একটা সংক্রামক ব্যাধি। এখনো এর চিকিৎসা বের হয়নি, তারপরেও আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি, মানুষ ভাল হচ্ছে।
[৭] বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের স্কুল খুলে দেওয়ার আহ্বনের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমেরিকায় কিন্তু স্কুল খুলে দিয়েছিলো। একটা পর্যায়ে তারা বন্ধ করতে বাধ্য হয়। সেখানে করোনা সংক্রমণ ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। আমরাও স্কুল খোলার একটা প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। যখনই করোনার প্রকোপটা কমে গেল আমি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছিলাম। কিন্তু তারপর দেখলাম আবার ইউরোপে করোনার প্রকোপ দেখা দিল। এখন কেন আমরা ঝুঁকি নিবো?
[৮] অটো প্রমশনের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের আগে তো এই সেমিস্টার ব্যবস্থা ছিল না। আমি প্রথমবার সরকারে এসে সেমিস্টার সিস্টেম চালু করি। কাজেই সেখানে সারাবছর তারা যে পরীক্ষা দিয়েছে, তারই ভিত্তিতে একটা রেজাল্ট দেওয়া হবে। এটা কিন্তু ইংল্যান্ডেও দিয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশেই দিয়েছে। এতে খুব বেশি ক্ষতি হয় না। এরপর তো শিক্ষার্থীরা স্কুল করবে, পড়বে, পরীক্ষা দেবে। আবার পরীক্ষা দেবে। সেই সুযোগটা তাদের আছে। কাজেই অটো প্রমশনে খুব ক্ষতি হয়ে গেল, এটা কিন্তু ঠিক না। ওই একদিন বসে লিখে পাস করলেই সেই পাস, আর সারাবছর পরীক্ষা দিয়ে যে রেজাল্ট, সেই রেজাল্ট, রেজাল্ট না এটা তো হতে পারে না। বরং সেইভাবে যদি সারাবছরের রেজাল্ট এক সাথে করে প্রমশন দিয়ে দেওয়া যায় তাহলে সেটা তো আরো তাদের মেধার পরিচয়টা পাওয়া যায়।
[৯] প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ইউরোপ-আমেরিকায় শুরু হয়েছে। সেই ধাক্কাটা আমাদের দেশেও আসতে শুরু করেছে। সেজন্য সবাইকে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
[১০] তিনি বলেন, এবার আমরা আরো বেশি প্রস্তুতি নিয়েছি। যে ভ্যাকসিন আবিষ্কার হচ্ছে বা যেখানে এখনো রিসার্চ চলছে। আমরা আগাম বুকিং দিচ্ছি, যাতে সেটা চালু হওয়ার সাথে সাথে বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমরা আনতে পারি। সে ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। তিনি আরো বলেন, গতবার হঠাৎ করে আসার জন্য অনেক কাজ আমরা করতে পরিনি। কিন্তু এবার আরো বেশি প্রস্তুতি নিয়েছি।
আপনার মতামত লিখুন :