শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ জনগণকে সংগঠিত করে চূড়ান্তভাবে বিজয় অর্জন করতে হবে: মির্জা ফখরুল ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ জিয়াউর রহমানের সময়ই দেশে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়: ওবায়দুল কাদের  ◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

প্রকাশিত : ১৫ নভেম্বর, ২০২০, ১০:৪০ দুপুর
আপডেট : ১৫ নভেম্বর, ২০২০, ১০:৪০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি কমছে

ইত্তেফাক: দেশে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ বাড়লেও নতুন জনশক্তি পাঠানো ধারাবাহিকভাবে কমছে। দুই বছরের ব্যবধানে প্রবাসে জনশক্তি রপ্তানি ৩০ শতাংশের মতো কমেছে। সেই সঙ্গে কমছে পেশাজীবী এবং দক্ষ ও স্বল্প দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির পরিমাণও। ২০১৮ সালে প্রবাসে ৩ লাখ ১৭ হাজার দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি হলেও ২০১৯ সালের শেষে এসে এই সংখ্যা ৩ লাখ ৪ হাজারে নেমে এসেছে। সেই সঙ্গে স্বল্প দক্ষ জনশক্তি প্রেরণের পরিমাণ ২ লাখ ৮৩ হাজার থেকে কমে ১ লাখ ৯৭ হাজারে নেমে এসেছে। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্যে এমন চিত্র উঠে এসেছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৬০ হাজার কর্মী বিদেশে যেত। কিন্তু করোনার কারণে তারা যেতে পারছে না। করোনার প্রকোপ শুরুর পর গত ১ এপ্রিল থেকে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে উলটো ১ লাখ ৯৫ হাজার প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফিরে এসেছে। জনশক্তি রপ্তানিতে এমন পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিদ্যমান শ্রমবাজার ধরে রাখার জন্য সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। সেই সঙ্গে রেমিট্যান্সের প্রবাহ ঠিক রাখতে নতুন বাজারে জনশক্তি পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

এ প্রসঙ্গে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, অদক্ষ শ্রমিকরা যত সহজেই বিদেশের বাজারে প্রবেশ করতে পারছে দক্ষরা তত সহজে পারছে না। কারণ দক্ষ জনশক্তি পাঠানোর বিষয়টি অনেকটাই ‘কমপ্ল্যায়েন্স’ নির্ভর। তাছাড়া প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেই তাদের শ্রমবাজারে যেতে হচ্ছে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি তাদের আরো প্রতিযোগিতায় ফেলবে বলে তিনি মনে করেন। এমন পরিস্থিতিতে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার এবং বিদ্যমান শ্রম বাজারগুলোতে দক্ষ শ্রমিক পাঠাতে আরো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

২০১৭ সালে ৪ লাখ ৩৪ হাজার দক্ষ শ্রমিক বিদেশে গেলেও ২০১৮ সালে এই সংখ্যা কমে ৩ লাখ ১৮ হাজারে নেমে আসে। সর্বশেষ ২০১৯ এ ৩ লাখ ৪ হাজারে নেমে আসে। পেশাজীবীদের মধ্যে ২০১৭ সালে সাড়ে ৪ হাজার প্রবাসে গেলেও পরের বছরগুলোতে ২ হাজার ৬০০ এবং ১ হাজার ৯০০ নেমে আসে। ২০১৭ সালে ৪ লাখ স্বল্প দক্ষ শ্রমিক প্রবাসে গেলেও পরের বছরগুলোতে এই সংখ্যা ২ লাখ ৮৩ হাজারে এবং ১ লাখ ৯৭ হাজারে নেমে আসে। তবে আধা-দক্ষ শ্রমিক গমন এক বছরের ব্যবধানে তুলনামূলক বেড়েছে। ২০১৭ সালে আধা-দক্ষ শ্রমিক প্রেরণ ১ লাখ ৫৫ হাজার থেকে ২০১৮ সালে কমে ১ লাখ ১৭ হাজার হয় এবং ২০১৯ সালে কিছুটা বেড়ে ১ লাখ ৪২ হাজার হয়।

সবমিলিয়ে প্রবাসে ২০১৭ সালে রেকর্ড ১০ লাখ জনশক্তি রপ্তানি হলেও পরের বছরগুলোতে এই সংখ্যা ৭ লাখে নেমে আসে।

সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় প্রকাশিত অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০২০ প্রতিবেদনে এর একটি বিশ্লেষণও দেওয়া হয়েছে। এতে দেখা যায়, গত এক দশকে দেশভিত্তিক জনশক্তি রপ্তানি পরিস্থিতির ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। ২০০৯ সালে মোট জনশক্তি রপ্তানির সিংহভাগ (৫৪ শতাংশ) হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরতে অথচ ২০১৯ সালে এ হার হ্রাস পেয়ে দাঁড়ায় শূন্য দশমিক ৪৭ শতাংশে। অন্যদিকে সৌদি আরবে ২০০৯ সালে জনশক্তি রপ্তানি মোট জনশক্তির মাত্র ৩ শতাংশ হলেও ২০১৭ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৫৫ শতাংশে দাঁড়ায়। তবে ২০১৮ সালে তা হ্রাস পেয়ে ৩৫ শতাংশ হলেও ২০১৯ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৫৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বাহরাইনে ২০০৯ সালে ৬ শতাংশ জনশক্তি রপ্তানি হলেও ২০১৯ সালে তা হ্রাস পেয়ে প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। সিঙ্গাপুরে জনশক্তি রপ্তানি ২০০৯ সালের তুনলায় ২০১৯ সালে হ্রাস পেয়ে ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

২০০৯ সালে বিদেশগামী নারী কর্মীর সংখ্যা ছিল ২২ হাজার ২২৪ জন। ২০১৭ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ১ লাখ ২১ হাজার ৯২৫ জনে দাঁড়ায়, যা আগের বছরগুলোর মধ্যে সর্বাধিক। অন্যদিকে ২০১৯ সালে নারী কর্মী গমনের সংখ্যা ১ লাখ ৪ হাজার ৭৮৬ জনে নেমে আসে। যা মোট কর্মী গমনের প্রায় ১৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ।

প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থের সিংহভাগই আসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ থেকে। এক্ষেত্রে শীর্ষে অবস্থান করছে সৌদি আরব। এরপর সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং যুক্তরাষ্ট্র। বিদায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরে মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহের মধ্যে সৌদি আরব থেকে সর্বোচ্চ (২২ শতাংশ) রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। এর পরের অবস্থানে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (১৩.৫৮ শতাংশ), কুয়েত (৭.৫৪ শতাংশ) এবং ওমান (৬.৭৬ শতাংশ)। পশ্চিমা ও ইউরোপিয়ান দেশসমূহের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র (১৩.২০ শতাংশ)। এরপর যুক্তরাজ্যের অবস্থান (৭.৫০ শতাংশ)। সাম্প্রতিক সময়ে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও অন্যান্য কয়েকটি দেশ থেকে রেমিট্যান্স আয় বেড়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়