শিরোনাম
◈ ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহতদের ৬ জন একই পরিবারের ◈ গাজীপুরের টঙ্গি বাজারে আলুর গুদামে আগুন ◈ রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনোয়ারুল হক মারা গেছেন ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শনিবার ঢাকা আসছেন ◈ দুই এক পশলা বৃষ্টি হলেও তাপদাহ আরো তীব্র হতে পারে  ◈ এথেন্স সম্মেলন: দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ◈ কেএনএফ চাইলে আবারও আলোচনায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে: র‌্যাবের ডিজি ◈ ওবায়দুল কাদেরের হৃদয় দুর্বল, তাই বেশি অবান্তর কথা বলেন: রিজভী ◈ মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী ◈ বাংলাদেশ সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ১০:১৭ দুপুর
আপডেট : ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ১০:১৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আরিফ জেবতিক: ডাইরেক্ট বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের সঙ্গে নাড়ানাড়ি বেশ ঝুঁকির কাজ হয়ে গেছে

আরিফ জেবতিক: ধর্মীয় রাজনীতির মাঝে জামায়াতের পরে সবচাইতে বিস্তৃত পলিটিক্যাল নেটওয়ার্ক সম্ভবত চরমোনাইপন্থীদের (এটা আমার পর্যবেক্ষণ, হয়তো ভুল হতে পারে, কিন্তু আমার পর্যবেক্ষণে তাই মনে হয়)। চরমোনাইদের শক্তির তুলনায় রাজনৈতিক খাতির উনারা কম পান। ধর্মীয় রাজনীতিতে এখন একতরফা শক্তি কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক হেফাজত নেটওয়ার্কের। হেফাজত একক শক্তি নয়, এটি একটি জোট। বিভিন্ন সংগঠনের একটা প্লাটফরম। কিন্তু হেফাজতের টপ নেতা পলিটিক্যাল গুরুত্ব পান। বাবু নগরী এই মুহূর্তে শফীর চাইতেও বেশি পাওয়ারফুল। কারণ শফীকে আপোসকামী মনে করা হতো, বাবু নগরীর আপোসহীন ইমেজ আছে। ‘ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ কামীদের কাছে বাবু নগরী বিপ্লবের নয়া নিশান।
চরমোনাইর মতো একই অবস্থা শায়খুল হাদীস আজিজুল হকের ছেলে মামুনুল হকেরও। শায়খুল হাদীসের যে রাজনৈতিক প্রভাব ছিল, সে তুলনায় তাঁর ছেলের পর্যাপ্ত গুরুত্ব মাদ্রাসা নেটওয়ার্কের বাইরে নেই। অথচ ইনি হুংকার দিতে পারেন ভালো, বাবার অনুসারীদের কারণে তাঁর ভক্ত আশেকানদের সংখ্যাও কম নয়। সুতরাং চরমোনাই আর মামুনুল হকরা হেফাজতের প্রভাবের পাশাপাশি নিজেদের ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠিগত গুরুত্ব বাড়ানোতে মনোযোগ দেবেন এটাই স্বাভাবিক। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয়ার হুমকির মূল কারণ এটাই। নইলে ঢাকা শহরে ভাস্কর্য যে নতুন নির্মাণ করা হচ্ছে তা নয়। সাদেক হোসেন খোকার সময় ঢাকায় অনেকগুলো সুন্দর সুন্দর ভাস্কর্য সংযোজিত হয়েছিল। একাধিক ঘোড়া, এক্কাগাড়ি, ময়ূর থেকে শুরু করে কোলবালিশ সদৃশ বাঘ, হাঙর- অনেক কিছুই নির্মিত হয়েছে রাস্তায় রাস্তায়। কখনো কেউ হুংকার দিতে আসেননি (লালনের বিষয়টি আলাদা ছিলো, সেটা আলাদা লিখবো নে)। এখানে খেলাটা একটু রিস্কি হয়ে গেছে।

