সোহেল রানা: [২] মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের ধলাই নদীকে কেন্দ্র করে শত বছরেরও বেশি সময় ধরে পালিত হয়ে আসছে গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরা উৎসব ‘পলো বাওয়া’। রোববার বেলা ১টায় কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদীতে ঐতিহ্যবাহী পলো দিয়ে মাছ ধরার উৎসব উদযাপিত হয়।
[৩] পুরোদমে শুষ্ক মৌসুম শুরু না হলেও কমলগঞ্জ উপজেলার বুক দিয়ে প্রবাহিত ধলাই নদীসহ বিভিন্ন এলাকার প্রবহমান ছোট ছোট ছড়া বিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে শুরু হয়েছে পলো বাওয়া উৎসব। প্রতি বছর এই সময়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সৌখিন মৎস্য শিকারিরা দল বেঁধে উৎসবমুখর পরিবেশে পলো বাওয়ায় অংগ্রহণ করে। পলো বাওয়া উৎসব হলো দল বেঁধে মাছ ধরা।
[৪] কমলগঞ্জ পৌর এলাকার দক্ষিণ কুমড়াকাপন, আলেপুর, চন্ডিপুর, কুমড়াকাপন গ্রামসহ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রায় দুই শতাধিক মানুষ অংশ নিয়ে অল্প পানিতে মাছ শিকারের উৎসবে সবাই মেতে উঠেন।নদীতে বড়দের পাশাপাশি ছোট ছেলেমেয়েরাও যে যার মতো করে মাছ ধরতে সহযোগিতা করে।
[৫] মাথা ও কোমরে আটসাঁট করে গামছা বেঁধে অনেকটা আনন্দ নিয়েই মাছ ধরতে দেখা যায় মৎস্য শিকারিদের। সকাল থেকে শুরু হওয়া মাছ ধরার এ উৎসব চলবে বিকাল পর্যন্ত। নদীতে ৩০-৪০ জনের একটি দল একদিকে জাল নিয়ে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন।
[৬] আর অপরপ্রান্ত থেকে ৪০-৫০ জনের সারিবদ্ধ দল পলো চাপিয়ে মাছ ধরতে সামনের দিকে এগিয়ে আসেন।মাছ শিকারি স্বপন মিয়া বলেন,বছরের এই দিনটার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি। সবাই মিলে একসঙ্গে মাছ ধরার আনন্দটাই আলাদা। দিন দিন পরিবেশ ও আবহাওয়ার প্রতিকূলতার কারণে নদী-নালা, খাল-বিল, হাওরের তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ার কারনে পানি হ্রাস এবং অধিকাংশ জলাশয় ইজারা দেওয়ায় পলো বাওয়া উৎসব এখন অনেকটাই ভাটা পড়েছে। প্রাচীন এই উৎসবকে টিকিয়ে রাখতে সর্বমহলের উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানাই।’ সম্পাদনা: জেরিন
আপনার মতামত লিখুন :