শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৩ নভেম্বর, ২০২০, ০৯:১৭ সকাল
আপডেট : ১৩ নভেম্বর, ২০২০, ০৯:১৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

তসলিমা নাসরিন: জিন্নাহর ভুল থেকে উপমহাদেশ শিক্ষা নেয়নি

তসলিমা নাসরিন: আসাদউদ্দিন ওয়েইসির গুণ্ডারা আমাকে দু’বার আক্রমণ করেছে ভারতবর্ষে। একবার হায়দ্রাবাদে, আরেকবার আওরঙ্গবাদে ।

হায়দারাবাদে ছিল শারীরিক আক্রমণ। যা কিছু হাতের কাছে পাচ্ছে, ছুঁড়ছে, এমনকি লোহার চেয়ার ছুঁড়ে মারছে আমাকে লক্ষ করে। দরজা জানালা ভেঙে ফেলেছিল, ঘেরাও করে ফেলেছিল প্রেসক্লাব,যেখানে আমার তেলুগু ভাষার বইয়ের উদবোধন হচ্ছিল। পুলিশ এসে না বাঁচালে সে যাত্রা রক্ষে
ছিল না।
দ্বিতীয়বার আওরঙ্গবাদে। বিমানবন্দরে নেমে দেখি বিমানবন্দর ঘেরাও করে ফেলেছে ওয়েইসির শত শত গুণ্ডা। যে হোটেলে থাকার কথা ছিল, সে হোটেলও ঘেরাও। পুলিশ আমাকে জানিয়ে দিল বিমান বন্দরের বাইরে এক পা' বেরোবো তো আমাকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলবে ওরা, অথবা ধড় থেকে মুণ্ড কেটে ফেলে রাখবে রাস্তায়। ইলোরা অজন্তা দেখার স্বপ্ন পূরণ হলো না আমার।
ওয়েইসির গুণ্ডারা আমাকে দু'দুবার আক্রমণ করার পর বিজয় উৎসব করেছে। কোনও সেক্যুলার দল কি প্রতিবাদ করেছিল? করেনি। মৃদু প্রতিবাদ হাতে গোণা কয়েকজন হিন্দুত্ববাদীর কাছ থেকে এসেছিল। কিন্তু এঁরাও আবার হিন্দুত্ববাদ নিয়ে দু'কথা বললে আমাকে ভারতবর্ষের মাটি থেকে উৎখাত করার পণ করে ফেলেন।
কোথায় তবে সেক্যুলার রাজনৈতিক দলের নেতারা, যাঁদের মুক্তচিন্তায় এবং মত প্রকাশের অধিকারে বিশ্বাস করার কথা? তাঁরা ওয়েইসির কীর্তিকলাপের সমালোচনা করেন না, সে কীর্তিকলাপ যতই মানবতাবিরোধী হোক। নানা ছুতোনাতায় ধর্মনিরপেক্ষ দল গিয়ে সাঁতার কাটে ধর্মীয় দলের সঙ্গে।
উদারপন্থী হিন্দুরা তো ধরেই নিয়েছেন উদারপন্থী হতে গেলে সংখ্যালঘুদের মাদ্রাসা মসজিদ এবং কট্টরপন্থার প্রতিও তাঁদের নিঃশর্ত সমর্থন থাকতে হবে। সেই সমর্থন এবং সহানুভূতি ব্যক্ত করাকে তাঁরা হিন্দুত্ববাদের বিরোধিতা করার প্রধান পথ বলে ভেবে নিয়েছেন। এক কট্টরপন্থাকে দাবিয়ে রাখার জন্য আরেক কট্টরপন্থাকে দুধ কলা খাইয়ে পোষা নিশ্চয়ই বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
এতকাল যে ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোর নেতারা মুসলিমদের ভোট ব্যাংক বানিয়ে মসজিদ মাদ্রাসা আর একগাদা অন্ধকার দিয়েছেন উপহার, যেন ধর্মের অতলে ওদের মুখ মাথা ডুবে থাকে --- সেই দলগুলোর এখন টনক নড়ছে, কারণ অন্ধকারের লোকেরা ভোট দিচ্ছে অন্ধকারের নেতাকে, ওয়েইসিকে। ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলো যত অন্ধকার উপহার দিয়েছে মুসলিমদের, ওয়েইসি তার চেয়ে শতগুণ অন্ধকার উপহার দেবে।
পাকিস্তান আর বাংলাদেশ উপচে পড়ছে মূঢ় , মূর্খ, মৌলবাদিতে। জিন্নাহর ভুল থেকে উপমহাদেশ শিক্ষা নেয়নি।
শুধু উদারপন্থী হিন্দু নন, সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের যে গুটিকয় মানুষ ধর্মান্ধতা থেকে নিজেদের মুক্ত করে আধুনিক জীবন যাপন করেন, তাঁরাও কিন্তু মুসলিমদের ধর্মান্ধতা থেকে মুক্ত হওয়ার পরামর্শ দেন না। তাঁরাও মুসলিমদের জন্য মসজিদ মাদ্রাসা আর নারীবিরোধী আইনের দাবি করেন। তিন তালাক বাতিল করাকে তাঁরা মুসলিমবিরোধী কাজ বলে আখ্যা দেন। তাঁরাও বোরখাকে মেয়েদের স্বাধীনতা এবং চয়েজ বলেন । কে করবে তাহলে ইসলামের সংস্কার? অগত্যা দায়িত্ব নিতে হয় হিন্দুত্ববাদিদের। এটিই কি ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোর চরম ব্যর্থতা নয়? ফেসবুক থেকে

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়