শিরোনাম
◈ তীব্র গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী  ◈ সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম নালিশের রাজনীতি করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের ◈ বুশরা বিবিকে ‘টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো খাবার খাওয়ানোর অভিযোগ ইমরানের ◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি 

প্রকাশিত : ১২ নভেম্বর, ২০২০, ০৩:০৮ রাত
আপডেট : ১২ নভেম্বর, ২০২০, ০৩:০৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দীপক চৌধুরী: বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ফিরে না এলে এদেশে রাজনীতিতে নিষ্ঠুর-নৈরাজ্য বিরাজ করতো

দীপক চৌধুরী: বিএনপি প্রায়-প্রতিদিনই খেদোক্তি করে থাকে- দেশে গণতন্ত্র নেই। নানানরকম আফসোসের সঙ্গে বলে দলটির কোনো কোনো নেতা বলে থাকেন, গণতন্ত্র নির্বাসিত। মানুষ শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় রয়েছে। গণমাধ্যম সরকার নিয়ন্ত্রণ করছে। কিন্তু এসব কথা কী এখন মানুষ বিশ্বাসকরে? কওে না। বিষয়টি হয়তো আপেক্ষিক বলবে বিএনপি। কিন্তু এই সত্য তো স্বীকার করতেই হয়, বিএনপির সমর্থক বা কর্মীর সংখ্যা যথেষ্ট থাকলেও নেতৃত্বের প্রচণ্ড অভাবে রয়েছে দলটি। কারণ, এই দলটি অতীতে যত অন্যায়-অনাচার করেছে তা কিন্তু বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ধোঁকাবাজি এ প্রজন্মের তরুণ-তরুণিরা অপছন্দ করে। সহজভাবে বলতে গেলে হঠকারী সিদ্ধান্তগুলো তারা ঘৃণা করে থাকে। কেউ নয়, সবাই রাজনীতি নিয়ে ভাবে আর দরিদ্র শ্রেণির মানুষের জন্য কেবল শেখ হাসিনাই ভাবেন। এটা প্রমাণিত যে- দিন-মজুর, ক্ষুদে ব্যবসায়ী, কৃষকের জন্য কেবল বঙ্গবন্ধুকন্যই ভাবেন। প্রণোদনা প্যাকেজ তৈরি করা হয়েছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের কথা ভেবে।

অতীতে বহুবার ইতিহাস থেকে জাতির পিতার নাম মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র হলেও তা মোছা যায়নি, আর কোনদিনও মোছা যাবে না। তরুণ প্রজন্ম এটা বুঝতে পারে। মুজিববর্ষে তরুণ প্রজন্ম জানতে পেরেছে, ইতিহাস আসলে মুছে ফেলা যায় না। ইতিহাসও প্রতিশোধ নেয়। আজকের ইতিহাস এবং সেই নাম আর কেউ মুছতে পারবেনা, এটা হচ্ছে বাস্তবতা।

’৭৫ এর ১৫ আগষ্টের সেই বিয়োগান্তক অধ্যায় ভুলে যাবার নয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে তা নয়, ১০ বছর বয়সী রাসেল খুনীদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। শেখ হাসিনা ও রেহানা বিদেশে থাকায় বেঁচে যান। তাওতো দেশে ফেরায় তাঁদের অনেক বাঁধা ছিল। শেখ হাসিনার ওপর বার বার হত্যা প্রচেষ্টার কথা কী ভুলে যাবার?
১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও স্থপতি, বাঙ্গালির অবিসংবাদিত মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি জাতির অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। জেল-জুলুম অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছেন। কিন্তু অন্যায়ের সাথে কখনো আপস করেননি।

