ফিরোজ আহমেদ: দিন কয়েক আগে আল জাজিরাতে ‘বাংলাদেশ কেন ফ্রান্সের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে’ এই শিরোনামে একটা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ফ্রান্স রাষ্ট্র হিসেবে বর্ণবাদী নিপীড়নের জন্য কুখ্যাত, রাষ্ট্র হিসেবে নবীর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের লক্ষ্যও ছিল সেখানকার অভ্যন্তরীণ রাজনীতির হিসাব নিকাশ। এ নিয়ে পৃথিবীর বহু দেশেই নানান মাত্রায় প্রতিবাদ হয়েছে। কিন্তু কেন বাংলাদেশে এই মাত্রায় তা চলেছে? প্রশ্নটা আসলেই কৌতুহলোদ্দীপক। আল জাজিরার ওই প্রতিবেদনটিেেত অধ্যাপক আলী রীয়াজ একটা গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন।
আলী রীয়াজ দুটো কারণ দেখেছেন ফ্রান্সবিরোধী দিনের পর দিন বিশাল সব শোভাযাত্রার। নিজের মতো করেই সারসংক্ষেপ করছি, একদিকে বাংলাদেশে ধর্মীয় অনুভূতির তীব্রতা বৃদ্ধি, রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণে এই ধর্মীয় দল ও সংগঠনগুলোর নিরাপদ প্রসঙ্গকে নিয়ে মাঠ গরম রাখা এবং একই সাথে সরকারকে না চেতিয়ে বিষয় নির্বাচন করা। অন্য কারণটা খুব তাৎপর্যপূর্ণ : এটা সরকারের জন্যও সুবিধাজনক। কারণ একদিকে সরকার দেখাতে পারছে যে বাংলাদেশে সভাসমাবেশের অধিকার সীমিত করা হয়নি, এখানে একটা কার্যকর গণতন্ত্র আছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এটা বাংলাদেশি রাজনীতিকে উপস্থাপন করে ‘ইসলামী জঙ্গিবাদ ও অসাম্প্রদায়িকতার মাঝে কোন একটাকে বেছে নেয়ার বিষয় হিসেবে, আর [আওয়ামী লীগ] নিজেকে উপস্থাপন করে একটা শ্রেয়তর বিকল্প হিসেবে।’
বিষয়টা যদিও শুধু আন্তর্জাতিক রাজনীতির না, দেশীয় রাজনীতিরও। শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নিয়ে রাজনীতির মধ্য দিয়ে সেই বিষয়টাই আমরা আবার দেখি। কেমন বাংলাদেশ চান, দেশে বঙ্গবন্ধুর (এই অর্থে যেকোনো ) ভাস্কর্য থাকবে, নাকি মৌলবাদী ইসলাম থাকবে? রাজনীতিকে এইভাবে সুবিধামতো ঘুরিয়ে রাখতে পারলে আওয়ামী লীগ যা চায়, ঠিক তাই সে পাবে। গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, সীমান্তে ন্যায্য সম্পর্ক, স্বাধীন পরাষ্ট্রনীতির দাবিতে লড়াই, দুর্নীতি ও গুন্ডাতন্ত্রের বিরুদ্ধে সংগ্রাম সেকুভার্সেসফান্ডি মজমায় দিশা হারাবে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :