শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ১৮ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০৩ দুপুর
আপডেট : ১৮ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কাকন রেজা: ধর্ম আর শিল্প, মূর্তি আর ভাস্কর্য

কাকন রেজা: মূর্তি আর ভাস্কর্যের পার্থক্য যদি খুব সহজভাবে বলা যায়, তাহলে একটা ধর্ম আরেকটা শিল্প। ধর্ম হলো যে মূর্তিকে ঈশ্বর জ্ঞান করা হয় সাথে তাকে পূজার নামে নৈবদ্য দেওয়া হয়। আর ভাস্কর্য হলো যাকে সৌন্দর্য আর নান্দনিকতার চিন্তায় নির্মাণ করা হয়। যাকে কোনো ফুল-পাতা বা অন্য কিছু দিয়ে নৈবদ্য দিতে হয় না। নৈবদ্য দেওয়া হলে ভাস্কর্য আর ভাস্কর্য থাকে না দেবতায় পরিণত হয়। পূজারীদের ধারণায় প্রাণ প্রতিষ্ঠা পায়। যারা নাস্তিকতার চর্চা করেন, তারা আবার মূর্তি অন্তপ্রাণ। অথচ এই যে নৈবদ্য প্রদান এটা কিন্তু তাদের চর্চার সাথে যায় না। যেহেতু তারা নিরীশ্বরবাদে বিশ্বাসী। এক্ষেত্রে তাদের পূজিত হয় এমন মূর্তির বিরোধীতাই করা উচিত। বাস্তবে ঘটে উল্টোটা। তারা অদৃশ্য ঈশ্বরের বিরোধীতা করেন বিপরীতে সদৃশ্য ঈশ্বরকে শিল্পের খোলসে প্রশ্রয় দেন।

এই যে তাদের বৈপরীত্য এটা ভয়াবহ। এই বৈপরীত্য সমাজে বিভাজনের সৃষ্টি করে। পরস্পরকে পরস্পরের বিরোধী করে দেয়। আর এই বিরোধের নামে যে ঘৃণা ছড়ানো হয় তা মৌলবাদেরই আরেকটা রূপ। সে অর্থে এমন নাস্তিকতাও মৌলবাদ। এটা কোনো কঠিন বিষয় নয়। এটা বুঝতে বিশাল তাত্ত্বিকও হতে হয় না। সাধারণ জ্ঞান থেকেই এটা বোঝা সম্ভব। বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশে ভাস্কর্যতে ফুল-পাতার নৈবদ্য দেওয়ার ধারণা এসেছে মূর্তি পূজা থেকেই। ঈশ্বরের রূপক হিসেবে মূর্তি পূজিত হয়। ঈশ্বর হলেন মহান। মহানের সেই ধারণা থেকে মানুষকে সম্মান করতেই মানুষের মূর্তি গড়ে তাতে ফুল-পাতা দেওয়ার প্রচলন শুরু। অবশ্য শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, মিথভিত্তিক ধর্মাচরণে যারা অভ্যস্ত তাদের সবার মধ্যেই এই রীতি প্রচলিত।
ইউরোপের রেনেসাঁস নিয়ে যারা মাতামাতি করেন তাদের গ্রিক-রোমান মিথোলজি সেই রেনেসাঁসকে কতোটা প্রভাবিত করেছে তা জেনে নেওয়া দরকার। বিশেষ করে যারা নিরীশ্বরবাদের চর্চা করেন তাদের। তারা যাকে আধুনিকতা ভাবেন, সভ্যতা জ্ঞান করেন তার ব্যাকস্টেজটাও দেখে নেওয়া প্রয়োজন। জিউস দেবতা। তাকে গড়তে হলে তার নাম ভাস্কর্য নয়, মূর্তিই। যিশুরটাও তাই। রেনেসাঁস বুঝতে হলে মূর্তি আর ভাস্কর্যের পার্থক্য বুঝতে হবে। বুঝতে হবে ধর্ম আর শিল্পের প্রকৃত রূপ। সব নির্মাণকেই যদি ভাস্কর্য বলতে হয় তবে ধর্মকে শিল্প থেকে পুরোপুরি আলাদা করতে হবে। আর মূর্তি বলতে গেলে করতে হবে তার উল্টোটা। এর বাইরে আর কোনো হিসেব নেই বিশেষ করে নিরীশ্বরবাদীদের জন্য। সদৃশ্য ঈশ্বরকে শিল্প জ্ঞানে গ্রহণ আর অদৃশ্য ঈশ্বরকে বর্জন একধরনের প্রবঞ্চনা, ভাওতাবাজী। সুতরাং এমন বলার আগে ভালো করে ভেবে দেখতে হবে।

লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়