প্রথম কথা হলো, অন্ধের ষষ্টির মতো আওয়ামী লীগের এখন আছেই মাত্র দুটো সম্বল। বঙ্গবন্ধু আর শেখ হাসিনা। এই দুই জিনিসের বাইরে এদের নীতি, আদর্শ , রাজনীতি -এরকম কিছু বর্তমানে অবশিষ্ট আছে বলে কেউ বিশ্বাস করে থাকলে সে বড়ই ঈমানদার লোক বটে। সুতরাং এই দুজনকে আওয়ামী লীগ জানপ্রাণ দিয়ে রক্ষা করবে। দুইটা গ্রুপই করবে। একটা গ্রুপ হচ্ছে পাগলা গ্রুপ, ‘এমনি এমনি আওয়ামী লীগ’ করে। রুটি কম্বল বিতরণ প্রক্রিয়ায় তাদের কেউ পুঁছেও না! কিন্তু এরা সাধারণত আওয়ামী লীগের ক্রাইসিসে একদম জঙ্গে জালালি হয়ে রাস্তায় নামে। লগি বৈঠা, লাঠি সোটা নিয়ে পুলিশ-আর্মি-বিরোধীপক্ষ সবার সাথে জান লড়িয়ে মারামারি করে।

এই গ্রুপ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয়ার বিরুদ্ধে রক্তের বুড়িগঙ্গা বানিয়ে ফেলবে। হাজারে হাজারে ঢাকা আসবে, অকাতরে মরবে ও মারবে। আরেক গ্রুপ হচ্ছে ব্যবসাদার আওয়ামী লীগ। মানে ওই যারা ব্যাংক-বীমা-শেয়ারবাজার-ক্যাসিনো-বালিশ-বটির আওয়ামী লীগ। এদের হাজার হাজার কোটি টাকা স্টকে। এরা নিজেদের পেট ও পিঠের দায়ে এই লড়াইতে সম্পঋক্ত হবে। এরা নীতি আদর্শ নিয়ে ভাবে না, কিন্তু এটা জানে যে, ক্ষমতার ভিত নড়বড়ে হয়ে গেলে এদের পিঠের চামড়া তো চামড়া, চামড়ার নিজের মাংসও না থাকতে পারে। এরা বিভিন্ন পথে আপোষের চেষ্টা করবে, ফেইল করলে শক্তি প্রয়োগ করবে। এদের হাতে সরকারি লাঠি আছে, টাকা পয়সা আছে-এরা চাইলে ড্রোন হামলা চালানোর পথঘাট বের করে ফেলবে।

তাই ডাইরেক্ট বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের সাথে নাড়ানাড়ি বেশ ঝুঁকির কাজ হয়ে গেছে চরমোনাই আর মামুনুল হকের জন্য। তবে আমার মনে হয় শেষ পর্যন্ত একটা উইন উইন সিচুয়েশন হবে। আওয়ামী লীগের বালিশ বটির ব্যবসা অনেক বড় ব্যবসা। এরা কোনো না কোনো একটা পথ বের করে ফেলবে। মাঝখান থেকে চরমোনাই আর মামুনুল হকের হয়তো প্রভাব বেড়ে যাবে। আওয়ামী লীগ এদের বাবু নগরীর প্যারালাল হিসেবে দাঁড় করিয়ে দেবে। দেশে অনেক অনেক ‘ইসলামি শক্তি’ থাকবে। এদের সবগুলোর সুতা থাকবে লীগের হাতে। এরা প্রতি শুক্কুরবারে হুংকার দেবে। আমরা মিডলক্লাস সেই হুংকারে কুকড়ে যাবো। তারপর ইলেকশনের ১ বছর আগে আওয়ামী লীগ এদের কোনো একটা গ্রুপকে রামধোলাই দেবে। আমরা তখন মাথা নেড়ে বলবো, ‘জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে দরকার, আওয়ামী লীগের সরকার।’ ভোট দিয়া কী ... হবে! ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়