শিরোনাম
◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১২ নভেম্বর, ২০২০, ০৯:২৬ সকাল
আপডেট : ১২ নভেম্বর, ২০২০, ০৯:২৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কাদের আশ্রয়ে ছিলেন এসআই আকবর ?

ডেস্ক রিপোর্ট : প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবরের নেপথ্যের শেল্টারদাতা কারা? মামলার স্বার্থে এসআই আকবরের শেল্টারদাতাদের জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জোরালো হচ্ছে। ধরা পড়ার পর ছাড়া পাওয়ার জন্য আকবর ২০ লাখ টাকার অফার দিয়ে তাকে ছেড়ে দিতে কাকুতি মিনতি করেছিলে সেই সকল লোকের কাছে।

এসআই আকবরকে সহায়তাকারী এসআই হাসান উদ্দিনকে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে যুবক রায়হানকে নির্যাতন ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্ত নিয়ে রায়হানের পরিবার ও সচেতন মহলের হতাশা ছিল শুরু থেকেই। ধীরগতিতে চলছিল মামলার তদন্ত কাজ। ঘটনার পর বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি উঠে সকল মহল থেকে। নির্যাতনে রায়হান নিহত হওয়ার পর আকবরের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসে।

আকবরকে পালিয়ে যেতে কে বা কারা সহযোগিতা করেছেন, সেই বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচিত হলেও মামলার তদন্তকারীদের কাছ থেকে এই বিষয়ে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ আকবর ধরা পড়ার পর সে নিজেও শেল্টারদাতার কথা উল্লেখ করার এই বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে। এই নিয়ে ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়েছে। তবুও প্রকাশ্যে আসছেনা সহযোগিতাকারীদের নাম। রায়হান নির্যাতনের পর কে বা কারা নির্যাতনকারী আকবরকে সহযোগিতা করেছেন, নেপথ্যে কারা রয়েছেন, তাদের বের করে নিয়ে আসার দাবি এখন জোরালো হচ্ছে।

আলোচিত রায়হান হত্যাকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত সিলেট বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়ার আটকের ছয়টি ভিডিও ক্লিপ বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সীমান্তের ওপারে কুলিয়ান খাসিয়াপুঞ্জিতে আব্দুর রহিম ও তার সহযোগীদের নিকট হস্তান্তরের সময় ২০ লাখ টাকার অফার দেন সাময়িক বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া। আকবর বার বার বলছিলেন, ২০ লাখ টাকা দেব। আমাকে ছেড়ে দেন ভাই। কিন্তু আকবরের এই অফারে রাজি হননি আব্দুর রহিম ও তার সহযোগীরা। তারা আকবরকে বেঁধে নিয়ে আসেন। আকবরের এই অফারের বিষয়টি জানিয়ে আব্দুর রহিম বলেন, আমরা বলেছি তুমি তো দেশের শত্রু। তোমারে বাঁচাইয়া রাখা যাবে না। আকবর হোসেন ভূঁইয়া গ্রেপ্তারের ঘটনা নিয়ে সর্বত্র চলছে নানা আলোচনা।

সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হান আহমদ হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত পুলিশের বহিষ্কৃত উপ পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে ধরে আনায় ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার পাচ্ছেন সিলেটের কানাইঘাটের আবদুর রহিম। রহিমকে এ পুরস্কার প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন গোলাপগঞ্জের শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের কানাডা প্রবাসী মো. জয়নাল আবেদীন জামিল। সোমবার মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেজে লাইভে এসে এ ঘোষণা দেন মো. জয়নাল আবেদীন। মোঃ জয়নাল আবেদীন বিশ্ব প্রবাসী শরীফগঞ্জ উন্নয়ন পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক।

আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে আটক করা হয়েছে সোমবার। তবে তাকে কারা কোথা থেকে আটক করেছে তা নিয়ে চলছে বিতর্ক। যদিও সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলছেন, সোমবার সকালে ভারতে পালানোর সময় কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে আকবরকে আটকের পর ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে ভিন্ন দৃশ্য।

এসব ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, আকবর আটক হন ভারতীয় সীমান্তে। সেখানকার খাসিয়া আধিবাসীরা তাকে আটক করে। এরপর বাংলাদেশি এক ব্যক্তি তাকে দেশে এনে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এই ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে পড়ার পর আকবরকে গ্রেপ্তার বিষয়ে পুলিশের দাবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। আকবরকে সাধারণ জনতা আটক করেছে, পুলিশ জনতার ক্রেডিট ছিনতাই করছে- এমন অভিযোগও করছেন কেউ কেউ।

তবে সিলেটের পুলিশ সুপার বলছেন, জেলা পুলিশ কারো ক্রেডিট ছিনতাই করেনি। বরং যারা এমন সমালোচনা করছেন তারা পুলিশের অর্জন ও পরিশ্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। মঙ্গলবার নিজের ফেসবুকে এমনটি লেখেন সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন। ফেসবুকে একটি নিউজ লিংক শেয়ার করে এমনটি দাবি করেন পুলিশ সুপার।

এদিকে রায়হান আহমদ হত্যার একমাস পূর্তিতে সিলেট নগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে আলোক প্রজ্বলন করেছে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ‘দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’। বুধবার সন্ধ্যায় এই কর্মসূচী পালন করা হয়। গত ১১ অক্টোবর এই ফাঁড়িতেই নির্যাতনে নিহত হন যুবক রায়হান আহমদ। আলোক প্রজ্বলনের আগে সংক্ষিপ্ত সভায় বক্তারা বলেন, ঠিক এক মাস আগে এই ফাঁড়িতে রায়হান আহমেদকে ধরে এনে নির্যাতন চালিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত বহিষ্কৃত এসআই আকবর হোসেনকে গ্রেপ্তার করায় আমরা পুলিশকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

তবে আটকের পর আকবরই জানিয়েছেন, তাকে ‘সিনিয়র অফিসাররা’ পালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আমরা এই সিনিয়র অফিসারদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। বক্তারা বলেন, কেবল একজন এসআই আকবর বা বন্দরবাজার ফাঁড়ির কয়েকজন পুলিশ সদস্যই নয়, রায়হান হত্যাসহ নগরের পুলিশ ফাঁড়িগুলোতে চলা বিভিন্ন অনিয়ম, অত্যাচার ও চাঁদাবাজির সঙ্গে পুলিশের অনেক উর্ধতন কর্মকর্তারাও জড়িত। পুলিশকে কলঙ্কমুক্ত ও জনবান্ধব করতে হলে এই চক্রের মূল উৎপাটন করা আবশ্যক। এজন্য সবার আগে রায়হানকে পালানোর পরামর্শ দেয়া ‘সিনিয়র অফিসারদের’ খুঁজে বের করতে হবে। নেতৃবৃন্দ এই ‘সিনিয়র অফিসারদের’ অবিলম্বে চিহ্নিত করে রায়হান হত্যা মামলায় আসামি করার দাবি জানান।
সূত্র- পূর্বপশ্চিম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়