শিরোনাম
◈ সন্ত্রাসী অপরাধে গ্রেপ্তারদেরও নিজেদের কর্মী দাবী করছে বিএনপি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ গাজীপুরে হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু  ◈ বিশৃঙ্খলার পথ এড়াতে শিশুদের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত : ১৮ নভেম্বর, ২০২০, ০১:১৭ রাত
আপডেট : ১৮ নভেম্বর, ২০২০, ০১:১৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কৌশলে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মেয়েদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতেন রাতুল !

সুজন কৈরী: অভিনব কৌশলে মোবাইল ফোনসেট চুরি করে ফেসবুক আইডি দখলে নিয়ে মেয়েদের ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগে মোহাম্মদ ইয়াসিন ওরফে রাতুল নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির সাইবার ক্রাইম ইউনিট। তার কাছে থাকা প্রতারণা এবং ব্ল্যাকমেইলের কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোনসেট, ১০টি সিমকার্ড উদ্ধার হয়। যার মধ্যে চারটি ভুয়া ফেসবুক আইডি এবং ৯টি জি-মেইল অ্যাকাউন্ট পেয়েছে সিআইডি।

সংস্থার সাইবার ইন্টেলিজেন্স শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ জানান, প্রথমে কৌশলে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মেয়েদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতেন রাতুল। এরপর সেই অন্তরঙ্গ দৃশ্য ভুক্তভোগীদের মোবাইলে ধারণ করে তা নিয়ে সটকে পড়তেন। মোবাইল বিক্রির আগে ভুক্তভোগীর ভিডিও কন্টেন্ট এবং ফেসবুক আইডি নিজের দখলে রাখতেন রাতুল। সেটা দেখিয়ে দিনের পর দিন ভুক্তরভাগীদের ব্লাকমেইল করতেন।

সিআইডির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, রাতুলকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানার হরিশপুরের আবু তাহেরের ছেলে রাতুল নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে ঢাকায় চলে আসেন। প্রথমে স্থানীয় এক নেতার বাসায় চা বয় হিসেবে কাজ নেন। এরপর মোহাম্মদপুর রিংরোডে একটি শো-রুমে সেলসম্যানের চাকরি নেন। হঠাৎ চাকরি ছেড়ে দিয়ে নানা ধরনের অপকর্ম শুরু করেন রাতুল

সিআইডির সাইবার ক্রাইম ইউনিট জানিয়েছে, রাতুলের প্রতারণার শিকার এমন একজন ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ৬ মাস ধরে রাতুলের সঙ্গে তার পরিচয়। ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় দুজন দেখা করেছেন। একদিন ওই ভুক্তভোগীকে চাঁদপুর যাওয়ার প্রস্তাব দেন রাতুল। ভুক্তভোগী তার দুই বন্ধুসহ রাতুলের সঙ্গে লঞ্চে চাঁদপুর যান। লঞ্চে চাঁদপুর যাওয়ার সময় বন্ধুদের অনুপস্থিতিতে কৌশলে নগ্ন ভিডিও ধারণ করেন। ঢাকায় পৌঁছে রাতুল তার মোবাইলে ব্যালেন্স নেই জানিয়ে ওই তরুণীর মোবাইল নিয়ে সদরঘাট থেকে সটকে পড়েন। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পরও ওই দিন রাতুল আর আসেননি। পরে তরুণীর ফেসবুক আইডি নিজের দখলে নেন এবং তার বিকাশ অ্যাকাউন্টে থাকা দশ হাজার ক্যাশ আউট করে নেন। এছাড়া মোবাইলে নগ্ন ভিডিওর কথা জানিয়ে, তা অনত্র ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে ভুক্তভোগীর বাবা-মাকে ফোন করেও টাকার জন্য চাপ দেন রাতুল।

এ অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডি সাইবার ক্রাইম রাতুলকে গ্রেপ্তার করে এবং ব্যবহৃত সকল মোবাইল উদ্ধার করে সেখানে অন্তত দশজন ভুক্তভোগীর তথ্য পায়। তাদের সবার নগ্ন ভিডিও রাতুলের মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়। এছাড়া ফেক কল এবং ভুয়া হিস্ট্রির অ্যাপসহ প্রতারণায় ব্যবহৃত নানা ধরনের টেকনোলজির বিষয়ে রাতুলের মোবাইলে প্রচুর তথ্য পেয়েছে সিআইডি।

এছাড়া আরও একজন ভিকটিমের তথ্য পায় সাইবার ক্রাইম ইউনিটি। ওই ভুক্তভোগী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালযের শিক্ষার্থী। ছয় মাস আগে ভুক্তভোগী তার ফেসবুক একাউন্টে একজন ইউটিউবার মেয়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে তানজুমা আফরোজ নামের একজন মিডিয়া ব্যক্তির সন্ধান পায়, যা রাতুলের তৈরি করা ফেক আইডি। ভুক্তভোগী সরল বিশ্বাসে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করেন। প্রথমে ফেসবুক চ্যাটিং এবং পরে ফোনালাপ হয়। ফোনালাপগুলোতে রাতুল বিশেষ সফটওয়ারের মাধ্যমে ভিকটিমের সাথে মেয়ে কন্ঠে কথা বলেন। এরপর তানজুমা আফরোজ নামক ফেইক আইডিটি রাতুলকে ভিকটিমের সাথে হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে পরিচয় করিয়ে দেয়। এভাবে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে ওই আইডিধারী রাতুলের সুসম্পর্ক তৈরি হয়। পরে সম্পর্ক প্রেমের রূপ নেয়। রাতুল এমন বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে সকল ভিকটিমদের বিশ্বাস আস্থা অর্জন করেন। রাতুল ভিকটিমদের ভিডিও কলে আসার প্ররোচনা দেন। পরে ভিডিও কলে কথা বলার সময় স্ক্রিন রেকর্ড করে রাখেন। এরপর তিনি ভুক্তভোগীদের দেখা করার জন্য ডেকে আনেন। প্রথম দেখাতেই ভুক্তভোগীর মোবাইল ফোন নিয়ে কৌশলে পালিয়ে যেতেন।

সিআইডি জানায়, চুরি করা মোবাইল ফোনসেট থেকে তথ্য সংগ্রহের পর রিসেট দিয়ে মোবাইল বিক্রি করে দিতেন রাতুল। বিক্রির আগে ভুক্তভোগীর মোবাইল থেকে ফেসবুক ও জি-মেইল অ্যাকাউন্ট নিজ দখলে নিতেন রাতুল। সেই ফেসবুক আইডির সহায়তায় পরে অন্য এক ভুক্তভোগীকে টার্গেট করতেন।

রাতুলের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহজাহানপুর মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়