যেখানে ফিদেল ক্যাষ্ট্রো তাঁকে সাবধান করেছিলেন। ইন্দিরা গান্ধীও বলেছিলেন- একটা ষড়যন্ত্র হচ্ছে সাবধান। অথচ, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন এরা আমার দেশের ছেলে, এরা আমার সন্তানের মত, কাজেই এরা আমাকে মারবে না, মারতে পারেনা। আমি তাদের জন্য কাজ করি। তারা আমাকে কেন মারবে। তৎকালিন বিখ্যাত সাংবাদিক ডেভিড ফ্রষ্টকে দেওয়া জাতির পিতার ঐতিহাসিক স্বাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আই লাভ মাই পিপল।’ আর ডিসকোয়ালিফিকেশন-‘আই লাভ দেম টু মাচ।’ স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যারা মানতে পারেনি, স্বাধীন বাংলাদেশকেই যারা স্বীকার করেনি তাদের দোসররাই ছিল এর মাঝে এবং তারাই ছিল এই হত্যাকান্ডের মূল হোতা। কেবল হত্যাকান্ড সংগঠন নয় পুরো আদর্শকেই পরিবর্তন করা হয়েছিল।

১৯৮১-তে শেখ হাসিনা দেশে না ফিরলে ইতিহাসের নির্মমতা দেখা যেতো। রাজনীতির নিষ্ঠুরতা দেখা যেতো। এদেশ নিয়ে আজ হা-হুতাশ করতে হতো। আর এখন, কেউ চাইলেই শেখ হাসিনাকে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে পারবে না। এর পর থেকে সরকারে আসার সময় অনেকভাবে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের চেষ্টা করা হয়েছে। ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট তদানীন্তন বিএনপি-জামায়াত জোটের সরকারি মদদে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে পরিকল্পিত চালানো হয় নারকীয় গ্রেনেড হামলা; যার প্রধান লক্ষ্য ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যা করা। গুরুতরভাবে আহত হলেও সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। তবে এই হামলায় আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতা-কর্মী নিহত হন। চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করেন অসংখ্য নেতা-কর্মী। বাংলাদেশ পরিণত হয় এক মৃত্যু উপত্যকায়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মদদে সারাদেশে ধর্মীয় জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের ব্যাপক উত্থান ঘটে। আর তাদের এই দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান অকুতোভয় শেখ হাসিনা। ১/১১-এর পর শুরু হয় নতুন ষড়যন্ত্র। আসে জরুরি আইন। শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য হাজির করা হয় ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’। শেখ হাসিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে দেশে ফিরে আসার সময় বেআইনীভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সরকারি নিষেধাজ্ঞা, ষড়যন্ত্র ও মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে ২০০৭ সালের ৭ মে ফিরে আসেন প্রিয় স্বদেশে। কিন্তু এর মাত্র দু’মাস পর ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই নিজ বাসভবন সূধাসদন থেকে শেখ হাসিনাকে দানবীয় কায়দায় গ্রেফতার করা হয়। জাতীয় সংসদ এলাকায় একটি অস্থায়ী কারাগারে তাঁকে বন্দি করে রাখা হয়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অর্জিত হয় ঐতিহাসিক বিজয়। এককভাবে আওয়ামী লীগই লাভ করে তিন চতুর্থাংশের বেশি আসন। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। গঠিত হয় মহাজোট সরকার। দেশরত্ন শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও শক্তিশালী ভীত রচিত হওয়ায় জনপ্রিয়তার অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যান শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। এরপর ২০১৮-এর ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হলো একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অবিশ্বাস্য বিজয়লাভ করে সরকার গঠন করেন শেখ হাসিনা। মানবতার নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার আজ সফলতার সাথে টানা তৃতীয় মেয়াদে চতুর্থবারের মতো দেশ পরিচালনা করছেন। তিনি পরিশ্রমী প্রধানমন্ত্রী। বিশ্বসেরা সৎ প্রধানমন্ত্রী। বিডিআরের ঘটনা ঘটানো হলো, হেফাজতের ঘটনা ঘটানো, নানা ধরনের ঘটনা, বহু রকমের কারসাজির চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বের যে আন্দোলন তা রোধ করে দেওয়া সম্ভব হয়নি।

লেখক : উপ-সম্পাদক, আমাদের অর্থনীতি, সিনিয়র সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়