মোস্তফা কামাল: শেখ মুজিব পুলিশের আইজি এবং গোয়েন্দা প্রধানকে একসঙ্গে দেখে বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন, কী ব্যাপার। দুজন একসঙ্গে? আবদুর রহিম বললেন, স্যার খুব জরুরি কথা আছে। তাই আপনার বাসায় চলে এসেছি। আচ্ছা! কী জরুরি কথা বলো তো। আবদুর রহিম মেসবাহউদ্দিনের দিকে তাকিয়ে বললেন, স্যার ওনার কাছে শুনুন। শেখ মুজিব মেসবাহউদ্দিনের দিকে তাকালেন। তিনি নিচু গলায় বললেন, স্যার খুবই ভয়ঙ্কর কথা স্যার।
শেখ মুজিব অপলক দৃষ্টিতে মেসবাহউদ্দিনের দিকে তাকিয়ে আছেন। তিনি আবার বলতে শুরু করলেন। স্যার, বাণিজ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমেদ তো ইরান ও আফগানিস্তান সফরে গেছেন। হুম। ইরানে তিনি গণচীনের নেতা ও ঊধর্তন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই সফর শেষ করে তিনি জেদ্দায় যান। সেখানে তিনি পাকিস্তানি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে তিনি বাগদাদে চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। বলো কী। জি স্যার। একেবারে নিশ্চিত তথ্য। কোনো ভুল নেই। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানোর নামে সে এই কাÐ করেছে। জি স্যার। এটা কী করে সম্ভব? সে কি কোনো ষড়যন্ত্র করছে নাকি?
স্যার, ব্যাপারটা খুবই সন্দেহজনক। গোপনে কেন তিনি মধ্যপ্রাচ্য সফরে গেলেন? স্যার, তিনি তো সরকারের একজন মন্ত্রী। তিনি গোপনে একটি দেশে সফর করেন কী করে? তাছাড়া এটা তো কোনো নিয়মের মধ্যেও পড়ে না। নীতি-নৈতিকতার কথা না হয় বাদই দিলাম। কী নিয়ে আলোচনা করেছে তা কি জানা গেছে? না স্যার। সেখানে তিনি তাঁর বৈঠকের তথ্যাদিও প্রকাশ করতে চাননি। তারপরও আমরা অন্যভাবে তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছি। আমি সত্যিই অবাক হচ্ছি। তার এতো সাহস হলো কী করে? সে ভাবছে কী? কেউ তার সফর সম্পর্কে জানতে পারবে না? হয়তো তাই। ঠিক আছে। তোমরা যাও। দেখা যাক। (উপন্যাস ১৯৭৫, মোস্তফা কামাল), অন্যপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত হবে ১৬ ডিসেম্বর।
আপনার মতামত লিখুন :