শিরোনাম
◈ সাতক্ষীরায় এমপি দোলনের গাড়িতে হামলা ◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ১২ নভেম্বর, ২০২০, ০৯:৫০ সকাল
আপডেট : ১২ নভেম্বর, ২০২০, ০৯:৫০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] শোনা যাচ্ছিলো হাজারো মানুষের বাঁচাও বাঁচাও শব্দের আর্তনাদ

এএইচ রাফি: [২] আজ ১২নভেম্বর। ঢাকা-চট্রগ্রাম ও চট্রগ্রাম-সিলেট রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার মন্দভাগে ভয়াবহ ট্রেন দূর্ঘটনার এক বছর। এই দূর্ঘটনায় প্রাণ হারায় ১৬জন মানুষ। ওই রাতের ভয়াল সেই চিত্র এখনো সেই এলাকার মানুষকে তাড়িয়ে বেড়ায়।

[৩] ২০১৯ সালের এই দিনে মুহুর্তের মধ্যে ঘটে যাওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার মন্দভাগ রেলষ্টেশনে সেই ভয়ানক ট্রেন দুর্ঘটনার কথা বলতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠছিলেন স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী মামুন মিয়া।

[৪] তিনি বলেন, আজও সেই ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার দৃশ্য চোখে ভাসে, দুর্ঘটনার শিকার অসহায় মানুষের চিৎকার, আর্তনাদ মনের মাঝে ভেসে বেড়ায়। মানুষের লাশের সারি। ছোট শিশুদের কান্না। তিনি বলছিলেন, হঠাৎ বিকট শব্দে ঘুম ভাঙ্গে। দিনটি ছিলো ২০১৯ সনের ১২ নভেম্বর ভোররাত। বাইরে শোনা যাচ্ছিল হাজারো মানুষের বাঁচাও বাঁচাও শব্দের আর্তনাদ। এ শব্দে প্রকম্পিত পুরো এলাকা। লাফ দিয়ে উঠে গিয়ে দেখি আমার আগেই আমার পাশের বাড়ির দুজন হাতুরিপেটা করে দুর্ঘটনার শিকার ট্রেনের বগির জানালার কাঁচ ভাংছে। দেরী না করে ঢুকে গেলাম বগির ভেতর । বগির ভেতরের দৃশ্য দেখে আমি কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। হঠাৎ একটি আহত মহিলা আমার পায়ে ধরে বলছে বাবা আমাকে বাঁচাও । সম্বিত ফিরে পেলাম। চেয়ে দেখি ওই মহিলার একটি পা কেটে আলাদা হয়ে অঝোরে রক্ত ঝরছে। দেরী না করে তাকে পাঁজা কোলে করে জানালা দিয়ে বের করে দিলাম। এরই মধ্যে আমার মহল্লার অন্যান্য লোকজনও লেগে গেছে উদ্ধার কাজে। আমার সাথে আরো এক যুবক ভেতরে প্রবেশ করে নিহত ও আহতদের বাহির করতে লাগলাম।

[৫] এরই মধ্যে খবর পেয়ে ছুটে এসেছে উপজেলা প্রশাসনের লোকজন, পুলিশ, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও সংবাদকর্মীরা। ততক্ষনে স্থানীয়রা উদ্ধার কাজ প্রায় শেষই করে ফেলেছিলো। উপজেলা শহর থেকে উদ্ধারকর্মীরা আসার আগেই ষ্টেশনের পাশে রাখা স্থানীয়দের দুটি ট্রাকে করে আহতের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানোর কাজ চলছিলো। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ট্রেনের চাকার চিপায় আটকে থাকা মরদেহ উদ্ধারের কাজে অংশগ্রহন করেন। খবর পেয়ে ছুটে আসেন রেল মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ও জেলা প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তাগন।

[৬] নিহতদের লাশ নিয়ে রাখা হয় পার্শ্ববর্তী বায়েক শিক্ষা সদন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। ওই দিন সকাল ৯ টার পর থেকে নিহতদের স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে বিদ্যালয় সহ আশ-পাশের পরিবেশ। সনাক্ত করে স্বজনরা একে একে নিয়ে যায় উদ্ধার হওয়া ১৬টি মৃতদেহ। ঘটনার অনেকদিন পর পর্যন্ত অনেক স্বজনকে ঘটনাস্থলে এসে নিরবে কাঁদতে দেখা গেছে। সেদিনের সেই ঘটনার আজও ভুলতে পারিনি।

[৭] উল্লেখ্য, গত বছরের ১২ নভেম্বর ভোররাতে কসবার মন্দাভাগ রেল ষ্টেশনে চট্রগ্রাম গামী উদয়ন এক্সপ্রেস ও ঢাকাগামী তূর্ণা নিশিথার মধ্যে সংর্ঘষে ১৬ জন প্রাণ হারায়। সেই ক্ষত আজও ভুলতে পারেনি এলাকার মানুষ। স্বজন হারানো মানুষদের পাশে দাড়িয়েছিলেন এলাকার হাজার হাজার নারী-পুরুষ। রাত গভীর পর্যন্ত দেশের প্রিণ্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মীরা দেশবাসীর কাছে তুলে ধরেন ওই রাতের সচিত্র প্রতিবেদন। তুলে ধরেন মানুষের আহাজারি। মানবিক মানুষগুলো স্বতপ্রণোদিত হয়ে কিভাবে মানবতার কাজে সাড়া দিয়েছিলেন প্রত্যক্ষ করেছেন দেশবাসী। এ উপলক্ষে কসবা সচেতন নাগরিক সমাজ নিহতদের স্মরণে সন্ধ্যায় কসবা রেলষ্টেশনে আলোচনা সভা ও মোমবাতি প্রজ্জলন করে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করবেন। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়